বুধবার, ২২ মে ২০২৪, ০৪:৫০ পূর্বাহ্ন

প্রচণ্ড গরমে বিপাকে শ্রীমঙ্গলের চা শ্রমিকরা

অলি আহমদ মাহিন, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: চলমান তাপপ্রবাহের কারণে দেশের অন্য অঞ্চলের মতো শ্রীমঙ্গলেও সাধারণ জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। প্রচণ্ড গরমে বিপাকে পড়েছেন শ্রীমঙ্গলের চা শ্রমিকরা। বিশেষ করে উপজেলার চা শ্রমিকদের অবস্থা খুবই শোচনীয়।

বৈশাখের তীব্র খরতাপে শ্রীমঙ্গল উপজেলায় কয়েকটি চা বাগানে কর্মরত শ্রমিকদের অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। প্রচণ্ড গরমে বাগানে খোলা আকাশের নিচে কাজ করতে গিয়ে শ্রমিকদের কেউ কেউ হিটস্ট্রোকেও আক্রান্ত হচ্ছেন। এ ছাড়া জ্বর, সর্দি-কাশি ও পেটের পীড়ায়ও ভুগছেন অনেক শ্রমিক।

উপজেলার শ্রীমঙ্গল জেরিন চা বাগান ও দেওছড়া চা বাগানসহ বিভিন্ন চা বাগানে গিয়ে দেখা যায়, ৩৭ ডিগ্রি তাপমাত্রার মধ্যেও উঁচু টিলার ওপর পাতা তুলছেন বাগানের চা শ্রমিকরা। প্রচণ্ড রোদ উপেক্ষা করে পালাক্রমে দিনভর কাজ করতে হচ্ছে চা শ্রমিকদের।

কয়েকজন চা শ্রমিক জানান, তীব্র গরমের মধ্যে কাজ করে তাদের অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা, দুপুর ১২টা থেকে ২টা ও দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত তিন শিফটে বাগানে কাজ চলে। রোদ ও গরমের কারণে ঠিকমতো কাজ করতে না পারায় তাদের প্রতিদিনকার মজুরি কমে যাচ্ছে।

চা শ্রমিক বাসন্তী বাউরী জানান, সারাদিনে যেখানে ৩০ থেকে ৪০ কেজি পাতা তোলার কথা, সেখানে মাত্র ৮ থেকে ১০ কেজি পাতা তুলতে পারছেন তিনি। ফলে দৈনিক বাধ্যতামূলকভাবে যে পরিমাণ পাতা তুলতে হয়, সেই লক্ষ্যমাত্রাও পূরণ হচ্ছে না।

শ্রীমঙ্গল জেরিন চা বাগানের চা শ্রমিক অলকা বালা বলেন, গত কয়েক দিন ধরে ৩৬ থেকে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করে তাপমাত্রা। তীব্র গরমে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়লেও বাগানের হাসপাতালে ওষুধ নেই। এ অবস্থায় চা শ্রমিকদের বাগানের ভেতরে কাজ করা কষ্টকর হয়ে পড়েছে।

শ্রীমঙ্গল কয়েকটি চা বাগানের ম্যানেজার আলাপকালে জানিয়েছেন, তাদের বাগানে শ্রমিকদের জন্য শতভাগ ওষুধ ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। এ ছাড়া গরমে নিরাপদ খাবার পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনিছুর রহমান বলেন, ৩০ এপ্রিল মৌলভীবাজারের শ্রীঙ্গমলে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং গত এক সপ্তাহের গড় তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। আরও কয়েকদিন তাপমাত্রা বৃদ্ধি অথবা অপরিবর্তিত থাকতে পারে। মে মাসের প্রথম থেকে তাপমাত্রা কিছুটা হ্রাস পাবে বলে আবহাওয়া অফিস জানায়।

মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়ক (উপপরিচালক) প্রণয় কান্তি দাস জানান, তাপমাত্রা বৃদ্ধিজনিত কারণে এবার কিছু ডায়রিয়া, জ্বর ও সর্দি-কাশির রোগী পাওয়া যাচ্ছে এবং তারা উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে হাসপাতালে ভর্তি না হয়ে বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় মানুষকে সচেতন করতে উপজেলার সর্বত্র লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে।

এই নিউজটি আপনার ফেসবুকে শেয়ার করুন

© shaistaganjerbani.com | All rights reserved.