বাহুবল মডেল মসজিদের নির্মাণকাজ দুই বছর ধরে বন্ধ
হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলা মডেল মসজিদের নির্মাণকাজ দুই বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। গত ২০১৯ সালের জুন মাসে ১৩ কোটি টাকা বরাদ্দে কার্যাদেশ দেওয়া মসজিদগুলোর ১৮ মাসের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ করার কথা। তবে পাঁচ বছরেও মাটি ভেদ করতে পারেনি বাহুবল মডেল মসজিদের নির্মাণকাজ। ফলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় মুসল্লিরা।
বাহুবল উপজেলা পরিষদের মধ্যস্থলের জায়গার ওপর নির্মাণাধীন মসজিদটি দীর্ঘ ৫ বছর পার হলেও আংশিক কাজ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চম্পট দেয়। দেশের বিভিন্ন স্থানের মডেল মসজিদগুলো নির্মাণকাজ শেষ হয়ে ইতোমধ্যে কয়েকশ মসজিদ উদ্বোধনও হয়েছে। কিন্তু বাহুবল উপজেলাবাসীর প্রাণের এই মসজিদটি আজও আলোর মুখ দেখেনি।
জানা গেছে, মসজিদ নির্মাণ কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার কাজ ফেলে চলে গেছে ২ বছর আগে।
২০১৯ সালের শেষের দিকে বাহুবল মডেল মসজিদটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। ১২ কোটি ৫১ লাখ টাকা ব্যয়ের কাজটি পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মঈন উদ্দিন এন্টারপ্রাইজ। দেড় বছরের ভেতরে কাজ সম্পন্ন করার কথা থাকলেও অদ্যাবধি নজরে ভাসছে না কোনো কার্যক্রম। উল্লেখ্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মঈন উদ্দিন এন্টারপ্রাইজের কর্ণধার মঈন উদ্দিন বিগত সংসদ নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হওয়ায় আতঙ্কে মুখ খুলছেন না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনের সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী জানান, মডেল মসজিদ নিয়ে অনেক জটিলতা ছিল এবং টাকা বাতিল হয়ে গিয়েছিল। আমি আবার নতুন করে মঞ্জুর করিয়েছি। অচিরেই মডেল মসজিদের কাজ শুরু হবে। আগামী জুন মাস পর্যন্ত কাজের কর্মদিবস শেষ হবে, এর ভেতরেই কাজ সম্পন্ন হতে হবে।
হবিগঞ্জ জেলা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির হোসেন জানান, এই কাজের ঠিকাদার বর্তমানে সংসদ সদস্য তাই এই বিষয়ে কোনো বক্তব্য দিতে পারছি না। আপনি ঠিকাদারের সঙ্গে কথা বললে সব কিছু জানতে পারবেন।
বাহুবল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা আনোয়ার হোসাইন সালেহী বলেন, সবেমাত্র আমি দায়িত্বভার গ্রহণ করছি। মসজিদের নির্মাণ কাজ কী কারণে বন্ধ রয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে যত দ্রুত সম্ভব কাজ শুরু করার চেষ্টা করব।
বাহুবল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মনজুর আহসান জানান, মডেল মসজিদের রিটেন্ডার কাজ চলমান। শিগগিরই কাজ শুরু হবে।
মসজিদের ইমাম, মোয়াজ্জিন ও মুসল্লিরা জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মডেল মসজিদ নির্মাণের জন্য পুরাতন মসজিদটি ভেঙে নামাজ আদায়ের জন্য অস্থায়ী একটি নামাজ কক্ষ নির্মাণ করে দিলেও তা জীর্ণ-শীর্ণ ও নামাজ আদায়ের অনুপযোগী পরিবেশ। ফলে মুসল্লিদের নামাজ আদায়ে ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। দ্রুত মডেল মসজিদের নির্মাণকাজ সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবি তাদের।