ঢাকা ০৬:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo তারেক রহমানের অপেক্ষায় দেশবাসী Logo হবিগঞ্জ থেকে ঢাকায় যাচ্ছেন বিএনপির অর্ধলক্ষাধিক নেতাকর্মী Logo শায়েস্তাগঞ্জে কৃষি জমির টপসয়েল বিক্রির হিড়িক, জড়িত প্রভাবশালী সিন্ডিকেট চক্র Logo হবিগঞ্জ বালিভর্তি ট্রাক থেকে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় জিরা জব্দ Logo হাদিকে গুলি: হবিগঞ্জ সীমান্তে বিজিবির সতর্কতা জারি Logo শায়েস্তাগঞ্জ খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় উপজেলা যুবদলের দোয়া মাহফিল Logo চুনারুঘাট উপজেলায় বিএনপির স্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে বন কর্মকর্তাকে মারধরের অভিযোগ Logo হবিগঞ্জের বাহুবলে ট্রাক-চাপায় স্কুলশিক্ষক নিহত Logo হবিগঞ্জ বেপরোয়া ট্রাক চাপায় নারী নিহত Logo বেইলিব্রিজ ভেঙে হবিগঞ্জ-বানিয়াচং সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

তারেক রহমানের অপেক্ষায় দেশবাসী

মঈনুল হাসান রতন

দেশবাসীর কাছে প্রাণপ্রিয় নেতা তারেক রহমান। তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। এর আগে তিনি দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ও সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। তারেক রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও রাজনৈতিক উত্থান-পতনের একজন সাক্ষী এবং অংশগ্রহণকারী। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়, যখন তার পিতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীরউত্তম বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং দেশকে স্বাধীন করার জন্য যুদ্ধ শুরু করেন, তখন তাকে, তার মা এবং তার ভাইকে, অন্যান্য আরও অনেক মুক্তিযোদ্ধা সামরিক কর্মকর্তাদের পরিবারের সদস্যদের সাথে গ্রেফতার করা হয়। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য কারাবন্দী হওয়া সর্বকনিষ্ঠ কারাবন্দীদের একজন।

১৯৬৫ সালের ২০ নভেম্বর জন্ম গ্রহণ করেন তারেক রহমান। ১৯৯১ সালে নির্বাচনের আগে তিনি ১৯৮৮ সালে বাবা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের বগুড়া জেলার গাবতলী উপজেলা ইউনিটে সাধারণ সদস্য হিসেবে যোগদান করে তারেক রহমান তার রাজনৈতিক জীবনের সূচনা করেন। আনুষ্ঠানিক ভাবে সংগঠনের যোগ দেয়ার পূর্বেই তারেক রাজনীতিতে অত্যন্ত সক্রিয় ছিলেন। ১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তারেক তার মায়ের সহচর হিসেবে সারা দেশের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেন।১৯৯১ সালের নির্বাচনের আগে তিনি তার মা বেগম খালেদা জিয়ার সাথে দেশের প্রায় প্রতিটি জেলায় প্রচারণা চালিয়ে নির্বাচনে বিজয় অর্জন করেন। তার মা বেগম জিয়া বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।

২০০১ সালের নির্বাচনেও তারেক রহমান মা বেগম জিয়ার প্রারণা কার্যক্রমের পাশাপাশি পৃথক পরিকল্পনায় দেশব্যাপী নির্বাচনী প্রচারণা চালান। মূলত ২০০১ সালের নির্বাচনী প্রচারণায় তার অংশগ্রহণের মাধ্যমে রাজনীতির প্রথম সারিতে তারেক রহমানের সক্রিয় আগমন ঘটে। তিনি তৃণমূল থেকে জনগণকে সংগঠিত করেছিলেন রেখেছিলেন।

তিনি বগুড়ায় তৃণমূল থেকে নেতা নির্বাচনের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার সূচনা করেছিলেন, যেখানে বিএনপি শাখার একজন নির্বাহী সদস্য ছিলেন। ১৯৯৩ সালে বগুড়া জেলা ইউনিটে তিনি একটি সম্মেলনের আয়োজন করেন, যেখানে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচন করা হয়। বগুড়ায় সফল সম্মেলনের পর তিনি অন্যান্য জেলা ইউনিটকে গণতান্ত্রিকভাবে নেতা নির্বাচন করতে উৎসাহিত করেন।

২০০১ সালের নির্বাচনের আগে, তিনি স্থানীয় পর্যায়ের সমস্যা এবং সুশাসনের উপর গবেষণা করার জন্য ঢাকায় একটি অফিস প্রতিষ্ঠা করেন। সেখানে বুদ্ধিজীবী ও সুশীল সমাজের সদস্যদের সঙ্গেও তিনি আলোচনা করেন। তার প্রচেষ্টায় ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করে। চেয়ারপারসনের ছেলে হয়েও এবং তৃণমূল থেকে ব্যাপক সমর্থন পাওয়া সত্ত্বেও তিনি স্বজনপ্রীতি করে কোনো মন্ত্রিত্ব বা সংসদ সদস্যপদ গ্রহণ না করে দলের তৃণমূলের ক্ষমতায়নে মনোনিবেশ করেন। দল সংগঠনে তার প্রচেষ্টার স্বীকৃতি হিসেবে ২০০২ সালে স্থায়ী কমিটি তাকে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক পদে মনোনীত করে। ২০০৫ সালে তিনি দেশব্যাপী তৃণমূল সম্মেলন আয়োজন করেন এবং বাংলাদেশের প্রতিটি উপজেলা ইউনিটের সাথে মতবিনিময় করেন। এই সম্মেলনের সময় তিনি তৃণমূল নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলেন, স্থানীয়দের সাথে মতবিনিময় করা এবং সমর্থকদের চিন্তাধারা শোনেন এবং জনগণের কাছে বিএনপির কর্মসূচী প্রচার করেছেন। তিনি কৃষকদের জন্য সরকারী ভর্তুকি, বয়স্কদের জন্য ভাতা, পরিবেশগত ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য প্লাস্টিক ব্যাগ বিরোধী আন্দোলন এবং নারী শিক্ষার্থীদের জন্য উপবৃত্তি বিতরণ সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করেন, যা স্কুলে লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য কমিয়ে ভারসাম্য আনতে সহায়ক হয়। তিনি ব্যক্তিগতভাবে সম্মেলনে নিবন্ধনকারীদের অন্তত ১৮ হাজার চিঠির উত্তর দেন।

২০০৭ সালে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সামরিক শাসকদের বেআইনি ক্ষমতা দখলের পর তারেক রহমানের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়। তখনকার সরকারি দপ্তরের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা জানান যে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান ব্যক্তিরা দুর্নীতি দমন কমিশনসহ বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তাদের তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করতে বাধ্য করেছিল। এসময় তার মা বেগম জিয়াকে দেশত্যাগে বাধ্য করতে না পেরে, তাকে গ্রেপ্তার করে নির্যাতন করা হয়েছিল।

১৮ বছর লন্ডনে থেকে ভার্চুয়ালে দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। আওয়ামী ফ্যাসিবাদের নির্যাতনের পরেও তিনি দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে লন্ডন বসেই দিনরাত পরিশ্রম করছেন। রাষ্ট্র কাঠামো গঠনের জন্য ৩১ দফা কর্মসূচী ঘোষণা করেন।

তিনি ২০০৯ সালে বিএনপির সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন এবং ধীরে ধীরে বিএনপির পুনর্গঠনে যুক্ত হন। ২০১৮ সালে যখন তার মা সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া মিথ্যা অভিযোগে কারাগারে বন্দী হন, তখন তাকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন মনোনীত করা হয়। তখন থেকেই তিনি স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন।

১৯৯৪ সালে তারেক রহমান বাংলাদেশের প্রাক্তন নৌবাহিনী প্রধান এবং পরবর্তী সরকারের দুই বারের মন্ত্রী প্রয়াত রিয়ার অ্যাডমিরাল মাহবুব আলী খানের কন্যা ডা. জোবায়দা রহমানকে বিয়ে করেন। জোবায়দা রহমান একজন কার্ডিওলজিস্ট এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজে পড়াশোনা করেছেন। জাইমা রহমান নামে তাদের একটি মেয়ে রয়েছে।

তারেক রহমান অল্প বয়স থেকেই রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয়। ২০০০ সালের শুরুর দিকে তার মা প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন বিএনপিতে তিনি জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।
দুর্নীতি, মানি লন্ডারিং, অবৈধ সম্পদ অর্জন, গ্রেনেড হামলাসহ একাধিক অভিযোগে তিনি শেখ হাসিনা সরকারের আমলে আদালত কর্তৃক দন্ডপ্রাপ্ত হন। ২০০৭ সালের পর তার বিরুদ্ধে মোট ৮৪টি মামলা হয়। এগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা অভিযোগ।

পরবর্তীকালে ২০২৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর, আদালত তাকে দন্ডপ্রাপ্ত সকল অভিযোগ থেকে খালাস দেয় এবং তার সাজা বাতিল করা হয়। বর্তমানে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কোনো মামলা বিচারাধীন নেই। তাই প্রায় ১৭ বছর পর নির্বাসে থেকে দেশে ফিরছেন তারেক রহমান। ২৫ ডিসেম্বর দেশে প্রত্যাবর্তনের খবরে বাংলাদেশের মানুষ ও নেতাকর্মীরা এক নজর দেখার জন্য উজ্জীবিত হয়ে আছে। তার অপেক্ষায় রয়েছে দেশবাসী।

মঈনুল হাসান রতন
লেখক ও সাংবাদিক
সভাপতি
শায়েস্তাগঞ্জ প্রেসক্লাব।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৬:২১:২৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫
১ বার পড়া হয়েছে

তারেক রহমানের অপেক্ষায় দেশবাসী

আপডেট সময় ০৬:২১:২৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫

দেশবাসীর কাছে প্রাণপ্রিয় নেতা তারেক রহমান। তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। এর আগে তিনি দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ও সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। তারেক রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও রাজনৈতিক উত্থান-পতনের একজন সাক্ষী এবং অংশগ্রহণকারী। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়, যখন তার পিতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীরউত্তম বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং দেশকে স্বাধীন করার জন্য যুদ্ধ শুরু করেন, তখন তাকে, তার মা এবং তার ভাইকে, অন্যান্য আরও অনেক মুক্তিযোদ্ধা সামরিক কর্মকর্তাদের পরিবারের সদস্যদের সাথে গ্রেফতার করা হয়। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য কারাবন্দী হওয়া সর্বকনিষ্ঠ কারাবন্দীদের একজন।

১৯৬৫ সালের ২০ নভেম্বর জন্ম গ্রহণ করেন তারেক রহমান। ১৯৯১ সালে নির্বাচনের আগে তিনি ১৯৮৮ সালে বাবা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের বগুড়া জেলার গাবতলী উপজেলা ইউনিটে সাধারণ সদস্য হিসেবে যোগদান করে তারেক রহমান তার রাজনৈতিক জীবনের সূচনা করেন। আনুষ্ঠানিক ভাবে সংগঠনের যোগ দেয়ার পূর্বেই তারেক রাজনীতিতে অত্যন্ত সক্রিয় ছিলেন। ১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তারেক তার মায়ের সহচর হিসেবে সারা দেশের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেন।১৯৯১ সালের নির্বাচনের আগে তিনি তার মা বেগম খালেদা জিয়ার সাথে দেশের প্রায় প্রতিটি জেলায় প্রচারণা চালিয়ে নির্বাচনে বিজয় অর্জন করেন। তার মা বেগম জিয়া বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।

২০০১ সালের নির্বাচনেও তারেক রহমান মা বেগম জিয়ার প্রারণা কার্যক্রমের পাশাপাশি পৃথক পরিকল্পনায় দেশব্যাপী নির্বাচনী প্রচারণা চালান। মূলত ২০০১ সালের নির্বাচনী প্রচারণায় তার অংশগ্রহণের মাধ্যমে রাজনীতির প্রথম সারিতে তারেক রহমানের সক্রিয় আগমন ঘটে। তিনি তৃণমূল থেকে জনগণকে সংগঠিত করেছিলেন রেখেছিলেন।

তিনি বগুড়ায় তৃণমূল থেকে নেতা নির্বাচনের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার সূচনা করেছিলেন, যেখানে বিএনপি শাখার একজন নির্বাহী সদস্য ছিলেন। ১৯৯৩ সালে বগুড়া জেলা ইউনিটে তিনি একটি সম্মেলনের আয়োজন করেন, যেখানে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচন করা হয়। বগুড়ায় সফল সম্মেলনের পর তিনি অন্যান্য জেলা ইউনিটকে গণতান্ত্রিকভাবে নেতা নির্বাচন করতে উৎসাহিত করেন।

২০০১ সালের নির্বাচনের আগে, তিনি স্থানীয় পর্যায়ের সমস্যা এবং সুশাসনের উপর গবেষণা করার জন্য ঢাকায় একটি অফিস প্রতিষ্ঠা করেন। সেখানে বুদ্ধিজীবী ও সুশীল সমাজের সদস্যদের সঙ্গেও তিনি আলোচনা করেন। তার প্রচেষ্টায় ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করে। চেয়ারপারসনের ছেলে হয়েও এবং তৃণমূল থেকে ব্যাপক সমর্থন পাওয়া সত্ত্বেও তিনি স্বজনপ্রীতি করে কোনো মন্ত্রিত্ব বা সংসদ সদস্যপদ গ্রহণ না করে দলের তৃণমূলের ক্ষমতায়নে মনোনিবেশ করেন। দল সংগঠনে তার প্রচেষ্টার স্বীকৃতি হিসেবে ২০০২ সালে স্থায়ী কমিটি তাকে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক পদে মনোনীত করে। ২০০৫ সালে তিনি দেশব্যাপী তৃণমূল সম্মেলন আয়োজন করেন এবং বাংলাদেশের প্রতিটি উপজেলা ইউনিটের সাথে মতবিনিময় করেন। এই সম্মেলনের সময় তিনি তৃণমূল নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলেন, স্থানীয়দের সাথে মতবিনিময় করা এবং সমর্থকদের চিন্তাধারা শোনেন এবং জনগণের কাছে বিএনপির কর্মসূচী প্রচার করেছেন। তিনি কৃষকদের জন্য সরকারী ভর্তুকি, বয়স্কদের জন্য ভাতা, পরিবেশগত ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য প্লাস্টিক ব্যাগ বিরোধী আন্দোলন এবং নারী শিক্ষার্থীদের জন্য উপবৃত্তি বিতরণ সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করেন, যা স্কুলে লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য কমিয়ে ভারসাম্য আনতে সহায়ক হয়। তিনি ব্যক্তিগতভাবে সম্মেলনে নিবন্ধনকারীদের অন্তত ১৮ হাজার চিঠির উত্তর দেন।

২০০৭ সালে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সামরিক শাসকদের বেআইনি ক্ষমতা দখলের পর তারেক রহমানের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়। তখনকার সরকারি দপ্তরের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা জানান যে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান ব্যক্তিরা দুর্নীতি দমন কমিশনসহ বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তাদের তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করতে বাধ্য করেছিল। এসময় তার মা বেগম জিয়াকে দেশত্যাগে বাধ্য করতে না পেরে, তাকে গ্রেপ্তার করে নির্যাতন করা হয়েছিল।

১৮ বছর লন্ডনে থেকে ভার্চুয়ালে দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। আওয়ামী ফ্যাসিবাদের নির্যাতনের পরেও তিনি দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে লন্ডন বসেই দিনরাত পরিশ্রম করছেন। রাষ্ট্র কাঠামো গঠনের জন্য ৩১ দফা কর্মসূচী ঘোষণা করেন।

তিনি ২০০৯ সালে বিএনপির সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন এবং ধীরে ধীরে বিএনপির পুনর্গঠনে যুক্ত হন। ২০১৮ সালে যখন তার মা সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া মিথ্যা অভিযোগে কারাগারে বন্দী হন, তখন তাকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন মনোনীত করা হয়। তখন থেকেই তিনি স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন।

১৯৯৪ সালে তারেক রহমান বাংলাদেশের প্রাক্তন নৌবাহিনী প্রধান এবং পরবর্তী সরকারের দুই বারের মন্ত্রী প্রয়াত রিয়ার অ্যাডমিরাল মাহবুব আলী খানের কন্যা ডা. জোবায়দা রহমানকে বিয়ে করেন। জোবায়দা রহমান একজন কার্ডিওলজিস্ট এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজে পড়াশোনা করেছেন। জাইমা রহমান নামে তাদের একটি মেয়ে রয়েছে।

তারেক রহমান অল্প বয়স থেকেই রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয়। ২০০০ সালের শুরুর দিকে তার মা প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন বিএনপিতে তিনি জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।
দুর্নীতি, মানি লন্ডারিং, অবৈধ সম্পদ অর্জন, গ্রেনেড হামলাসহ একাধিক অভিযোগে তিনি শেখ হাসিনা সরকারের আমলে আদালত কর্তৃক দন্ডপ্রাপ্ত হন। ২০০৭ সালের পর তার বিরুদ্ধে মোট ৮৪টি মামলা হয়। এগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা অভিযোগ।

পরবর্তীকালে ২০২৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর, আদালত তাকে দন্ডপ্রাপ্ত সকল অভিযোগ থেকে খালাস দেয় এবং তার সাজা বাতিল করা হয়। বর্তমানে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কোনো মামলা বিচারাধীন নেই। তাই প্রায় ১৭ বছর পর নির্বাসে থেকে দেশে ফিরছেন তারেক রহমান। ২৫ ডিসেম্বর দেশে প্রত্যাবর্তনের খবরে বাংলাদেশের মানুষ ও নেতাকর্মীরা এক নজর দেখার জন্য উজ্জীবিত হয়ে আছে। তার অপেক্ষায় রয়েছে দেশবাসী।

মঈনুল হাসান রতন
লেখক ও সাংবাদিক
সভাপতি
শায়েস্তাগঞ্জ প্রেসক্লাব।