ড. ইউনূসের মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির নির্দেশ হাইকোর্টের
শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে করা মামলায় ছয় মাসের সাজাপ্রাপ্ত নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করতে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
ড. ইউনূসের মামলায় ৫০ পাতার রায়ের পর্যবেক্ষণের সময় এই নির্দেশনা দেওয়া হয়। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার (৩ জুলাই) এই রায় প্রকাশ করেন। হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণে বলা হয় সাজা কখনোও স্থগিত হয় না।
শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে করা মামলায় আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করবেন ড. ইউনূস।
১৮ মার্চ শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ড. ইউনূসের ৬ মাসের সাজা ও দণ্ড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে স্থগিতের আদেশ বাতিল করেন হাইকোর্ট। ফলে ড. ইউনূসের ৬ মাসের সাজা চলমান থাকবে বলে রায়ে বলা হয়।
সোনার মানুষ তৈরি করলে, সোনার দেশ গড়া যাবে : হাইকোর্ট
এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। ওইদিন আদালতে ইউনূসের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন। আর কলকারখানা অধিদফতরের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ৬ মাসের সাজার বিরুদ্ধে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে বিদেশ যেতে হলে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালকে জানিয়ে যেতে হবে বলে আদেশ দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ড. ইউনূসের ৬ মাসের সাজা স্থগিতের আদেশ স্থগিত করেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি স্থগিতের আদেশ বাতিল প্রশ্নে রুল জারি করেন আদালত। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
গত ৪ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় ড. ইউনূসের ৬ মাসের সাজা স্থগিতের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়। এছাড়া আদালতের অনুমতি ড. ইউনূস যেন বিদেশ যেতে না পারেন সে আবেদনও করা হয়। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদফতরের পক্ষে অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান এ আবেদন করেন।
গত ২৮ জানুয়ারি এ মামলার রায় চ্যালেঞ্জ করে ড.ইউনূসসহ চার জনকে জামিন দেন শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন আদালত। ওইদিন শ্রম আদালতের দেয়া সাজা স্থগিত করেন শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল। এর আগে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে জামিন চেয়েছিলেন তিনি। সেই সঙ্গে শ্রম আইন লঙ্ঘন মামলার রায়ে ৬ মাসের সাজার বিরুদ্ধে ২৫টি যুক্তি দেখিয়ে খালাস চেয়ে আপিলও করেন তিনি।
ওইদিন ড. ইউনূসের আইনজীবী আইনজীবী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেছিলেন, আদালত আমাদের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন এবং নিম্ন আদালতের সম্পূর্ণ রায়কে সাসপেন্ড করেছেন। একইসঙ্গে আগামী ৩ মার্চ নিম্ন আদালতের সেসব নথি আনার জন্য তারিখ নির্ধারণ করেছে। আর আপিল শুনানি শেষ না হওয়া পর্যন্ত সবাইকে স্থায়ী জামিন দেয়া হয়েছে।
শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় গত ১ জানুয়ারি ৬ মাসের সাজা হয় ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চার আসামির। রায় প্রদানকারী বিচারক শেখ মেরিনা সুলতানার স্বাক্ষরের পর ৮৪ পৃষ্ঠার এ রায় প্রকাশ করা হয়।