ধর্মপাশা ও মধ্যনগর বীজতলা তৈরিতে ব্যস্ত হাওরপাড়ের কৃষক
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা ও মধ্যনগর উপজেলার হাওরের পানি নামতে শুরু করেছে। ধীরে ধীরে ভেসে উঠছে বোরো ফসলের জমি। হাওরজুড়ে বোরো ধান রোপন করার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে হাওরপাড়ের কৃষকেরা। এখন হাওরে পুরোদমে চলছে বীজতলা তৈরির কাজ। যেন কৃষকদের দম ফেলার সময় নেই। যত আগে বীজতলা তৈরি করে পরিচর্যায় মনোনিবেশ করতে পারবেন তত আগেই ধানের চারা রোপনের সুযোগ হবে। হাওর থেকে দেরিতে পানি নামলে বীজতলা তৈরিতে যেমন দেরি হয় তেমনি নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে ফসল কর্তনের সময়। এবার যেন যথা সময়েই তৈরি হচ্ছে বীজতলা। সবকিছু ঠিক থাকলে সোনার ফসলে ভরে ওঠবে কৃষকের গোলা।
অগভীর নদী, হাওর থেকে পানি নিষ্কাশনের প্রতিবন্ধকতা ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রাকৃতিক দুযোর্গের তীব্রতা বৃদ্ধি দিনদিন হাওরাঞ্চলে বোরো ফসল উৎপাদনে নানান বাধা সৃষ্টি করছে। গত কয়েক বছর ধরে ফসল কর্তনের সময় হাওরে আগাম পানি চলে আসা এবং চাষাবাদের সময় হাওর থেকে পানি নিষ্কাশন না হওয়া বোরো চাষাবাদে নতুন সংকট তৈরি করেছে।
এ বছর ধর্মপাশা ও মধ্যনগর উপজেলার আটটি হাওরে ৩২ হাজার ৯০৭ হেক্টর জমিতে বোরো ফসল চাষাবাদের জন্য ১ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত ৭ নভেম্বর থেকে দুই উপজেলায় বীজতলা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। বুধবার দুপুর পর্যন্ত ৩৫০ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরির কাজ শেষ হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে মধ্যে দুই উপজেলাতেই শতভাগ বীজতলা তৈরি কাজ শেষ হতে পারে।
ধর্মপাশা উপজেলার চন্দ্রসোনার তাল হাওরের কৃষক আব্দুল হাই বলেন, ৩ দিন আগেই বীজতলা তৈরি কাজ শেষ করেছি। অন্য বছর হাওর থেকে দেরিতে পানি নামায় বীজতলা তৈরিতে বিলম্ব হয়। যা বোরো ফসলে বিরূপ প্রভাব ফেলে।
মধ্যনগর উপজেলার কাইল্যানি হাওরের কৃষক শামীম মিয়া বলেন, আবহা ভালো থাকায় হাওরে এখন পুরোদমে বীজতলা তৈরির কাজ চলছে। চারা উপযুক্ত হওয়ার আগে যদি হাওর থেকে পানি না নামে তাহলে রোপন কাজ পিছিয়ে যায়। এবার তা হবে বলে মনে হয়না।
ধর্মপাশা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মাসুদ তুষার বলেন, এবার হাওর থেকে দ্রুত পানি নামছে। প্রথমে উফসী, পরে হাইব্রিডের পাশাপাশি কৃষকরা স্থানীয় ধানের জাতের বীজতলা তৈরি করছেন। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ নাগাদ শতভাগ বীজতলা তৈরির কাজ শেষ হবে বলে আশা করা যায়।