ঢাকা ১০:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ছিলানী তাহিরপুরের ক্লোজার যেন মিনি সাগর– দুশ্চিন্তায় কৃষক

শামছুল আলম আখঞ্জী তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) সংবাদদাতা:-

oplus_16

গত বন্যার স্রোতের কবলে পড়ে, মাটিয়ান হাওর উপ প্রকল্পের পুরাতন সড়ক ভেঙে তৈরি হয়েছে (ক্লোজার)। এ যেন মিনি সাগরে পরিনত। ভেসে ওঠা এমন ভাঙ্গন চিত্র দেখে, হাওর পাড়ের কৃষক হতভম্ব।

ছিলানী তাহিরপুরের কালটি এখন, কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক কৃষকেই দ্বিধাগ্রস্ত মাঝে পড়েছেন, চাষাবাদ করবেন কিনা? তবে আদি পেশা ছাড়া,আর কোনো বিকল্প পেশা না থাকায়,অনিশ্চিত জেনে ও আদি পেশায় কষ্টার্জিত অর্থ, শ্রম বিনিয়োগ করে, হাওরের জমি গুলোতে চাষাবাদ, ধান চারা রোপণ করছেন স্থানীয় কৃষকরা। তবে প্রতিবছরই দুর্যোগ মোকাবিলা করে নিন্মাঞ্চলের জমিতে বোরোধানের চারা রোপণ করা হয়।কিন্তু এবার ঝুঁকি বেশি ,এই ভাঙ্গনের কারণে।সঠিক সময়ে ঠিকসই মজবুত বাঁধ নির্মাণ না হলে, পাহাড়ি ঢলে, আমাদের কষ্টার্জিত রোপণ করা ফসল,সবেই নিবে জলে। আর এ কারণে দুশ্চিন্তায় কৃষক।

মাটিয়ান হাওর উপ প্রকল্পের – নাইন্দার হাওরে গিয়ে দেখে যায়,বাঁধ ভাঙ্গায় পরিনত হয়েছে মিনি সাগর, এমন চিত্র ফুটে উঠেছে। এর নিকটবর্তী স্তানে নেই মাটির ব্যবস্তা।মাট সংকটের কারণে বাঁধ নির্মাণেও হবে কষ্টকর্। স্থানীয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের অফিস সূত্র জানা যায়, ভাঙ্গনের গভীরতা তৈরি হয়েছে ১৫ মিটার কোনো কোনো জায়গায় ১৬ মিটার গর্ত। বর্তমান ডিজাইনে বাঁধ নির্মাণ হলে ঝুঁকি থাকবে। ডিজাইন পরিবর্তনের জন্য উর্ধতন কতৃপক্ষের কাছে সার্ভে করে প্রতিবেদন পাঠিয়েছে উপজেলার উপ প্রকৌশলী।

মৎস্য, পাথর, ধান সুনামগঞ্জের প্রাণ। এই সুনাম সারা দেশ জুড়ে প্রকাশিত। জেলার তাহিরপুর উপজেলার শনি, মাটিয়ান হাওরে বোরোধান উৎপাদনে বেশি হওয়ার খ্যাতি রয়েছে।

এই বাঁধটি সুনামগঞ্জ তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত মাটিয়ান হাওর উপ প্রকল্পের নাইন্দার হাওরের ছিলানী তাহিরপুর গ্রামের পশ্চিম দিকে অবস্থিত।
এই বাঁধের সঙ্গে কয়েকটি হাওরের ফসলী জমি সংযুক্ত। পালই,বন্নুয়া,মাটিয়ান।এই বাঁধ ভাঙ্গলে,সংযুক্ত হাওর গুলোর ফসল হানীর হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। এতে শঙ্কিত কৃষকগন।

হাওরাঞ্চলের মানুষের প্রধান পেশাই কৃষি কাজ। এ পেশার মাধ্যমেই হয়,যাহা আয় হয়, তা দিয়ে চলে, জীবন সংসার। বৈশাখী পাকা ধান গোলায় ওঠাতে পারলেই রঙিন স্বপ্ন বাস্তবায়ন বাস্তবায়ন হয়। আর এর ব্যতিক্রম ঘটলেই দুর্ভোগ নেমে আসে,অন্ধকার কালো ছায়া। এমনটা জানান স্থানীয় কৃষকরা।

এ হাওর পাড়ের কৃষক আঃ হালিম জানান,এটি এখন কাল নয়, পূর্বের কালিদাস সাগরে পরিনত হয়েগেছে। ঠিকসই মজবুত বাঁধ নির্মাণ না হলে,আমাদের ফসল রক্ষাই দায় হবে এবার। দুর্ভোগ নেমে আসবে কপালে। আমি এই হাওরে ছয় কেয়ার( ৩০ শতাংশে এক কেয়ার) জমিতে বোরোধানের চারা রোপণ করেছি। এখানে একাধিক প্রকল্পের মাধ্যমে বাঁধ নির্মাণ কাজ করতে হবে।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলার ছোট বড় ২৩টি হাওরে১৭ হাজার ৪শত ৩৯ হেক্টর জমিতে বোরোধান চারা রোপণ করা হবে।

তাহিরপুর উপজেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-প্রকৌশলী মনির মিয়া বলেন, এই বাঁধটি ঝুঁকিপূর্ণ,গত বন্যায় গভীরতা তৈরি হয়েছে। এর জন্য উর্ধতন কতৃপক্ষ বিশেষ ভাবে পর্যবেক্ষণ চালিয়ে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করছেন। আশা করি টেকসই বাঁধ নির্মাণ হবে। প্রয়োজনে একাধিক প্রকল্পের মাধ্যমে
বাঁধ নির্মাণ করবো। তিনি আরও বলেন, এ উপজেলার ৮টি হাওরের রোপণ করা বোরোধানে ফসল রক্ষায়, ৯৬ কিলোমিটার রাস্তাসহ বেড়িবাঁধ নির্মাণ করবে, পানি উন্নয়ন বোর্ড। এতে ১২কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। ৭৬টি প্রকল্প বেড়ি বাঁধ নির্মাণে কাজ করবে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৮:৩১:২১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪
৪ বার পড়া হয়েছে

ছিলানী তাহিরপুরের ক্লোজার যেন মিনি সাগর– দুশ্চিন্তায় কৃষক

আপডেট সময় ০৮:৩১:২১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

গত বন্যার স্রোতের কবলে পড়ে, মাটিয়ান হাওর উপ প্রকল্পের পুরাতন সড়ক ভেঙে তৈরি হয়েছে (ক্লোজার)। এ যেন মিনি সাগরে পরিনত। ভেসে ওঠা এমন ভাঙ্গন চিত্র দেখে, হাওর পাড়ের কৃষক হতভম্ব।

ছিলানী তাহিরপুরের কালটি এখন, কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক কৃষকেই দ্বিধাগ্রস্ত মাঝে পড়েছেন, চাষাবাদ করবেন কিনা? তবে আদি পেশা ছাড়া,আর কোনো বিকল্প পেশা না থাকায়,অনিশ্চিত জেনে ও আদি পেশায় কষ্টার্জিত অর্থ, শ্রম বিনিয়োগ করে, হাওরের জমি গুলোতে চাষাবাদ, ধান চারা রোপণ করছেন স্থানীয় কৃষকরা। তবে প্রতিবছরই দুর্যোগ মোকাবিলা করে নিন্মাঞ্চলের জমিতে বোরোধানের চারা রোপণ করা হয়।কিন্তু এবার ঝুঁকি বেশি ,এই ভাঙ্গনের কারণে।সঠিক সময়ে ঠিকসই মজবুত বাঁধ নির্মাণ না হলে, পাহাড়ি ঢলে, আমাদের কষ্টার্জিত রোপণ করা ফসল,সবেই নিবে জলে। আর এ কারণে দুশ্চিন্তায় কৃষক।

মাটিয়ান হাওর উপ প্রকল্পের – নাইন্দার হাওরে গিয়ে দেখে যায়,বাঁধ ভাঙ্গায় পরিনত হয়েছে মিনি সাগর, এমন চিত্র ফুটে উঠেছে। এর নিকটবর্তী স্তানে নেই মাটির ব্যবস্তা।মাট সংকটের কারণে বাঁধ নির্মাণেও হবে কষ্টকর্। স্থানীয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের অফিস সূত্র জানা যায়, ভাঙ্গনের গভীরতা তৈরি হয়েছে ১৫ মিটার কোনো কোনো জায়গায় ১৬ মিটার গর্ত। বর্তমান ডিজাইনে বাঁধ নির্মাণ হলে ঝুঁকি থাকবে। ডিজাইন পরিবর্তনের জন্য উর্ধতন কতৃপক্ষের কাছে সার্ভে করে প্রতিবেদন পাঠিয়েছে উপজেলার উপ প্রকৌশলী।

মৎস্য, পাথর, ধান সুনামগঞ্জের প্রাণ। এই সুনাম সারা দেশ জুড়ে প্রকাশিত। জেলার তাহিরপুর উপজেলার শনি, মাটিয়ান হাওরে বোরোধান উৎপাদনে বেশি হওয়ার খ্যাতি রয়েছে।

এই বাঁধটি সুনামগঞ্জ তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত মাটিয়ান হাওর উপ প্রকল্পের নাইন্দার হাওরের ছিলানী তাহিরপুর গ্রামের পশ্চিম দিকে অবস্থিত।
এই বাঁধের সঙ্গে কয়েকটি হাওরের ফসলী জমি সংযুক্ত। পালই,বন্নুয়া,মাটিয়ান।এই বাঁধ ভাঙ্গলে,সংযুক্ত হাওর গুলোর ফসল হানীর হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। এতে শঙ্কিত কৃষকগন।

হাওরাঞ্চলের মানুষের প্রধান পেশাই কৃষি কাজ। এ পেশার মাধ্যমেই হয়,যাহা আয় হয়, তা দিয়ে চলে, জীবন সংসার। বৈশাখী পাকা ধান গোলায় ওঠাতে পারলেই রঙিন স্বপ্ন বাস্তবায়ন বাস্তবায়ন হয়। আর এর ব্যতিক্রম ঘটলেই দুর্ভোগ নেমে আসে,অন্ধকার কালো ছায়া। এমনটা জানান স্থানীয় কৃষকরা।

এ হাওর পাড়ের কৃষক আঃ হালিম জানান,এটি এখন কাল নয়, পূর্বের কালিদাস সাগরে পরিনত হয়েগেছে। ঠিকসই মজবুত বাঁধ নির্মাণ না হলে,আমাদের ফসল রক্ষাই দায় হবে এবার। দুর্ভোগ নেমে আসবে কপালে। আমি এই হাওরে ছয় কেয়ার( ৩০ শতাংশে এক কেয়ার) জমিতে বোরোধানের চারা রোপণ করেছি। এখানে একাধিক প্রকল্পের মাধ্যমে বাঁধ নির্মাণ কাজ করতে হবে।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলার ছোট বড় ২৩টি হাওরে১৭ হাজার ৪শত ৩৯ হেক্টর জমিতে বোরোধান চারা রোপণ করা হবে।

তাহিরপুর উপজেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-প্রকৌশলী মনির মিয়া বলেন, এই বাঁধটি ঝুঁকিপূর্ণ,গত বন্যায় গভীরতা তৈরি হয়েছে। এর জন্য উর্ধতন কতৃপক্ষ বিশেষ ভাবে পর্যবেক্ষণ চালিয়ে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করছেন। আশা করি টেকসই বাঁধ নির্মাণ হবে। প্রয়োজনে একাধিক প্রকল্পের মাধ্যমে
বাঁধ নির্মাণ করবো। তিনি আরও বলেন, এ উপজেলার ৮টি হাওরের রোপণ করা বোরোধানে ফসল রক্ষায়, ৯৬ কিলোমিটার রাস্তাসহ বেড়িবাঁধ নির্মাণ করবে, পানি উন্নয়ন বোর্ড। এতে ১২কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। ৭৬টি প্রকল্প বেড়ি বাঁধ নির্মাণে কাজ করবে।