লাখাইয়ে সরিষা চাষে কৃষকের মুখে হাসি
লাখাই উপজেলার বিভিন্ন ফসলের মাঠে মাঠে হিমেল বাতাসে দোল খাচ্ছে হলুদ সরিষা ফুল। দূর থেকে সরিষার ক্ষেতগুলো দেখে মনে হয়, কে যেন হলুদ চাদর বিছিয়ে রেখেছে। সরিষা ফুলের হলুদ রাজ্যে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত যেমন মাঠ, তেমনি বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।
এদিকে, ফসলের মাঠে ফোটা ফলগুলো রোদ ঝলমল আলোয় প্রকৃতির মাঝে অপরূপ সৌন্দর্যের শোভা ছড়াচ্ছে। তেমনি সরিষার হলুদ রাজ্য দেখতে ভিড় করছেন প্রকৃতিপ্রেমীরা। একই সঙ্গে শীতের কুয়াশাকে উপেক্ষা করে চাষীরা সরিষা ক্ষেতের যত্ন নিচ্ছেন।
সরিষা ক্ষেতগুলো সেজেছে হলুদ রঙে। সবুজের বুকে হলুদ রঙ মেখে বেড়ে উঠছে এ উপজেলার কৃষকদের স্বপ্ন। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায় চলতি বৎসর লাখাইয়ে সরিষা চাষাবাদের এর লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছিল ১ হাজার ৩২০ হেক্টর। বৈরী আবহাওয়ার কারণে চাষাবাদ হয়েছে ১ হাজার ৬০ হেক্টর জমি। যা গত বছরের চেয়ে ২৬০ হেক্টর কম। আবাদকৃত জমিতে বারি সরিষা- ১৪,১৭, ১৮ বিনা- ০৯, ১১ ইত্যাদি জাতের সরিষা চাষ করা হয়েছে। ধান ও অন্য ফসলের তুলনায় সরিষার আবাদ লাভজনক হওয়ায় কৃষকরা দিনদিন সরিষা চাষে ঝুঁকছেন। অন্যদিকে স্থানীয় কৃষি বিভাগ ৯৫০ জন কৃষককে প্রনোদনার মাধ্যমে বিনামুল্যে ১কেজি করে সরিষা বীজ, ১০ কেজি এমওপি, ডিএপি সার দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও প্রদর্শনীর মাধ্যমে নতুন নতুন জাত সম্প্রসারণ করা হয়েছে বলে জানাগেছে। গতকাল মঙ্গলবার উপজেলার করাব, মুড়িয়াউক, মোড়াকরি, বামৈ ইউনিয়ন এর বিভিন্ন মাঠে সরেজমিন পরিদর্শন কালে সরিষার ফলন দেখে চোখ জুরিয়ে গিয়েছিল। বিস্তীর্ণ মাঠে যেন হলুদ সাজে বেড়ে উঠছে কৃষকের স্বপ্ন।
মাঠে দেখা মেলে কৃষক মহন মিয়ার সাথে, কথা হলে তিনি জানান আমি এ বছর আমার ২ বিঘা জমিতে সরিষা আবাদ করেছি। আশাকরি ফলন ভালো হবে। গুনিপুর গ্রামের এক কৃষক বলেন, এবছর আমার ৪/৫বিগা জমিতে
সরিষার বাম্পার ফলন হবে বলে আশাবাদী।
বীজ বপনের দুই মাসের মধ্যেই সরিষা ঘরে উঠে আসে। সরিষা উঠিয়ে ধান চাষ করতে কোনো সমস্যা হয় না এবং ধানের ফলনেও কোনো প্রভাব পড়ে না। তার মতে সরিষার আবাদ করা মানেই অতিরিক্ত লাভের মুখ দেখা। একইভাবে অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন অসংখ্য কৃষক। আশার আলো দেখে তাঁরা উল্লসিত।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মাহমুদুল হাসান মিজান বলেন, সরিষার আবাদের শুরুতে টানা দুইবারের বৃষ্টিপাতের ফলে এ বছর সরিষা কাংখিত আবাদ ও ফলন নিয়ে শংকায় ছিলাম। তবে শেষের দিকে কৃষকদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার ফলে সফলতা এসেছে। উপজেলার কৃষকেরা খুবই পরিশ্রমী আশাবাদী। তাই চাষের লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে আবাদ কম হলেও ফলন আশানুরূপ হওয়ার সম্ভাবণা রয়েছে। এছাড়াও জমির অবস্থানুযায়ী কৃষকদের সঠিক মাত্রায় কীটনাশক প্রয়োগের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।