ঢাকা ১২:৫২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিতর্কিত নিয়োগ ও সাজাপ্রাপ্ত আসামী হয়েও বহাল তবিয়তে শায়েস্তাগঞ্জ কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ

শায়েস্তাগঞ্জের বাণী ডেস্ক ,

একদিকে বিতর্কিত নিয়োগ অন্যদিকে সাজাপ্রাপ্ত আসামী। তবুও দীর্ঘদিন যাবত বহাল তবিয়তে রয়েছেন হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ শাহাব উদ্দিন। যা নিয়ে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে বইছে নানান আলোচনা ও সমাচেলানা।

স্থানীয়রা বলছেন, দীর্ঘদিন যাবত স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় থেকে বিতর্কিত নিয়োগ ও নানা অনিয়ম করার পরও মাদরাসায় দিব্যি অধ্যক্ষ পদে বহাল রয়েছেন তিনি। জানা গেছে, শায়েস্তাগঞ্জ মডেল কামিল মাদ্রাসায় জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা অনুসরণ না করেই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হিসেবে ২০২০ সালের ২৫ জুলাই শাহাব উদ্দিনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরে এ ঘটনায় অনিয়মের অভিযোগ তুলে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন অভিভাবক লিলু মিয়া।

অভিযোগে বলা হয়, মো. সাহাব উদ্দিনকে নিয়োগ দেওয়ার উদ্দেশ্যে মাদ্রাসা কামিল হওয়া সত্তে¡ও ফাজিল স্তর দেখিয়ে কর্তৃপক্ষ অনিয়ম করে অধ্যক্ষ নিয়োগ দিয়েছে। এই অভিযোগে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সরেজমিন তদন্ত করে নিয়ম বহির্ভূতভাবে অধ্যক্ষ নিয়োগের প্রমাণও পায়।

কিন্তু তারপরও নানা ফাঁকফোকরের মাধ্যমে এখনও বহাল তবিয়তে রয়েছেন তিনি। এদিকে, শায়েস্তাগঞ্জ কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা শাহাব উদ্দিনকে মানহানীর এক মামলায় এক বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও ৫ হাজার টাকার অর্থদÐ, অনাদায়ে আরও ৩ মাসের কারাদন্ডের আদেশ দেন আদালত।

২০২২ সালের (২১ মার্চ) দুপুরে হবিগঞ্জের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত বিচার-২ এর বিচারক রাহেলা পারভিন এ রায় দেন। সিআর ৪১৪/১৭ মামলায় অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় এক বছরের দন্ডপ্রাপ্ত হন তিনি। অপরদিকে, গত ২৮ আগস্ট বিতর্কিত অধ্যক্ষ মোঃ শাহাব উদ্দিনের নিয়োগ বাতিল চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে স্মারক লিপি প্রদান করেছেন বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা। এ সময় বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থী এবং স্থানীয় অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।

অভিভাবক লিলু মিয়া বলেন, শায়েস্তাগঞ্জ মডেল কামিল মাদ্রাসা একটি ঐতিহ্যবাহী মাদরাসা। এ মাদরাসায় জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে শিক্ষার্থীরা এসে পড়াশুণা করে। অথচ এই মাদরাসার অধ্যক্ষ অনিয়মের মাধ্যমে নিয়োগ পেয়েছে। যা নিয়ে সর্বত্র আলোচনা সমালোচনার শেষ নেই। তিনি বলেন, আমি ইতোপুর্বে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তার প্রতিকার পাইনি। সাবেক শিক্ষার্থী কাজী দুলাল বলেন, শিক্ষাঙ্গণে যদি এমন অনিয়ম হয় তা হলে তাদের কাছ থেকে শিক্ষার্থীরা কি শিখবে।

তাদের বিরুদ্ধে দ্রæত আইনগত ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। রাশেদ আহমেদ বলেন, একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামী কিভাবে দীর্ঘদিন এমনভাবে স্বপদে বহাল থাকে তা আমাদের বোধগম্য নয়। এ বিষয়ে জানতে বিতর্কিত অধ্যক্ষ শাহাব উদ্দিনকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, আমি এখনও মাদরাসার অধ্যক্ষ হিসেবে আছি।

আমার বিরুদ্ধে সব ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এসময় মানহানির মামলায় সাজার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ফোন কেটে দেন। শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা আক্তার মিতা জানান, বিষয়টির সত্যতা যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০২:১২:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
৩৫ বার পড়া হয়েছে

বিতর্কিত নিয়োগ ও সাজাপ্রাপ্ত আসামী হয়েও বহাল তবিয়তে শায়েস্তাগঞ্জ কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ

আপডেট সময় ০২:১২:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

একদিকে বিতর্কিত নিয়োগ অন্যদিকে সাজাপ্রাপ্ত আসামী। তবুও দীর্ঘদিন যাবত বহাল তবিয়তে রয়েছেন হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ শাহাব উদ্দিন। যা নিয়ে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে বইছে নানান আলোচনা ও সমাচেলানা।

স্থানীয়রা বলছেন, দীর্ঘদিন যাবত স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় থেকে বিতর্কিত নিয়োগ ও নানা অনিয়ম করার পরও মাদরাসায় দিব্যি অধ্যক্ষ পদে বহাল রয়েছেন তিনি। জানা গেছে, শায়েস্তাগঞ্জ মডেল কামিল মাদ্রাসায় জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা অনুসরণ না করেই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হিসেবে ২০২০ সালের ২৫ জুলাই শাহাব উদ্দিনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরে এ ঘটনায় অনিয়মের অভিযোগ তুলে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন অভিভাবক লিলু মিয়া।

অভিযোগে বলা হয়, মো. সাহাব উদ্দিনকে নিয়োগ দেওয়ার উদ্দেশ্যে মাদ্রাসা কামিল হওয়া সত্তে¡ও ফাজিল স্তর দেখিয়ে কর্তৃপক্ষ অনিয়ম করে অধ্যক্ষ নিয়োগ দিয়েছে। এই অভিযোগে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সরেজমিন তদন্ত করে নিয়ম বহির্ভূতভাবে অধ্যক্ষ নিয়োগের প্রমাণও পায়।

কিন্তু তারপরও নানা ফাঁকফোকরের মাধ্যমে এখনও বহাল তবিয়তে রয়েছেন তিনি। এদিকে, শায়েস্তাগঞ্জ কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা শাহাব উদ্দিনকে মানহানীর এক মামলায় এক বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও ৫ হাজার টাকার অর্থদÐ, অনাদায়ে আরও ৩ মাসের কারাদন্ডের আদেশ দেন আদালত।

২০২২ সালের (২১ মার্চ) দুপুরে হবিগঞ্জের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত বিচার-২ এর বিচারক রাহেলা পারভিন এ রায় দেন। সিআর ৪১৪/১৭ মামলায় অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় এক বছরের দন্ডপ্রাপ্ত হন তিনি। অপরদিকে, গত ২৮ আগস্ট বিতর্কিত অধ্যক্ষ মোঃ শাহাব উদ্দিনের নিয়োগ বাতিল চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে স্মারক লিপি প্রদান করেছেন বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা। এ সময় বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থী এবং স্থানীয় অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।

অভিভাবক লিলু মিয়া বলেন, শায়েস্তাগঞ্জ মডেল কামিল মাদ্রাসা একটি ঐতিহ্যবাহী মাদরাসা। এ মাদরাসায় জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে শিক্ষার্থীরা এসে পড়াশুণা করে। অথচ এই মাদরাসার অধ্যক্ষ অনিয়মের মাধ্যমে নিয়োগ পেয়েছে। যা নিয়ে সর্বত্র আলোচনা সমালোচনার শেষ নেই। তিনি বলেন, আমি ইতোপুর্বে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তার প্রতিকার পাইনি। সাবেক শিক্ষার্থী কাজী দুলাল বলেন, শিক্ষাঙ্গণে যদি এমন অনিয়ম হয় তা হলে তাদের কাছ থেকে শিক্ষার্থীরা কি শিখবে।

তাদের বিরুদ্ধে দ্রæত আইনগত ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। রাশেদ আহমেদ বলেন, একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামী কিভাবে দীর্ঘদিন এমনভাবে স্বপদে বহাল থাকে তা আমাদের বোধগম্য নয়। এ বিষয়ে জানতে বিতর্কিত অধ্যক্ষ শাহাব উদ্দিনকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, আমি এখনও মাদরাসার অধ্যক্ষ হিসেবে আছি।

আমার বিরুদ্ধে সব ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এসময় মানহানির মামলায় সাজার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ফোন কেটে দেন। শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা আক্তার মিতা জানান, বিষয়টির সত্যতা যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।