ঢাকা ১১:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আবারও করোনার ভয়ঙ্কর রূপ, সপ্তাহে বিশ্বজুড়ে মৃত্যু ১৭০০ মানুষের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন কোটি কোটি মানুষ (ফাইল ছবি)

বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের ভয়াবহতার অবসান ঘটেছে আগেই। সারা বিশ্বেই এই মহামারি সংক্রান্ত নানা বিধিনিষেধও তুলে নেওয়া হয়েছে। হাত ধোয়া, মাস্ক পরা বা সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার মতো স্বাভাবিক সতর্কতামূলক পদক্ষেপও এখন আর অনেকেই মানেন না।

আর এর মধ্যেই আবারও ভয়ঙ্কর রূপ নিচ্ছে করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯। সংক্রামক এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সপ্তাহে বিশ্বজুড়ে মৃত্যু হচ্ছে প্রায় ১৭০০ মানুষের।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এই তথ্য সামনে এনেছে বলে শুক্রবার (১২ জুলাই) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ এখনও সারা বিশ্বে সপ্তাহে প্রায় ১৭০০ জনের প্রাণ কাড়ছে বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বৃহস্পতিবার জানিয়েছে। আর এই কারণে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে টিকা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

এছাড়া ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন গ্রহণের হার হ্রাসের বিষয়েও সতর্কবার্তা দিয়েছেন।

জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থার এই প্রধান এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ক্রমাগত মৃত্যুর সংখ্যা সামনে আসা সত্ত্বেও ‘তথ্যগুলোতে দেখা যাচ্ছে, স্বাস্থ্যকর্মী এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তিদের মধ্যে ভ্যাকসিনের কভারেজ হ্রাস পেয়েছে, সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে তারাও রয়েছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকা লোকেদের তাদের শেষ ডোজ নেওয়ার ১২ মাসের মধ্যে আবারও কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন নিতে ডব্লিউএইচও সুপারিশ করছে।’

একইসঙ্গে ভাইরাস নজরদারি এবং সিকোয়েন্সিং বজায় রাখতে ও সাশ্রয়ী মূল্যে এবং নির্ভরযোগ্য পরীক্ষা, চিকিৎসা এবং সবার জন্য ভ্যাকসিন নিশ্চিত করার জন্য বিশ্বের সরকারগুলোর প্রতি আহ্বানও জানিয়েছে ডব্লিউএইচও।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত হুনান সি-ফুড মার্কেটে প্রথম করোনা সংক্রমণের ঘটনা ঘটে। এরপর ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া করোনা মহামারিতে মারা গেছেন ৭০ লাখেরও বেশি মানুষ।

যদিও এই মহামারিতে প্রাণ হারানো মানুষের প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে মনে করা হয়। মানুষের প্রাণ কাড়ার পাশাপাশি কোভিড-১৯ মহামারি বিশ্বের অনেকে দেশের অর্থনীতিকেও ছিন্নভিন্ন করেছে এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে পঙ্গু করে দিয়েছে।

অবশ্য চীনের উহানে ভাইরাসটি প্রথম শনাক্ত হওয়ার তিন বছরেরও বেশি সময় পরে ২০২৩ সালের মে মাসে করোনাভাইরাস মহামারি আর ‘বৈশ্বিক স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা’ নয় বলে ঘোষণা করেছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস।

পরে একই মাসে ডব্লিউএইচও প্রধান অবশ্য বলেছিলেন, ‘বিশ্বব্যাপী করোনা সম্পর্কিত স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থার সমাপ্তি ঘোষণা করা হলেও তা বিশ্বব্যাপী এই ভাইরাসের স্বাস্থ্য হুমকির সমাপ্তি নয়। বিশ্বে করোনাভাইরাসের আরেকটি ভ্যারিয়েন্ট উদ্ভূত হওয়ার হুমকি এখনও রয়ে গেছে যা নতুন করে এই রোগ ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়াতে পারে। এছাড়া নতুন করে আরও রোগজীবাণু উদ্ভূত হওয়ার মারাত্মক হুমকি এখনও রয়ে গেছে।’

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৭:৩৪:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ জুলাই ২০২৪
৪৩ বার পড়া হয়েছে

আবারও করোনার ভয়ঙ্কর রূপ, সপ্তাহে বিশ্বজুড়ে মৃত্যু ১৭০০ মানুষের

আপডেট সময় ০৭:৩৪:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ জুলাই ২০২৪

২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন কোটি কোটি মানুষ (ফাইল ছবি)

বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের ভয়াবহতার অবসান ঘটেছে আগেই। সারা বিশ্বেই এই মহামারি সংক্রান্ত নানা বিধিনিষেধও তুলে নেওয়া হয়েছে। হাত ধোয়া, মাস্ক পরা বা সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার মতো স্বাভাবিক সতর্কতামূলক পদক্ষেপও এখন আর অনেকেই মানেন না।

আর এর মধ্যেই আবারও ভয়ঙ্কর রূপ নিচ্ছে করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯। সংক্রামক এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সপ্তাহে বিশ্বজুড়ে মৃত্যু হচ্ছে প্রায় ১৭০০ মানুষের।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এই তথ্য সামনে এনেছে বলে শুক্রবার (১২ জুলাই) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ এখনও সারা বিশ্বে সপ্তাহে প্রায় ১৭০০ জনের প্রাণ কাড়ছে বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বৃহস্পতিবার জানিয়েছে। আর এই কারণে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে টিকা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

এছাড়া ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন গ্রহণের হার হ্রাসের বিষয়েও সতর্কবার্তা দিয়েছেন।

জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থার এই প্রধান এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ক্রমাগত মৃত্যুর সংখ্যা সামনে আসা সত্ত্বেও ‘তথ্যগুলোতে দেখা যাচ্ছে, স্বাস্থ্যকর্মী এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তিদের মধ্যে ভ্যাকসিনের কভারেজ হ্রাস পেয়েছে, সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে তারাও রয়েছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকা লোকেদের তাদের শেষ ডোজ নেওয়ার ১২ মাসের মধ্যে আবারও কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন নিতে ডব্লিউএইচও সুপারিশ করছে।’

একইসঙ্গে ভাইরাস নজরদারি এবং সিকোয়েন্সিং বজায় রাখতে ও সাশ্রয়ী মূল্যে এবং নির্ভরযোগ্য পরীক্ষা, চিকিৎসা এবং সবার জন্য ভ্যাকসিন নিশ্চিত করার জন্য বিশ্বের সরকারগুলোর প্রতি আহ্বানও জানিয়েছে ডব্লিউএইচও।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত হুনান সি-ফুড মার্কেটে প্রথম করোনা সংক্রমণের ঘটনা ঘটে। এরপর ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া করোনা মহামারিতে মারা গেছেন ৭০ লাখেরও বেশি মানুষ।

যদিও এই মহামারিতে প্রাণ হারানো মানুষের প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে মনে করা হয়। মানুষের প্রাণ কাড়ার পাশাপাশি কোভিড-১৯ মহামারি বিশ্বের অনেকে দেশের অর্থনীতিকেও ছিন্নভিন্ন করেছে এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে পঙ্গু করে দিয়েছে।

অবশ্য চীনের উহানে ভাইরাসটি প্রথম শনাক্ত হওয়ার তিন বছরেরও বেশি সময় পরে ২০২৩ সালের মে মাসে করোনাভাইরাস মহামারি আর ‘বৈশ্বিক স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা’ নয় বলে ঘোষণা করেছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস।

পরে একই মাসে ডব্লিউএইচও প্রধান অবশ্য বলেছিলেন, ‘বিশ্বব্যাপী করোনা সম্পর্কিত স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থার সমাপ্তি ঘোষণা করা হলেও তা বিশ্বব্যাপী এই ভাইরাসের স্বাস্থ্য হুমকির সমাপ্তি নয়। বিশ্বে করোনাভাইরাসের আরেকটি ভ্যারিয়েন্ট উদ্ভূত হওয়ার হুমকি এখনও রয়ে গেছে যা নতুন করে এই রোগ ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়াতে পারে। এছাড়া নতুন করে আরও রোগজীবাণু উদ্ভূত হওয়ার মারাত্মক হুমকি এখনও রয়ে গেছে।’