সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৫:৪১ পূর্বাহ্ন
লাইফস্টাইল ডেস্ক ,আবেগের অনুভূতি রয়েছে বলেই আমাদের মাঝে রাগ,অভিমান, ভালোবাসা, ঘৃণা, উদ্বেগ, আনন্দ, ভয়, দুঃখ রয়েছে। তবে অতিরিক্ত আবেগ অনেক সময় আমাদের ক্ষতিরও কারণ হতে পারে। আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে, অনেক মূল্যবান জিনিস হারাতে হয়। আবার আবেগহীনতাও কখনো কখনো ক্ষতির কারণ হয়।
আবেগ-অনুভূতি নিয়েই তো আমাদের জীবন। তবে আবেগের বশে ভুল করে পস্তানোর চেয়ে, অতিরিক্ত আবেগ একটু দায়িত্বশীলভাবে সামলে নেওয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। তাই জানা প্রয়োজন আবেগ নিয়ন্ত্রণের কৌশল।
১. জীবনে চড়াই-উতরাই তো থাকবেই। সবকিছু কখনোই পুরো নিয়ন্ত্রণে থাকবে না। পরিস্থিতি যেমনই হোক, সামনে এগিয়ে যেতে হলে সেটা সামলে নিতে হবে। রেগে গিয়ে চিৎকার, ভাঙচুর কিংবা কাউকে শারীরিক বা মানসিকভাবে আঘাত করার মতো বিষয়গুলো কখনো ভালো ফল বয়ে আনে না।
আবেগ নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে সচেতন হতে হবে। কোন কোন পরিস্থিতিতে সে নিজেকে সামলে রাখতে পারছে না, সেগুলো বুঝতে হবে। আর সে নিজের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললে কোন কোন ধরনের আবেগের প্রকাশ তার মধ্যে ঘটছে, সেগুলো খেয়াল করতে হবে, যেমন : রাগ, ক্ষোভ, হতাশা, অস্থিরতা ইত্যাদি। নেতিবাচক চিন্তাগুলো চিহ্নিত করতে পারলে আবেগ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।
২. অনেকে কিছু কিছু পরিস্থিতিকে খুব বিপৎসংকুল বা ভয়ংকর মনে করে। এই প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। যেকোনো একটি পরিস্থিতিকে অতিরঞ্জিত না ভেবে, এর ইতিবাচক দিক ভাবা যায় কি না, সেটা খেয়াল করতে হবে। তাহলে আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে।
৩. নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে ধ্যান, শিথিলায়ন এগুলো করা যেতে পারে। গবেষণায় বলা হয়, দিনে অন্তত ২০ মিনিট ধ্যান বা মেডিটেশন আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
৪. যে বিষয়গুলো আপনাকে আবেগপ্রবণ করে তোলে, সেই বিষয়গুলো থেকে মনোযোগ সরিয়ে নিতে হবে। বেশি মনোযোগ দিলে বা ভাবলে এগুলো বেশি গ্রাস করে। তাই অন্য কিছুর প্রতি মনোযোগী হোন এ সময়। যদি কারো কোনো বিষয় খারাপ লাগে, তবে সেটি ওই ব্যক্তিকে বুঝিয়ে বলুন, মুখোমুখি হয়ে সরাসরি কথা বলুন।
তবে একবার-দুবার বললেই যে লোকটি সেটি করতে পারবে বা করে ফেলবে, তা নয়। তাকে বারবার বোঝাতে হবে। সে কেন বুঝল না, এটা নিয়ে হীনমন্যতা বা মন খারাপ করা যাবে না। এতে আবেগ বেড়ে যাবে।
৫. কোনো একটি পরিস্থিতিকে আবেগ দিয়ে বিবেচনা না করে যুক্তি দিয়ে বিবেচনা করুন। অনিশ্চয়তা জীবনের এক সৌন্দর্য। একে গ্রহণ করুন। মানসিক চাপ সামলাতে পারবেন সহজে। নতুন যেকোনো ঘটনার সঙ্গে মানিয়ে নিতে নিজের সৃজনশীলতাকে কাজে লাগান।
৬. সবকিছু নিজের গায়ে টেনে না নিয়ে কিছু কিছু বিষয় উপেক্ষা করুন। নেতিবাচক চিন্তাগুলো কমিয়ে বিষয়গুলোকে ইতিবাচকভাবে চিন্তা করার চেষ্টা করতে হবে।
৭. সমালোচনা গঠনমূলকভাবে গ্রহণের ক্ষমতা থাকতে হবে। কেউ সমালোচনা করলেই নিজেকে হীনমন্য করা যাবে না। আত্মবিশ্বাস রাখতে হবে। নিজের শক্তি ও দুর্বলতা সম্বন্ধে জানতে হবে। অন্যকে অনুরোধ করতে পারা, না করতে পারা ইত্যাদি বিষয় শিখতে হবে।
৮. খুব বেশি আবেগপ্রবণ হয়ে পড়লে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করতে পারেন। একটু শিথিল হয়ে বসে লম্বা দম নিন। কিছুক্ষণ দম আটকে রাখুন। এরপর ধীরে ধীরে মুখ দিয়ে দম ছাড়ুন। এভাবে ৭ থেকে ১০ বার করুন। রিল্যাক্স লাগবে।