ঢাকা ০৩:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যশোরে চৌগাছায় মওসুমের শেষ সময়ে কাঁঠালের দাম পেয়ে খুশি চাষিরা

যশোর প্রতিনিধিঃ

মওসুমের প্রায় শেষের দিকে কাঁঠালের ভালো দাম পেয়ে খুশি যশোরের চৌগাছার চাষীরা। মওসুমের শেষ দিক হলেও হাট -বাজারে এখনও ব্যাপকহারে আসছে জাতীয় ফল কাঁঠাল। মৌসুমের অন্যতম এই ফলের কদর যেন হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে। জেলার বাইরের ব্যবসায়ীদের ব্যাপক আগমন ঘটছে শেষের বড় বড় কাঁঠাল সংগ্রহের জন্য। আশানুরূপ দাম পেয়ে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ব্যবসায় দেখা দিয়েছে চাঙ্গা ভাব । আম, জাম, কাঁঠাল,পেঁয়ারা, ড্রাগনসহ সকল ধরনের ফলে সংগ্রহ সময় প্রায় শেষের দিকে যেকারণে গ্রীস্মকালিন সকল ফলের দাম এখন উদ্ধমুখি।

বর্তমান সময়ে ব্যাপক ফল উৎপাদনকারী হিসেবে যশোরের চৌগাছা অন্যতম। চৌগাছার হাট- বাজারগুলোতে এখন চলছে রসালো ও মাজাদার ফল কাঁঠালের জমজমাট কারবার । উপজেলার বিভিন্ন ছোট ছোট হাটে বেশ আগেভাগেই দেখা মিলছে কাঁঠালের। স্থানীয়রা ওই সকল হাট থেকে কাঁঠাল কিনে তার স্বাদ বেশ আগেই নিয়েছেন। চৌগাছার প্রধান কাঁঠালের হাটে এখনও ব্যাপকভাবে সমরোহ ঘটছে কাঁঠালের। শেষ মওসুমে দাম ভালো থাকায় খুব খুশি কাঁঠাল চাষিসহ মৌসুমী ব্যবসায়ীরা।

সোমবার চৌগাছার প্রধান কাঁঠালের হাটে (কংশারীপুর) দেখা যায়, গত কয়েক বছরের তুলনায় সরবরাহ বেশ ভালো। যেসব চাষি ও মৌসুমী ব্যবসায়ীরা গ্রাম হতে কাঁঠাল সংগ্রহ করে হাটে এসেছেন তারা বাইরের ব্যাপারীর সাথে দরদাম নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। অনেকে ভালো দামে কাঁঠাল বিক্রি করে হাসিমুখে বাড়ি ফিরছেন। প্রধান পাইকারি বাজারে কাঁঠালের ভালো দাম থাকায় বাজারের বিভিন্ন খুচরো দোকানে আরো চড়া দামে কাঁঠাল বিক্রি হতে দেখা গেছে।

প্রধান পাইকারি বাজারে কাঁঠাল বিক্রি করতে আসা উপজেলার চাঁদপাড়া গ্রামের কাঁঠাল চাষি কামরুজ্জামান বলেন, চলতি বছরে কাঁঠালের চাহিদা বেশ ভালো। গত কয়েক হাট ঘুরে ঘুরে সোমবার হাটে কাঁঠাল নিয়ে এসেছি। কাংখিত দামে কাঁঠাল বিক্রি করতে পেরেছি । তিনি আরো বলেন শেষ সময়ে ক্রেতার সংখ্যা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে । পাশের মহেশপুর উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের চাষি রেজাউল ইসলাম বলেন, শেষ মুহূর্তে কাঁঠালের দাম ভালো, প্রথমদিকে দাম কিছুটা কম ছিল । তিনি আরো বলেন, সরকারি ভাবে কাঁঠালের প্রক্রিয়াজাতকরণ করা দরকার। প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় ফল বা ফসল উৎপাদনে আমাদের মত প্রান্তিক চাষিদের ব্যাপক ক্ষতি হয়। যখন ফল বিক্রির উপযোগী হয় তখন আকাশসম স্বপ্ন দেখতে শুরু করে চাষিরা। কিন্তু বাজারে আনার পর যে দামে বিক্রি হয় তাতে সব স্বপ্ন মলিন হয়ে যায়। তারপরও বর্তমানে কাঁঠালের দামে আমরা খুশি

মৌসুমী ব্যবসায়ী আড়পাড়া গ্রামের মো. মুন্না, জামাল হোসেন, কান্দি গ্রামের সাইফুল ইসলাম, অসিম কুমার বলেন, প্রতি বছর আমরা উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম হতে কাঁঠাল কিনে বাজারে বিক্রি করি। এ বছরও বেশ আগেই ব্যবসা শুরু করেছি তবে বর্তমানে কাঁঠালের দাম আশানুরূপ । গ্রামে কাঁঠাল চাষিরাও দাম পেয়ে বেশ খুশি বলে যোগ করেন ব্যবসায়ীরা।

কয়েকজন ব্যবসায়ীরা জানান,বাজার ব্যবস্থাপনা ভালো হলে কাঁঠাল চাষীরা আরো ভালো দাম পেতো কিন্তু মধ্য স্বত্বভোগীরা চাষীদের ভাগের টাকা লুটে নিয়ে যাচ্ছে। বাজারের একটি সুত্রে জানাযায়, প্রতি বছর যশোরসহ সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, বরিশাল, ঝালকাটি, পিরোজপুর ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা হতে ব্যাপারিরা এসে শেষ সময়ের কাঁঠাল সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

বাগেরহাট জেলা হতে কাঁঠাল কিনতে আসা ব্যবসায়ী ইউছুফ সর্দার ও হাবিবুর রহমান বলেন, কিছু দিন পূর্বে কাঁঠালের চাহিদা কম ছিল বর্তমানে কাঁঠালের চাহিদা বেশ বৃদ্ধি পেয়েছ। ব্যবসায়ীরা আরও বলেন, যদি একটানা বৃষ্টি হতো তাহলে কাঁঠালের চাহিদা আরো বেড়ে যেত।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৫:২০:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ জুলাই ২০২৪
২৭ বার পড়া হয়েছে

যশোরে চৌগাছায় মওসুমের শেষ সময়ে কাঁঠালের দাম পেয়ে খুশি চাষিরা

আপডেট সময় ০৫:২০:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ জুলাই ২০২৪

মওসুমের প্রায় শেষের দিকে কাঁঠালের ভালো দাম পেয়ে খুশি যশোরের চৌগাছার চাষীরা। মওসুমের শেষ দিক হলেও হাট -বাজারে এখনও ব্যাপকহারে আসছে জাতীয় ফল কাঁঠাল। মৌসুমের অন্যতম এই ফলের কদর যেন হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে। জেলার বাইরের ব্যবসায়ীদের ব্যাপক আগমন ঘটছে শেষের বড় বড় কাঁঠাল সংগ্রহের জন্য। আশানুরূপ দাম পেয়ে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ব্যবসায় দেখা দিয়েছে চাঙ্গা ভাব । আম, জাম, কাঁঠাল,পেঁয়ারা, ড্রাগনসহ সকল ধরনের ফলে সংগ্রহ সময় প্রায় শেষের দিকে যেকারণে গ্রীস্মকালিন সকল ফলের দাম এখন উদ্ধমুখি।

বর্তমান সময়ে ব্যাপক ফল উৎপাদনকারী হিসেবে যশোরের চৌগাছা অন্যতম। চৌগাছার হাট- বাজারগুলোতে এখন চলছে রসালো ও মাজাদার ফল কাঁঠালের জমজমাট কারবার । উপজেলার বিভিন্ন ছোট ছোট হাটে বেশ আগেভাগেই দেখা মিলছে কাঁঠালের। স্থানীয়রা ওই সকল হাট থেকে কাঁঠাল কিনে তার স্বাদ বেশ আগেই নিয়েছেন। চৌগাছার প্রধান কাঁঠালের হাটে এখনও ব্যাপকভাবে সমরোহ ঘটছে কাঁঠালের। শেষ মওসুমে দাম ভালো থাকায় খুব খুশি কাঁঠাল চাষিসহ মৌসুমী ব্যবসায়ীরা।

সোমবার চৌগাছার প্রধান কাঁঠালের হাটে (কংশারীপুর) দেখা যায়, গত কয়েক বছরের তুলনায় সরবরাহ বেশ ভালো। যেসব চাষি ও মৌসুমী ব্যবসায়ীরা গ্রাম হতে কাঁঠাল সংগ্রহ করে হাটে এসেছেন তারা বাইরের ব্যাপারীর সাথে দরদাম নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। অনেকে ভালো দামে কাঁঠাল বিক্রি করে হাসিমুখে বাড়ি ফিরছেন। প্রধান পাইকারি বাজারে কাঁঠালের ভালো দাম থাকায় বাজারের বিভিন্ন খুচরো দোকানে আরো চড়া দামে কাঁঠাল বিক্রি হতে দেখা গেছে।

প্রধান পাইকারি বাজারে কাঁঠাল বিক্রি করতে আসা উপজেলার চাঁদপাড়া গ্রামের কাঁঠাল চাষি কামরুজ্জামান বলেন, চলতি বছরে কাঁঠালের চাহিদা বেশ ভালো। গত কয়েক হাট ঘুরে ঘুরে সোমবার হাটে কাঁঠাল নিয়ে এসেছি। কাংখিত দামে কাঁঠাল বিক্রি করতে পেরেছি । তিনি আরো বলেন শেষ সময়ে ক্রেতার সংখ্যা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে । পাশের মহেশপুর উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের চাষি রেজাউল ইসলাম বলেন, শেষ মুহূর্তে কাঁঠালের দাম ভালো, প্রথমদিকে দাম কিছুটা কম ছিল । তিনি আরো বলেন, সরকারি ভাবে কাঁঠালের প্রক্রিয়াজাতকরণ করা দরকার। প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় ফল বা ফসল উৎপাদনে আমাদের মত প্রান্তিক চাষিদের ব্যাপক ক্ষতি হয়। যখন ফল বিক্রির উপযোগী হয় তখন আকাশসম স্বপ্ন দেখতে শুরু করে চাষিরা। কিন্তু বাজারে আনার পর যে দামে বিক্রি হয় তাতে সব স্বপ্ন মলিন হয়ে যায়। তারপরও বর্তমানে কাঁঠালের দামে আমরা খুশি

মৌসুমী ব্যবসায়ী আড়পাড়া গ্রামের মো. মুন্না, জামাল হোসেন, কান্দি গ্রামের সাইফুল ইসলাম, অসিম কুমার বলেন, প্রতি বছর আমরা উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম হতে কাঁঠাল কিনে বাজারে বিক্রি করি। এ বছরও বেশ আগেই ব্যবসা শুরু করেছি তবে বর্তমানে কাঁঠালের দাম আশানুরূপ । গ্রামে কাঁঠাল চাষিরাও দাম পেয়ে বেশ খুশি বলে যোগ করেন ব্যবসায়ীরা।

কয়েকজন ব্যবসায়ীরা জানান,বাজার ব্যবস্থাপনা ভালো হলে কাঁঠাল চাষীরা আরো ভালো দাম পেতো কিন্তু মধ্য স্বত্বভোগীরা চাষীদের ভাগের টাকা লুটে নিয়ে যাচ্ছে। বাজারের একটি সুত্রে জানাযায়, প্রতি বছর যশোরসহ সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, বরিশাল, ঝালকাটি, পিরোজপুর ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা হতে ব্যাপারিরা এসে শেষ সময়ের কাঁঠাল সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

বাগেরহাট জেলা হতে কাঁঠাল কিনতে আসা ব্যবসায়ী ইউছুফ সর্দার ও হাবিবুর রহমান বলেন, কিছু দিন পূর্বে কাঁঠালের চাহিদা কম ছিল বর্তমানে কাঁঠালের চাহিদা বেশ বৃদ্ধি পেয়েছ। ব্যবসায়ীরা আরও বলেন, যদি একটানা বৃষ্টি হতো তাহলে কাঁঠালের চাহিদা আরো বেড়ে যেত।