ঢাকা ১০:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

মা-ছেলের মুখে জুলাই নৃশংসতার বর্ণনা…

ডেস্ক রিপোর্ট

২৮ জুলাই, রাত আনুমানিক আড়াইটা। মাত্রই তাহাজ্জুদ নামাজ শেষ করেছেন শামীমা বারকাত লাকি। কিন্তু ছেলের চিন্তায় অস্থির মা কিছুতেই ঘুমোতে পারছিলেন না। বড় ছেলে ওমর শরীফ মোহাম্মদ ইমরান, যাকে সবাই সানিয়াত নামে চিনে, তখনো পুলিশের হেফাজতে। ছেলের চিন্তায় মন ছটফট করছিল তার।
হঠাৎ করেই ফোনটা বেজে উঠল—স্ক্রিনে ভেসে উঠল একটি চার অঙ্কের নাম্বার। কিছুক্ষণ দ্বিধা নিয়ে, শেষমেশ ফোনটা ধরলেন।

‘হ্যালো, কে বলছেন?’, কোনো উত্তর নেই। শুধু দূর থেকে ভেসে আসছিল যন্ত্রণার শব্দ। এক মুহূর্তের জন্য যেন তার হৃৎস্পন্দন থেমে গেল। ফোনের ওপাশ থেকে শুনতে পারছিলেন ছেলের যন্ত্রণাক্লিষ্ট, কান্না ভেজা কণ্ঠ। সানিয়াত চিৎকার করে বলছিল, ‘ও মা…ও মা …!’; নির্মমভাবে পেটানো হচ্ছিল তাকে।
ওই সময়ে ছেলের জন্য কিছু করতে না পারার অসহায়ত্ব যেন তার বুকে পাথরের মতো চেপে বসে। ‘ওটা সানিয়াত ছিল’, কান্না ভাঙা কণ্ঠে বললেন তিনি।

“ওরা আমাকে জোর করে শুনিয়েছে, কীভাবে আমার ছেলেকে নির্যাতন করা হচ্ছে। একজন মা কীভাবে এটা সহ্য করতে পারে? আমার ছেলে আগে কখনো জেলেও যায়নি, পেটানোর তো প্রশ্নই আসে না।”

লাকি যেন সেই মুহূর্তে সম্পূর্ণ অসহায় হয়ে গেলেন। ফোনে ছেলের নাম ধরে চিৎকার করে মিনতি করলেন, যেন তাকে আর না মারা হয়। কিন্তু তার অনুরোধের কোনো উত্তর এল না, কেবল নীরবতা। লাইন কেটে গেল, ছেলের যন্ত্রণার প্রতিধ্বনি নিয়ে তিনি রয়ে গেলেন একা অন্ধকারে। পুরো রাত কাঁদলেন, শোক আর ক্রোধে ভরে উঠল তার মন।

সেই দুঃসহ মুহূর্তের কথা স্মরণ করে লাকি বললেন, ‘ওরা সেদিন আমাকে শুনিয়ে আমার ছেলেকে আরও বেশি নির্যাতন করছিল, কারণ আমাদের একটা ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল।’

ভিডিওতে দেখা যায়, হাতকড়া পরা সানিয়াত যখন আদালত থেকে বের হচ্ছিলেন, তার মা পেছন থেকে ছুটে যান তার দিকে। মাকে দেখে সানিয়াত হাতকড়া পরা হাত দিয়ে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করেন, আর মা বারবার তাকে আশ্বস্ত করেন, “ভয় পাস না, কিছু হবে না।”

ভিডিওটি অনলাইনে ভাইরাল হওয়ার পর পুরো পুলিশ বিভাগ সানিয়াতের ওপর আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।

তার মায়ের সাথে যখন আমরা কথা বলছিলাম, তখন পাশেই বসে ছিলেন সানিয়াত, তবে তার মন অন্য কোথাও । তিনি বিষণ্ন মনে কী যেন ভাবছিলেন। হয়ত শরীরে আঘাতের ক্ষতগুলো তাকে বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছিল, কীভাবে উলটো করে ঝুলিয়ে তাকে নির্মমভাবে মারা হয়েছিল। শরীরের প্রতিটি অংশের ব্যথা যেন সেই নির্যাতনের স্মৃতিই মনে করিয়ে দিচ্ছিল।

২৪ জুলাই, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের এমবিএ গ্র্যাজুয়েট সানিয়াতকে ডিবি পুলিশ আটক করে। অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আগ পর্যন্ত পুলিশের হেফাজতেই বন্দি ছিলেন তিনি।

জেলের একেকটা রাত সানিয়াতের জন্য ছিল অন্ততকাল। প্রতিটি মুহূর্ত যেন সেই সময়ের সাথে যুদ্ধ। শরীরের কিছু ক্ষত সেরে উঠলেও, ওই কয়দিনের ভয়ংকর স্মৃতি মনে পড়লে এখনও তার শরীর শিউরে ওঠে।

এক টুকরো প্যাস্ট্রি

সেদিন মধ্যরাতের কথা। সানিয়াতের মাকে নিয়ে তার বাবা তখন হাসপাতালে। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বাসাটিতে শুধু সানিয়াত আর তার ছোট ভাই। তাদের বাবা বারকত উল্লাহ বুলু, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) একজন প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ।

সামিয়াতের ছোট ভাই সামির মোহাম্মদ ইরফান, ডাউন সিন্ড্রোমে আক্রান্ত। হুট করে রাতের বেলা পেস্ট্রি খাওয়ার আবদার করে বসে।

“ওর মতো মানুষদের মাঝে মাঝে এমন কিছু চাওয়া থাকে, যা পূরণ না করলে তারা খুবই অস্থির হয়ে ওঠে,” বললেন সানিয়াত। ভাইকে শান্ত করতে তিনি রাত একটার দিকে পেস্ট্রি কিনতে বের হন। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে ‘উডেন স্পুন’ নামক একটি খোলা দোকান পেলেন তিনি।

কেক নিয়ে দোকান থেকে বের হতেই, ডিবি’র জ্যাকেট পরা একদল অফিসার তাকে ঘিরে ধরল। পাশেই বেশ কয়েকটি গাড়ি এবং একটি বড় হাইএস ভ্যান দরজা খুলে দাঁড়িয়ে ছিল। দুটি স্বয়ংক্রিয় রাইফেল তাক করা তার দিকে।

“তোমার নাম কী?”, জিজ্ঞেস করলেন একজন অফিসার।

“ওমর শরীফ মোহাম্মদ ইমরান।”

“আরেকটি নাম কী?”, আবার জানতে চাইলেন তিনি।

উত্তর এলো, ‘সানিয়াত’।

তখনই একজন অফিসার তার ঘাড়ে জোরে আঘাত দিয়ে চিৎকার করে বলল, “স্যার, আমরা পেয়ে গেছি!”। গাড়িতে ওঠানো হলো তাকে।

জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হলো। তারা জানতে চাইলেন কেন তিনি (সানিয়াত) সেখানে ছিলেন, কী করছিলেন এবং এত রাতে পেস্ট্রি কেন কিনেছেন। তারা তার বাবা-মায়ের ব্যাপারেও প্রশ্ন করলেন, বিশেষ করে তার বাবার সম্পর্কে, যিনি কিনা একজন রাজনীতিবিদ। সানিয়াত বললেন, তার বাবা-মা দুজনেই হাসপাতালে।

সত্যতা প্রমাণ করতে, তিনি তাদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে বললেন। তবে তখনও তার চিন্তা ছিল তার ছোট ভাইকে নিয়ে, কারণ সেখানে তার দেখভালের কেউ নেই।

হাসপাতালে পৌঁছানোর পর, তারা সানিয়াতকে গাড়িতে রেখে ভেতরে গেলেন তার বাবাকে খুঁজতে, কিন্তু তাকে পাওয়া গেল না। যেহেতু সাথে কোনো নারী পুলিশ কর্মকর্তা ছিল না, তাই নার্সরা তাদের তার মায়ের কেবিনে প্রবেশ করতে দেয়নি।

লাকি বলেন, “নার্সরা আমাকে পরে বলেছিল যে কিছু লোক সানিয়াতের বাবার জন্য জিজ্ঞাসা করছিল। আমাকে কেন জানানো হয়নি, জিজ্ঞেস করলাম তাদের। আমি খুব দুশ্চিন্তায় ছিলাম, কী হয়েছে জানার জন্য ছটফট করছিলাম।”

বিএনপির সাথে যোগসূত্র

পরের দিন ছিল কারফিউ। অসুস্থ থাকায় সামিয়াতের মা অ্যাম্বুলেন্সে করেই বেরিয়ে পড়েন ছেলের খোঁজে। কিন্তু থানা কিংবা ডিবি অফিস, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সংস্থাই তার ছেলের ব্যাপারে কোনো তথ্য দেয়নি।

২৮ জুলাই, রাত আনুমানিক আড়াইটা। মাত্রই তাহাজ্জুদ নামাজ শেষ করেছেন শামীমা বারকাত লাকি। কিন্তু ছেলের চিন্তায় অস্থির মা কিছুতেই ঘুমোতে পারছিলেন না। বড় ছেলে ওমর শরীফ মোহাম্মদ ইমরান, যাকে সবাই সানিয়াত নামে চিনে, তখনো পুলিশের হেফাজতে। ছেলের চিন্তায় মন ছটফট করছিল তার।

হঠাৎ করেই ফোনটা বেজে উঠল—স্ক্রিনে ভেসে উঠল একটি চার অঙ্কের নাম্বার। কিছুক্ষণ দ্বিধা নিয়ে, শেষমেশ ফোনটা ধরলেন।

‘হ্যালো, কে বলছেন?’, কোনো উত্তর নেই। শুধু দূর থেকে ভেসে আসছিল যন্ত্রণার শব্দ। এক মুহূর্তের জন্য যেন তার হৃৎস্পন্দন থেমে গেল। ফোনের ওপাশ থেকে শুনতে পারছিলেন ছেলের যন্ত্রণাক্লিষ্ট, কান্না ভেজা কণ্ঠ। সানিয়াত চিৎকার করে বলছিল, ‘ও মা…ও মা …!’; নির্মমভাবে পেটানো হচ্ছিল তাকে।

ওই সময়ে ছেলের জন্য কিছু করতে না পারার অসহায়ত্ব যেন তার বুকে পাথরের মতো চেপে বসে। ‘ওটা সানিয়াত ছিল’, কান্না ভাঙা কণ্ঠে বললেন তিনি।

“ওরা আমাকে জোর করে শুনিয়েছে, কীভাবে আমার ছেলেকে নির্যাতন করা হচ্ছে। একজন মা কীভাবে এটা সহ্য করতে পারে? আমার ছেলে আগে কখনো জেলেও যায়নি, পেটানোর তো প্রশ্নই আসে না।”

লাকি যেন সেই মুহূর্তে সম্পূর্ণ অসহায় হয়ে গেলেন। ফোনে ছেলের নাম ধরে চিৎকার করে মিনতি করলেন, যেন তাকে আর না মারা হয়। কিন্তু তার অনুরোধের কোনো উত্তর এল না, কেবল নীরবতা। লাইন কেটে গেল, ছেলের যন্ত্রণার প্রতিধ্বনি নিয়ে তিনি রয়ে গেলেন একা অন্ধকারে। পুরো রাত কাঁদলেন, শোক আর ক্রোধে ভরে উঠল তার মন।

সেই দুঃসহ মুহূর্তের কথা স্মরণ করে লাকি বললেন, ‘ওরা সেদিন আমাকে শুনিয়ে আমার ছেলেকে আরও বেশি নির্যাতন করছিল, কারণ আমাদের একটা ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল।’

ভিডিওতে দেখা যায়, হাতকড়া পরা সানিয়াত যখন আদালত থেকে বের হচ্ছিলেন, তার মা পেছন থেকে ছুটে যান তার দিকে। মাকে দেখে সানিয়াত হাতকড়া পরা হাত দিয়ে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করেন, আর মা বারবার তাকে আশ্বস্ত করেন, “ভয় পাস না, কিছু হবে না।”

ভিডিওটি অনলাইনে ভাইরাল হওয়ার পর পুরো পুলিশ বিভাগ সানিয়াতের ওপর আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।

তার মায়ের সাথে যখন আমরা কথা বলছিলাম, তখন পাশেই বসে ছিলেন সানিয়াত, তবে তার মন অন্য কোথাও । তিনি বিষণ্ন মনে কী যেন ভাবছিলেন। হয়ত শরীরে আঘাতের ক্ষতগুলো তাকে বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছিল, কীভাবে উলটো করে ঝুলিয়ে তাকে নির্মমভাবে মারা হয়েছিল। শরীরের প্রতিটি অংশের ব্যথা যেন সেই নির্যাতনের স্মৃতিই মনে করিয়ে দিচ্ছিল।

২৪ জুলাই, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের এমবিএ গ্র্যাজুয়েট সানিয়াতকে ডিবি পুলিশ আটক করে। অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আগ পর্যন্ত পুলিশের হেফাজতেই বন্দি ছিলেন তিনি।

জেলের একেকটা রাত সানিয়াতের জন্য ছিল অন্ততকাল। প্রতিটি মুহূর্ত যেন সেই সময়ের সাথে যুদ্ধ। শরীরের কিছু ক্ষত সেরে উঠলেও, ওই কয়দিনের ভয়ংকর স্মৃতি মনে পড়লে এখনও তার শরীর শিউরে ওঠে।

এক টুকরো প্যাস্ট্রি

সেদিন মধ্যরাতের কথা। সানিয়াতের মাকে নিয়ে তার বাবা তখন হাসপাতালে। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বাসাটিতে শুধু সানিয়াত আর তার ছোট ভাই। তাদের বাবা বারকত উল্লাহ বুলু, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) একজন প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ।

সামিয়াতের ছোট ভাই সামির মোহাম্মদ ইরফান, ডাউন সিন্ড্রোমে আক্রান্ত। হুট করে রাতের বেলা পেস্ট্রি খাওয়ার আবদার করে বসে।

“ওর মতো মানুষদের মাঝে মাঝে এমন কিছু চাওয়া থাকে, যা পূরণ না করলে তারা খুবই অস্থির হয়ে ওঠে,” বললেন সানিয়াত। ভাইকে শান্ত করতে তিনি রাত একটার দিকে পেস্ট্রি কিনতে বের হন। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে ‘উডেন স্পুন’ নামক একটি খোলা দোকান পেলেন তিনি।

কেক নিয়ে দোকান থেকে বের হতেই, ডিবি’র জ্যাকেট পরা একদল অফিসার তাকে ঘিরে ধরল। পাশেই বেশ কয়েকটি গাড়ি এবং একটি বড় হাইএস ভ্যান দরজা খুলে দাঁড়িয়ে ছিল। দুটি স্বয়ংক্রিয় রাইফেল তাক করা তার দিকে।

“তোমার নাম কী?”, জিজ্ঞেস করলেন একজন অফিসার।

“ওমর শরীফ মোহাম্মদ ইমরান।”

“আরেকটি নাম কী?”, আবার জানতে চাইলেন তিনি।

উত্তর এলো, ‘সানিয়াত’।

তখনই একজন অফিসার তার ঘাড়ে জোরে আঘাত দিয়ে চিৎকার করে বলল, “স্যার, আমরা পেয়ে গেছি!”। গাড়িতে ওঠানো হলো তাকে।

জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হলো। তারা জানতে চাইলেন কেন তিনি (সানিয়াত) সেখানে ছিলেন, কী করছিলেন এবং এত রাতে পেস্ট্রি কেন কিনেছেন। তারা তার বাবা-মায়ের ব্যাপারেও প্রশ্ন করলেন, বিশেষ করে তার বাবার সম্পর্কে, যিনি কিনা একজন রাজনীতিবিদ। সানিয়াত বললেন, তার বাবা-মা দুজনেই হাসপাতালে।

সত্যতা প্রমাণ করতে, তিনি তাদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে বললেন। তবে তখনও তার চিন্তা ছিল তার ছোট ভাইকে নিয়ে, কারণ সেখানে তার দেখভালের কেউ নেই।

হাসপাতালে পৌঁছানোর পর, তারা সানিয়াতকে গাড়িতে রেখে ভেতরে গেলেন তার বাবাকে খুঁজতে, কিন্তু তাকে পাওয়া গেল না। যেহেতু সাথে কোনো নারী পুলিশ কর্মকর্তা ছিল না, তাই নার্সরা তাদের তার মায়ের কেবিনে প্রবেশ করতে দেয়নি।

লাকি বলেন, “নার্সরা আমাকে পরে বলেছিল যে কিছু লোক সানিয়াতের বাবার জন্য জিজ্ঞাসা করছিল। আমাকে কেন জানানো হয়নি, জিজ্ঞেস করলাম তাদের। আমি খুব দুশ্চিন্তায় ছিলাম, কী হয়েছে জানার জন্য ছটফট করছিলাম।”

পরের দিন ছিল কারফিউ। অসুস্থ থাকায় সামিয়াতের মা অ্যাম্বুলেন্সে করেই বেরিয়ে পড়েন ছেলের খোঁজে। কিন্তু থানা কিংবা ডিবি অফিস, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সংস্থাই তার ছেলের ব্যাপারে কোনো তথ্য দেয়নি।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৯:৩৫:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
২৩ বার পড়া হয়েছে

মা-ছেলের মুখে জুলাই নৃশংসতার বর্ণনা…

আপডেট সময় ০৯:৩৫:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

২৮ জুলাই, রাত আনুমানিক আড়াইটা। মাত্রই তাহাজ্জুদ নামাজ শেষ করেছেন শামীমা বারকাত লাকি। কিন্তু ছেলের চিন্তায় অস্থির মা কিছুতেই ঘুমোতে পারছিলেন না। বড় ছেলে ওমর শরীফ মোহাম্মদ ইমরান, যাকে সবাই সানিয়াত নামে চিনে, তখনো পুলিশের হেফাজতে। ছেলের চিন্তায় মন ছটফট করছিল তার।
হঠাৎ করেই ফোনটা বেজে উঠল—স্ক্রিনে ভেসে উঠল একটি চার অঙ্কের নাম্বার। কিছুক্ষণ দ্বিধা নিয়ে, শেষমেশ ফোনটা ধরলেন।

‘হ্যালো, কে বলছেন?’, কোনো উত্তর নেই। শুধু দূর থেকে ভেসে আসছিল যন্ত্রণার শব্দ। এক মুহূর্তের জন্য যেন তার হৃৎস্পন্দন থেমে গেল। ফোনের ওপাশ থেকে শুনতে পারছিলেন ছেলের যন্ত্রণাক্লিষ্ট, কান্না ভেজা কণ্ঠ। সানিয়াত চিৎকার করে বলছিল, ‘ও মা…ও মা …!’; নির্মমভাবে পেটানো হচ্ছিল তাকে।
ওই সময়ে ছেলের জন্য কিছু করতে না পারার অসহায়ত্ব যেন তার বুকে পাথরের মতো চেপে বসে। ‘ওটা সানিয়াত ছিল’, কান্না ভাঙা কণ্ঠে বললেন তিনি।

“ওরা আমাকে জোর করে শুনিয়েছে, কীভাবে আমার ছেলেকে নির্যাতন করা হচ্ছে। একজন মা কীভাবে এটা সহ্য করতে পারে? আমার ছেলে আগে কখনো জেলেও যায়নি, পেটানোর তো প্রশ্নই আসে না।”

লাকি যেন সেই মুহূর্তে সম্পূর্ণ অসহায় হয়ে গেলেন। ফোনে ছেলের নাম ধরে চিৎকার করে মিনতি করলেন, যেন তাকে আর না মারা হয়। কিন্তু তার অনুরোধের কোনো উত্তর এল না, কেবল নীরবতা। লাইন কেটে গেল, ছেলের যন্ত্রণার প্রতিধ্বনি নিয়ে তিনি রয়ে গেলেন একা অন্ধকারে। পুরো রাত কাঁদলেন, শোক আর ক্রোধে ভরে উঠল তার মন।

সেই দুঃসহ মুহূর্তের কথা স্মরণ করে লাকি বললেন, ‘ওরা সেদিন আমাকে শুনিয়ে আমার ছেলেকে আরও বেশি নির্যাতন করছিল, কারণ আমাদের একটা ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল।’

ভিডিওতে দেখা যায়, হাতকড়া পরা সানিয়াত যখন আদালত থেকে বের হচ্ছিলেন, তার মা পেছন থেকে ছুটে যান তার দিকে। মাকে দেখে সানিয়াত হাতকড়া পরা হাত দিয়ে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করেন, আর মা বারবার তাকে আশ্বস্ত করেন, “ভয় পাস না, কিছু হবে না।”

ভিডিওটি অনলাইনে ভাইরাল হওয়ার পর পুরো পুলিশ বিভাগ সানিয়াতের ওপর আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।

তার মায়ের সাথে যখন আমরা কথা বলছিলাম, তখন পাশেই বসে ছিলেন সানিয়াত, তবে তার মন অন্য কোথাও । তিনি বিষণ্ন মনে কী যেন ভাবছিলেন। হয়ত শরীরে আঘাতের ক্ষতগুলো তাকে বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছিল, কীভাবে উলটো করে ঝুলিয়ে তাকে নির্মমভাবে মারা হয়েছিল। শরীরের প্রতিটি অংশের ব্যথা যেন সেই নির্যাতনের স্মৃতিই মনে করিয়ে দিচ্ছিল।

২৪ জুলাই, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের এমবিএ গ্র্যাজুয়েট সানিয়াতকে ডিবি পুলিশ আটক করে। অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আগ পর্যন্ত পুলিশের হেফাজতেই বন্দি ছিলেন তিনি।

জেলের একেকটা রাত সানিয়াতের জন্য ছিল অন্ততকাল। প্রতিটি মুহূর্ত যেন সেই সময়ের সাথে যুদ্ধ। শরীরের কিছু ক্ষত সেরে উঠলেও, ওই কয়দিনের ভয়ংকর স্মৃতি মনে পড়লে এখনও তার শরীর শিউরে ওঠে।

এক টুকরো প্যাস্ট্রি

সেদিন মধ্যরাতের কথা। সানিয়াতের মাকে নিয়ে তার বাবা তখন হাসপাতালে। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বাসাটিতে শুধু সানিয়াত আর তার ছোট ভাই। তাদের বাবা বারকত উল্লাহ বুলু, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) একজন প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ।

সামিয়াতের ছোট ভাই সামির মোহাম্মদ ইরফান, ডাউন সিন্ড্রোমে আক্রান্ত। হুট করে রাতের বেলা পেস্ট্রি খাওয়ার আবদার করে বসে।

“ওর মতো মানুষদের মাঝে মাঝে এমন কিছু চাওয়া থাকে, যা পূরণ না করলে তারা খুবই অস্থির হয়ে ওঠে,” বললেন সানিয়াত। ভাইকে শান্ত করতে তিনি রাত একটার দিকে পেস্ট্রি কিনতে বের হন। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে ‘উডেন স্পুন’ নামক একটি খোলা দোকান পেলেন তিনি।

কেক নিয়ে দোকান থেকে বের হতেই, ডিবি’র জ্যাকেট পরা একদল অফিসার তাকে ঘিরে ধরল। পাশেই বেশ কয়েকটি গাড়ি এবং একটি বড় হাইএস ভ্যান দরজা খুলে দাঁড়িয়ে ছিল। দুটি স্বয়ংক্রিয় রাইফেল তাক করা তার দিকে।

“তোমার নাম কী?”, জিজ্ঞেস করলেন একজন অফিসার।

“ওমর শরীফ মোহাম্মদ ইমরান।”

“আরেকটি নাম কী?”, আবার জানতে চাইলেন তিনি।

উত্তর এলো, ‘সানিয়াত’।

তখনই একজন অফিসার তার ঘাড়ে জোরে আঘাত দিয়ে চিৎকার করে বলল, “স্যার, আমরা পেয়ে গেছি!”। গাড়িতে ওঠানো হলো তাকে।

জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হলো। তারা জানতে চাইলেন কেন তিনি (সানিয়াত) সেখানে ছিলেন, কী করছিলেন এবং এত রাতে পেস্ট্রি কেন কিনেছেন। তারা তার বাবা-মায়ের ব্যাপারেও প্রশ্ন করলেন, বিশেষ করে তার বাবার সম্পর্কে, যিনি কিনা একজন রাজনীতিবিদ। সানিয়াত বললেন, তার বাবা-মা দুজনেই হাসপাতালে।

সত্যতা প্রমাণ করতে, তিনি তাদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে বললেন। তবে তখনও তার চিন্তা ছিল তার ছোট ভাইকে নিয়ে, কারণ সেখানে তার দেখভালের কেউ নেই।

হাসপাতালে পৌঁছানোর পর, তারা সানিয়াতকে গাড়িতে রেখে ভেতরে গেলেন তার বাবাকে খুঁজতে, কিন্তু তাকে পাওয়া গেল না। যেহেতু সাথে কোনো নারী পুলিশ কর্মকর্তা ছিল না, তাই নার্সরা তাদের তার মায়ের কেবিনে প্রবেশ করতে দেয়নি।

লাকি বলেন, “নার্সরা আমাকে পরে বলেছিল যে কিছু লোক সানিয়াতের বাবার জন্য জিজ্ঞাসা করছিল। আমাকে কেন জানানো হয়নি, জিজ্ঞেস করলাম তাদের। আমি খুব দুশ্চিন্তায় ছিলাম, কী হয়েছে জানার জন্য ছটফট করছিলাম।”

বিএনপির সাথে যোগসূত্র

পরের দিন ছিল কারফিউ। অসুস্থ থাকায় সামিয়াতের মা অ্যাম্বুলেন্সে করেই বেরিয়ে পড়েন ছেলের খোঁজে। কিন্তু থানা কিংবা ডিবি অফিস, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সংস্থাই তার ছেলের ব্যাপারে কোনো তথ্য দেয়নি।

২৮ জুলাই, রাত আনুমানিক আড়াইটা। মাত্রই তাহাজ্জুদ নামাজ শেষ করেছেন শামীমা বারকাত লাকি। কিন্তু ছেলের চিন্তায় অস্থির মা কিছুতেই ঘুমোতে পারছিলেন না। বড় ছেলে ওমর শরীফ মোহাম্মদ ইমরান, যাকে সবাই সানিয়াত নামে চিনে, তখনো পুলিশের হেফাজতে। ছেলের চিন্তায় মন ছটফট করছিল তার।

হঠাৎ করেই ফোনটা বেজে উঠল—স্ক্রিনে ভেসে উঠল একটি চার অঙ্কের নাম্বার। কিছুক্ষণ দ্বিধা নিয়ে, শেষমেশ ফোনটা ধরলেন।

‘হ্যালো, কে বলছেন?’, কোনো উত্তর নেই। শুধু দূর থেকে ভেসে আসছিল যন্ত্রণার শব্দ। এক মুহূর্তের জন্য যেন তার হৃৎস্পন্দন থেমে গেল। ফোনের ওপাশ থেকে শুনতে পারছিলেন ছেলের যন্ত্রণাক্লিষ্ট, কান্না ভেজা কণ্ঠ। সানিয়াত চিৎকার করে বলছিল, ‘ও মা…ও মা …!’; নির্মমভাবে পেটানো হচ্ছিল তাকে।

ওই সময়ে ছেলের জন্য কিছু করতে না পারার অসহায়ত্ব যেন তার বুকে পাথরের মতো চেপে বসে। ‘ওটা সানিয়াত ছিল’, কান্না ভাঙা কণ্ঠে বললেন তিনি।

“ওরা আমাকে জোর করে শুনিয়েছে, কীভাবে আমার ছেলেকে নির্যাতন করা হচ্ছে। একজন মা কীভাবে এটা সহ্য করতে পারে? আমার ছেলে আগে কখনো জেলেও যায়নি, পেটানোর তো প্রশ্নই আসে না।”

লাকি যেন সেই মুহূর্তে সম্পূর্ণ অসহায় হয়ে গেলেন। ফোনে ছেলের নাম ধরে চিৎকার করে মিনতি করলেন, যেন তাকে আর না মারা হয়। কিন্তু তার অনুরোধের কোনো উত্তর এল না, কেবল নীরবতা। লাইন কেটে গেল, ছেলের যন্ত্রণার প্রতিধ্বনি নিয়ে তিনি রয়ে গেলেন একা অন্ধকারে। পুরো রাত কাঁদলেন, শোক আর ক্রোধে ভরে উঠল তার মন।

সেই দুঃসহ মুহূর্তের কথা স্মরণ করে লাকি বললেন, ‘ওরা সেদিন আমাকে শুনিয়ে আমার ছেলেকে আরও বেশি নির্যাতন করছিল, কারণ আমাদের একটা ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল।’

ভিডিওতে দেখা যায়, হাতকড়া পরা সানিয়াত যখন আদালত থেকে বের হচ্ছিলেন, তার মা পেছন থেকে ছুটে যান তার দিকে। মাকে দেখে সানিয়াত হাতকড়া পরা হাত দিয়ে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করেন, আর মা বারবার তাকে আশ্বস্ত করেন, “ভয় পাস না, কিছু হবে না।”

ভিডিওটি অনলাইনে ভাইরাল হওয়ার পর পুরো পুলিশ বিভাগ সানিয়াতের ওপর আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।

তার মায়ের সাথে যখন আমরা কথা বলছিলাম, তখন পাশেই বসে ছিলেন সানিয়াত, তবে তার মন অন্য কোথাও । তিনি বিষণ্ন মনে কী যেন ভাবছিলেন। হয়ত শরীরে আঘাতের ক্ষতগুলো তাকে বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছিল, কীভাবে উলটো করে ঝুলিয়ে তাকে নির্মমভাবে মারা হয়েছিল। শরীরের প্রতিটি অংশের ব্যথা যেন সেই নির্যাতনের স্মৃতিই মনে করিয়ে দিচ্ছিল।

২৪ জুলাই, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের এমবিএ গ্র্যাজুয়েট সানিয়াতকে ডিবি পুলিশ আটক করে। অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আগ পর্যন্ত পুলিশের হেফাজতেই বন্দি ছিলেন তিনি।

জেলের একেকটা রাত সানিয়াতের জন্য ছিল অন্ততকাল। প্রতিটি মুহূর্ত যেন সেই সময়ের সাথে যুদ্ধ। শরীরের কিছু ক্ষত সেরে উঠলেও, ওই কয়দিনের ভয়ংকর স্মৃতি মনে পড়লে এখনও তার শরীর শিউরে ওঠে।

এক টুকরো প্যাস্ট্রি

সেদিন মধ্যরাতের কথা। সানিয়াতের মাকে নিয়ে তার বাবা তখন হাসপাতালে। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বাসাটিতে শুধু সানিয়াত আর তার ছোট ভাই। তাদের বাবা বারকত উল্লাহ বুলু, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) একজন প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ।

সামিয়াতের ছোট ভাই সামির মোহাম্মদ ইরফান, ডাউন সিন্ড্রোমে আক্রান্ত। হুট করে রাতের বেলা পেস্ট্রি খাওয়ার আবদার করে বসে।

“ওর মতো মানুষদের মাঝে মাঝে এমন কিছু চাওয়া থাকে, যা পূরণ না করলে তারা খুবই অস্থির হয়ে ওঠে,” বললেন সানিয়াত। ভাইকে শান্ত করতে তিনি রাত একটার দিকে পেস্ট্রি কিনতে বের হন। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে ‘উডেন স্পুন’ নামক একটি খোলা দোকান পেলেন তিনি।

কেক নিয়ে দোকান থেকে বের হতেই, ডিবি’র জ্যাকেট পরা একদল অফিসার তাকে ঘিরে ধরল। পাশেই বেশ কয়েকটি গাড়ি এবং একটি বড় হাইএস ভ্যান দরজা খুলে দাঁড়িয়ে ছিল। দুটি স্বয়ংক্রিয় রাইফেল তাক করা তার দিকে।

“তোমার নাম কী?”, জিজ্ঞেস করলেন একজন অফিসার।

“ওমর শরীফ মোহাম্মদ ইমরান।”

“আরেকটি নাম কী?”, আবার জানতে চাইলেন তিনি।

উত্তর এলো, ‘সানিয়াত’।

তখনই একজন অফিসার তার ঘাড়ে জোরে আঘাত দিয়ে চিৎকার করে বলল, “স্যার, আমরা পেয়ে গেছি!”। গাড়িতে ওঠানো হলো তাকে।

জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হলো। তারা জানতে চাইলেন কেন তিনি (সানিয়াত) সেখানে ছিলেন, কী করছিলেন এবং এত রাতে পেস্ট্রি কেন কিনেছেন। তারা তার বাবা-মায়ের ব্যাপারেও প্রশ্ন করলেন, বিশেষ করে তার বাবার সম্পর্কে, যিনি কিনা একজন রাজনীতিবিদ। সানিয়াত বললেন, তার বাবা-মা দুজনেই হাসপাতালে।

সত্যতা প্রমাণ করতে, তিনি তাদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে বললেন। তবে তখনও তার চিন্তা ছিল তার ছোট ভাইকে নিয়ে, কারণ সেখানে তার দেখভালের কেউ নেই।

হাসপাতালে পৌঁছানোর পর, তারা সানিয়াতকে গাড়িতে রেখে ভেতরে গেলেন তার বাবাকে খুঁজতে, কিন্তু তাকে পাওয়া গেল না। যেহেতু সাথে কোনো নারী পুলিশ কর্মকর্তা ছিল না, তাই নার্সরা তাদের তার মায়ের কেবিনে প্রবেশ করতে দেয়নি।

লাকি বলেন, “নার্সরা আমাকে পরে বলেছিল যে কিছু লোক সানিয়াতের বাবার জন্য জিজ্ঞাসা করছিল। আমাকে কেন জানানো হয়নি, জিজ্ঞেস করলাম তাদের। আমি খুব দুশ্চিন্তায় ছিলাম, কী হয়েছে জানার জন্য ছটফট করছিলাম।”

পরের দিন ছিল কারফিউ। অসুস্থ থাকায় সামিয়াতের মা অ্যাম্বুলেন্সে করেই বেরিয়ে পড়েন ছেলের খোঁজে। কিন্তু থানা কিংবা ডিবি অফিস, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সংস্থাই তার ছেলের ব্যাপারে কোনো তথ্য দেয়নি।