ঢাকা ০২:০৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo মাধবপুর বাস ও পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ২০ Logo হবিগঞ্জে ভুয়া চিকিৎসকের একমাসের কারাদণ্ড Logo স্বৈরাচার পতনে ১৬ বছর অপেক্ষা নয়, তাৎক্ষণিক প্রতিরোধ গড়ার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার Logo বাংলাদেশের মানুষ কল্পনাও করেনি যে কেবল চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনই শেষ পর্যন্ত ‘জুলাই বিদ্রোহে’ রূপ নেবে। গত বছরের ১ জুলাই বাংলাদেশ এক অবিশ্বাস্য ঘটনার সাক্ষী হয়। এদিন শিক্ষার্থীদের ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন’ ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে’ রূপ নেয়। এটি ছিল প্রায় ১৬ বছরের স্বৈরতান্ত্রিক আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের সূচনাবিন্দু। মানুষ কল্পনাও করেনি যে শুরুতে কেবল চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনই শেষ পর্যন্ত ‘জুলাই বিদ্রোহে’ রূপ নেবে, শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ একত্রিত হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে বৃহত্তর গণআন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়বে। ছাত্রদের এই অসন্তোষের সূচনা ঘটে ২০১৮ সালের কোটা বাতিলের সরকারি প্রজ্ঞাপনকে হাইকোর্ট কর্তৃক অবৈধ ঘোষণা করার রায়ের পর। সরকার ২০১৮ সালে তীব্র ছাত্র আন্দোলনের চাপে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করেছিল। কিন্তু হাইকোর্টের রায়ে ৫৬ শতাংশ কোটা পুনঃপ্রবর্তিত হয়, যাতে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারীদের জন্য ১০ শতাংশ, পশ্চাৎপদ জেলার জন্য ১০ শতাংশ, সংখ্যালঘুদের জন্য ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ বরাদ্দ করা হয়। ছাত্ররা এই ব্যবস্থাকে মেধাবীদের প্রতি বৈষম্য হিসেবে মনে করে প্রতিবাদে রাস্তায় নামে। সরকার প্রতিবাদকারীদের কঠোরভাবে দমন করতে চাইলে পরিস্থিতি বিদ্রোহে রূপ নেয়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারপন্থী সন্ত্রাসীরা একযোগে আক্রমণ চালালে অন্তত ১ হাজার ৪০০ জন নিহত এবং প্রায় ২০ হাজার জন আহত হয়। স্বাধীনতা পরবর্তী ইতিহাসে এটা ছিল সবচেয়ে নিষ্ঠুর দমনপীড়ন। অনেকে বিশ্বাস করেন, এই জুলাই বিদ্রোহের মধ্য দিয়েই ২০০৮ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের পতন অনিবার্য হয়ে ওঠে। ২০২৪ সালের ১ জুলাই এই আন্দোলন পুরো মাত্রায় শুরু হলেও এর গোড়াপত্তন ঘটে ৫ জুন। ওইদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় রাস্তায় নামে। আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক এবং বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া তার ‘জুলাই : মাতৃভূমি অথবা মৃত্যু’ বইতে লিখেছেন, ‘৫ জুন বিকেলে আমি ঢাকা মেডিকেল কলেজের পাশে চানখারপুলে স্কুটি মেরামত করাচ্ছিলাম। তখন ফেসবুকে দেখি- হাইকোর্ট কোটা পুনর্বহাল করেছে। মনে হলো ২০১৮ সালের অর্জনগুলো ধূলিসাৎ হয়ে যাচ্ছে।’ এরপর কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে এক বৈঠকের মাধ্যমে প্রতিবাদ কর্মসূচির সূচনা হয়। রাত সাড়ে ৭টায় ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী’ ব্যানারে একটি মিছিল বের হয় এবং সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্যদিয়ে তা শেষ হয়। এই সমাবেশে তারা হাইকোর্টের রায়কে ‘মেধাবীদের সাথে তামাশা’ বলে প্রত্যাখ্যান করে। সমাবেশে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র, বর্তমানে জাতীয় নাগরিক পার্টি- এনসিপির প্রধান নাহিদ ইসলাম পরদিন ৬ জুন বিকেল ৫টায় রাজু ভাস্কর্যে সমাবেশের ঘোষণা দেন। প্রায় পাঁচ থেকে ছয় শ’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ওই মিছিলে অংশ নেয় এবং স্লোগান দেয়- ‘কোটা পদ্ধতি মানি না’, ‘হাইকোর্টের রায় মানি না’, ‘কোটা বাতিল করতেই হবে’। আসিফের বক্তব্যের সাথে একমত প্রকাশ করে নাহিদও ৫ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে তাদের প্রথম বৈঠকের কথা এবং কিভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সম্পৃক্ত করতে পেরেছিলেন তা স্মরণ করেন। নাহিদ পরে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ঈদুল আজহার ছুটির আগে মাত্র তিন দিন আন্দোলনের সুযোগ পেয়েছিলাম।’ ৬ জুন ঢাবি, জাহাঙ্গীরনগর, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, জগন্নাথসহ দেশের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা কোটা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করে। ৯ জুন শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল করে অ্যাটর্নি জেনারেল বরাবর একটি স্মারকলিপি জমা দেয়। এর প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করে। শুনানির দিন ধার্য হয় ৪ জুলাই। ১০ জুন আবারো মিছিল হয় এবং শিক্ষার্থীরা সরকারকে ৩০ জুনের মধ্যে ২০১৮ সালের প্রজ্ঞাপন পুনর্বহাল করতে আল্টিমেটাম দেয়, না হলে সর্বাত্মক আন্দোলন শুরু করার ঘোষণা দেয়। আসিফ স্মরণ করেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ৩০ জুন পর্যন্ত ঈদের ছুটি ঘোষণা করেছিল, তাই আমরা সেই দিনটিকে আল্টিমেটামের সময়সীমা হিসেবে নির্ধারণ করি। আমরা সরকারকে সতর্কও করেছিলাম- যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আমাদের দাবি পূরণ না হয়, তাহলে আমরা আবার আন্দোলন শুরু করব।’ ৩০ জুন সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ঘোষণা না আসায় ১ জুলাই ঢাবি, জগন্নাথ, জাবি, রাবি, চবি, বরিশাল ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমে পড়ে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কিছু সময়ের জন্য ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ব্যানারে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার প্রাঙ্গণ থেকে একটি মিছিল বের করে, যা রাজু ভাস্কর্যে শেষ হয়। সমাবেশ থেকে নাহিদ ইসলাম ঘোষণা দেন, আগামী ৪ জুলাই পর্যন্ত দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান ও পরীক্ষার বর্জন চলবে। তিনি তিন দিনের কর্মসূচিও ঘোষণা করেন- ২ জুলাই দেশব্যাপী মহাসড়কে মিছিল, ৩ ও ৪ জুলাই রাজধানীর রাজু ভাস্কর্যে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত সরকারি কলেজ এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সমাবেশ। সমাবেশে নাহিদ ইসলাম ঘোষণা দেন- ৪ জুলাই পর্যন্ত দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন চলবে। সেই সাথে তিনি চারটি দাবি উত্থাপন করেন- ১. দ্রুত কোটা সংস্কারে কমিশন গঠন, যেন পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠী উপকৃত হয়। ২. কোটা পূরণ না হলে মেধাভিত্তিক নিয়োগ নিশ্চিত করা। ৩. নিয়োগে একাধিকবার কোটা সুবিধা ব্যবহার বন্ধ করা। ৪. প্রশাসনে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। Logo হবিগঞ্জে শুঁটকি উৎপাদনে ভাটা Logo নবীগঞ্জ মসজিদে মাইকিং করে পুলিশের ওপর হামলা, আসামি ছিনতাই আটক ১৩ Logo চুনারুঘাটে হত্যা মামলার আসমী আ. মান্নান আটক-তাবলীগ জামাতে গিয়ে অপহরণ মামলা সাজিয়েছেন Logo আজমিরীগঞ্জ কালনী নদীর ভাঙনে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে পাড়ে বসে চোখ মুছছেন সুনিতী Logo কুলাউড়ায় হত্যাকান্ডের শিকার আনজুমের বাড়িতে আমিরে জামায়াত Logo মাধবপুর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ফার্মাসিস্ট নেই ৩০ বছর ধরে

মৌলভীবাজারে ডা. কুতুব উদ্দিন অ্যাডুকেশন ট্রাস্টের সীরাত প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

অলি আহমদ মাহিন, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:

মৌলভীবাজারে আলহাজ ডা. মুহাম্মদ কুতুব উদ্দিন এডুকেশন ট্রাস্টের আয়োজনে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষ্যে সীরাত প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে।

শনিবার (৫ অক্টোবর) মৌলভীবাজার শহরের কাশীনাথ আলাউদ্দিন হাই স্কুল এন্ড কলেজে সকাল সাড়ে ১০টায় প্রতিযোগিতার লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন স্কুল ও মাদরাসার তিন শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।

মৌলভীবাজার পৌরসভার হলরুমে আলহাজ ডা. মুহাম্মদ কুতুব উদ্দিন অ্যাডুকেশন ট্রাস্টের চেয়ারম্যান মো. ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও রাজনগর ডিএস ফাজিল মাদরাসার আরবি প্রভাষক মাওলানা শফিকুল আলম সুহেলের পরিচালনায় বিজয়ীদের নিয়ে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শুরু হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ ফজলুর রহমান।

বিশেষ অতিথি ছিলেন কাশিনাথ আলাউদ্দিন হাই স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ কামাল হোসেন, তালামীযে ইসলামিয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক ও ট্রাস্টি আহমদ রায়হান ফারহি, মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র সাংবাদিক সরওয়ার আহমদ, সমাজসেবক একলাছুর রহমান, চ্যানেল এসের ব্যবস্থাপক মো. খালেদ চৌধুরী, যুগান্তরের জেলা প্রতিনিধি হোসাইন আহমদ।

বক্তব্য রাখেন খালিশপুর রহমানিয়া সিনিয়র আলীম মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ আব্দুল বাছিত, মাড়কোনা দাখিল মাদরাসার সুপার ও ট্রাস্টি মুফতি মাওলানা মো. রুহুল আমিন, সাধুহাটি আব্দুল বারী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো: জয়নাল মিয়া, শাহ হেলাল উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মো: মোশাররফ হোসেন, ট্রাস্টের অন্যতম পরিচালক মাওলানা জহিরুল ইসলাম, সাপ্তাহিক পূর্বদিকের সম্পাদক সাপ্তাহিক মুজাহিদ আহমদ, পূর্বদিকের সহযোগী সম্পাদক সালাহ উদ্দিন ইবনে শিহাব, তালামীযে ইসলামিয়ার মৌলভীবাজার জেলা সভাপতি আলী রাব্বি রতন, সাধারণ সম্পাদক মো. নাসির খান, শ্যামেরকোনা দাখিল মাদরাসার সুপার মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক, দৈনিক কালবেলার মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি ওমর ফারুক নাঈম, সদর উপজেলা তালামীযের সভাপতি মো: গিয়াস উদ্দিন রাফি, সহ-সভাপতি ছায়েম আহমদ, সাধারণ সম্পাদক মো: বদরুল ইসলাম।

পর্যবেক্ষক ও বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন রাজনগর দারুচ্ছুন্নাহ ফাজিল (ডিগ্রী) মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক মো: আলকামুন, আরবি প্রভাষক মাওলানা মো: আব্দুশ শাকুর, সমাজবিজ্ঞানের প্রভাষক মো: জসিম উদ্দিন, সিনিয়র শিক্ষক মো: সুয়াইবুর রহমান খান, মো: আব্দুর রাজ্জাক, মোঃ মুনিবুর রহমান তালুকদার। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পারভেজ আহমদ, ইফতেখার আহমদ সনি, হাফিজ আব্দুল ওয়াহিদ, হাফিজ এনামুল হক প্রমুখ।

ষষ্ট ও সপ্তম শ্রেণী ক গ্রুপ এবং ৮ম ও ১০ম শ্রেণী খ গ্রুপ। এই দুগ্রুপে ৩ জন করে ৬ জনকে নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়। প্রতিযোগিতায় ক গ্রুপের প্রথম বিজয়ী আলী আমজদ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ফারিহা তাবাসসুমকে ৫ হাজার, দ্বিতীয় পুরস্কার বিজয়ী দি ফ্লাওয়ার্স কে.জি এন্ড হাই স্কুলের আদ্রিতা জুহিন ৩ হাজার ও তৃতীয় পুরস্কার বিজয়ী হাফিজা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নাফিছা আলম সাউদাকে ২ হাজার টাকা পুরস্কার এবং প্রতিযোগিতায় খ গ্রুপের প্রথম বিজয়ী বাহারমর্দান জয়গুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের তাহমিদা আক্তার ৫ হাজার, দ্বিতীয় পুরস্কার বিজয়ী আপ্তাব উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের রহিমা আক্তার নিশিতাকে ৩ হাজার, তৃতীয় পুরস্কার বিজয়ী লতিফিয়া হিফজুল কোরআন মাদরাসার মাহের ইসলাম রাহিকে নগদ ২হাজার টাকা পুরস্কার প্রদান করা হয়। এছাড়া আরো ১২ জনকে বিশেষ পুরস্কার প্রদান করা হয়। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী সকলকে বিশেষ উপহার হিসাবে মগ প্রদান করা হয়।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৬:৩৩:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৪
৭৯ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশের মানুষ কল্পনাও করেনি যে কেবল চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনই শেষ পর্যন্ত ‘জুলাই বিদ্রোহে’ রূপ নেবে। গত বছরের ১ জুলাই বাংলাদেশ এক অবিশ্বাস্য ঘটনার সাক্ষী হয়। এদিন শিক্ষার্থীদের ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন’ ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে’ রূপ নেয়। এটি ছিল প্রায় ১৬ বছরের স্বৈরতান্ত্রিক আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের সূচনাবিন্দু। মানুষ কল্পনাও করেনি যে শুরুতে কেবল চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনই শেষ পর্যন্ত ‘জুলাই বিদ্রোহে’ রূপ নেবে, শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ একত্রিত হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে বৃহত্তর গণআন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়বে। ছাত্রদের এই অসন্তোষের সূচনা ঘটে ২০১৮ সালের কোটা বাতিলের সরকারি প্রজ্ঞাপনকে হাইকোর্ট কর্তৃক অবৈধ ঘোষণা করার রায়ের পর। সরকার ২০১৮ সালে তীব্র ছাত্র আন্দোলনের চাপে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করেছিল। কিন্তু হাইকোর্টের রায়ে ৫৬ শতাংশ কোটা পুনঃপ্রবর্তিত হয়, যাতে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারীদের জন্য ১০ শতাংশ, পশ্চাৎপদ জেলার জন্য ১০ শতাংশ, সংখ্যালঘুদের জন্য ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ বরাদ্দ করা হয়। ছাত্ররা এই ব্যবস্থাকে মেধাবীদের প্রতি বৈষম্য হিসেবে মনে করে প্রতিবাদে রাস্তায় নামে। সরকার প্রতিবাদকারীদের কঠোরভাবে দমন করতে চাইলে পরিস্থিতি বিদ্রোহে রূপ নেয়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারপন্থী সন্ত্রাসীরা একযোগে আক্রমণ চালালে অন্তত ১ হাজার ৪০০ জন নিহত এবং প্রায় ২০ হাজার জন আহত হয়। স্বাধীনতা পরবর্তী ইতিহাসে এটা ছিল সবচেয়ে নিষ্ঠুর দমনপীড়ন। অনেকে বিশ্বাস করেন, এই জুলাই বিদ্রোহের মধ্য দিয়েই ২০০৮ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের পতন অনিবার্য হয়ে ওঠে। ২০২৪ সালের ১ জুলাই এই আন্দোলন পুরো মাত্রায় শুরু হলেও এর গোড়াপত্তন ঘটে ৫ জুন। ওইদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় রাস্তায় নামে। আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক এবং বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া তার ‘জুলাই : মাতৃভূমি অথবা মৃত্যু’ বইতে লিখেছেন, ‘৫ জুন বিকেলে আমি ঢাকা মেডিকেল কলেজের পাশে চানখারপুলে স্কুটি মেরামত করাচ্ছিলাম। তখন ফেসবুকে দেখি- হাইকোর্ট কোটা পুনর্বহাল করেছে। মনে হলো ২০১৮ সালের অর্জনগুলো ধূলিসাৎ হয়ে যাচ্ছে।’ এরপর কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে এক বৈঠকের মাধ্যমে প্রতিবাদ কর্মসূচির সূচনা হয়। রাত সাড়ে ৭টায় ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী’ ব্যানারে একটি মিছিল বের হয় এবং সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্যদিয়ে তা শেষ হয়। এই সমাবেশে তারা হাইকোর্টের রায়কে ‘মেধাবীদের সাথে তামাশা’ বলে প্রত্যাখ্যান করে। সমাবেশে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র, বর্তমানে জাতীয় নাগরিক পার্টি- এনসিপির প্রধান নাহিদ ইসলাম পরদিন ৬ জুন বিকেল ৫টায় রাজু ভাস্কর্যে সমাবেশের ঘোষণা দেন। প্রায় পাঁচ থেকে ছয় শ’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ওই মিছিলে অংশ নেয় এবং স্লোগান দেয়- ‘কোটা পদ্ধতি মানি না’, ‘হাইকোর্টের রায় মানি না’, ‘কোটা বাতিল করতেই হবে’। আসিফের বক্তব্যের সাথে একমত প্রকাশ করে নাহিদও ৫ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে তাদের প্রথম বৈঠকের কথা এবং কিভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সম্পৃক্ত করতে পেরেছিলেন তা স্মরণ করেন। নাহিদ পরে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ঈদুল আজহার ছুটির আগে মাত্র তিন দিন আন্দোলনের সুযোগ পেয়েছিলাম।’ ৬ জুন ঢাবি, জাহাঙ্গীরনগর, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, জগন্নাথসহ দেশের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা কোটা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করে। ৯ জুন শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল করে অ্যাটর্নি জেনারেল বরাবর একটি স্মারকলিপি জমা দেয়। এর প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করে। শুনানির দিন ধার্য হয় ৪ জুলাই। ১০ জুন আবারো মিছিল হয় এবং শিক্ষার্থীরা সরকারকে ৩০ জুনের মধ্যে ২০১৮ সালের প্রজ্ঞাপন পুনর্বহাল করতে আল্টিমেটাম দেয়, না হলে সর্বাত্মক আন্দোলন শুরু করার ঘোষণা দেয়। আসিফ স্মরণ করেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ৩০ জুন পর্যন্ত ঈদের ছুটি ঘোষণা করেছিল, তাই আমরা সেই দিনটিকে আল্টিমেটামের সময়সীমা হিসেবে নির্ধারণ করি। আমরা সরকারকে সতর্কও করেছিলাম- যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আমাদের দাবি পূরণ না হয়, তাহলে আমরা আবার আন্দোলন শুরু করব।’ ৩০ জুন সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ঘোষণা না আসায় ১ জুলাই ঢাবি, জগন্নাথ, জাবি, রাবি, চবি, বরিশাল ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমে পড়ে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কিছু সময়ের জন্য ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ব্যানারে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার প্রাঙ্গণ থেকে একটি মিছিল বের করে, যা রাজু ভাস্কর্যে শেষ হয়। সমাবেশ থেকে নাহিদ ইসলাম ঘোষণা দেন, আগামী ৪ জুলাই পর্যন্ত দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান ও পরীক্ষার বর্জন চলবে। তিনি তিন দিনের কর্মসূচিও ঘোষণা করেন- ২ জুলাই দেশব্যাপী মহাসড়কে মিছিল, ৩ ও ৪ জুলাই রাজধানীর রাজু ভাস্কর্যে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত সরকারি কলেজ এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সমাবেশ। সমাবেশে নাহিদ ইসলাম ঘোষণা দেন- ৪ জুলাই পর্যন্ত দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন চলবে। সেই সাথে তিনি চারটি দাবি উত্থাপন করেন- ১. দ্রুত কোটা সংস্কারে কমিশন গঠন, যেন পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠী উপকৃত হয়। ২. কোটা পূরণ না হলে মেধাভিত্তিক নিয়োগ নিশ্চিত করা। ৩. নিয়োগে একাধিকবার কোটা সুবিধা ব্যবহার বন্ধ করা। ৪. প্রশাসনে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।

মৌলভীবাজারে ডা. কুতুব উদ্দিন অ্যাডুকেশন ট্রাস্টের সীরাত প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

আপডেট সময় ০৬:৩৩:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৪

মৌলভীবাজারে আলহাজ ডা. মুহাম্মদ কুতুব উদ্দিন এডুকেশন ট্রাস্টের আয়োজনে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষ্যে সীরাত প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে।

শনিবার (৫ অক্টোবর) মৌলভীবাজার শহরের কাশীনাথ আলাউদ্দিন হাই স্কুল এন্ড কলেজে সকাল সাড়ে ১০টায় প্রতিযোগিতার লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন স্কুল ও মাদরাসার তিন শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।

মৌলভীবাজার পৌরসভার হলরুমে আলহাজ ডা. মুহাম্মদ কুতুব উদ্দিন অ্যাডুকেশন ট্রাস্টের চেয়ারম্যান মো. ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও রাজনগর ডিএস ফাজিল মাদরাসার আরবি প্রভাষক মাওলানা শফিকুল আলম সুহেলের পরিচালনায় বিজয়ীদের নিয়ে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শুরু হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ ফজলুর রহমান।

বিশেষ অতিথি ছিলেন কাশিনাথ আলাউদ্দিন হাই স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ কামাল হোসেন, তালামীযে ইসলামিয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক ও ট্রাস্টি আহমদ রায়হান ফারহি, মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র সাংবাদিক সরওয়ার আহমদ, সমাজসেবক একলাছুর রহমান, চ্যানেল এসের ব্যবস্থাপক মো. খালেদ চৌধুরী, যুগান্তরের জেলা প্রতিনিধি হোসাইন আহমদ।

বক্তব্য রাখেন খালিশপুর রহমানিয়া সিনিয়র আলীম মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ আব্দুল বাছিত, মাড়কোনা দাখিল মাদরাসার সুপার ও ট্রাস্টি মুফতি মাওলানা মো. রুহুল আমিন, সাধুহাটি আব্দুল বারী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো: জয়নাল মিয়া, শাহ হেলাল উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মো: মোশাররফ হোসেন, ট্রাস্টের অন্যতম পরিচালক মাওলানা জহিরুল ইসলাম, সাপ্তাহিক পূর্বদিকের সম্পাদক সাপ্তাহিক মুজাহিদ আহমদ, পূর্বদিকের সহযোগী সম্পাদক সালাহ উদ্দিন ইবনে শিহাব, তালামীযে ইসলামিয়ার মৌলভীবাজার জেলা সভাপতি আলী রাব্বি রতন, সাধারণ সম্পাদক মো. নাসির খান, শ্যামেরকোনা দাখিল মাদরাসার সুপার মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক, দৈনিক কালবেলার মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি ওমর ফারুক নাঈম, সদর উপজেলা তালামীযের সভাপতি মো: গিয়াস উদ্দিন রাফি, সহ-সভাপতি ছায়েম আহমদ, সাধারণ সম্পাদক মো: বদরুল ইসলাম।

পর্যবেক্ষক ও বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন রাজনগর দারুচ্ছুন্নাহ ফাজিল (ডিগ্রী) মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক মো: আলকামুন, আরবি প্রভাষক মাওলানা মো: আব্দুশ শাকুর, সমাজবিজ্ঞানের প্রভাষক মো: জসিম উদ্দিন, সিনিয়র শিক্ষক মো: সুয়াইবুর রহমান খান, মো: আব্দুর রাজ্জাক, মোঃ মুনিবুর রহমান তালুকদার। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পারভেজ আহমদ, ইফতেখার আহমদ সনি, হাফিজ আব্দুল ওয়াহিদ, হাফিজ এনামুল হক প্রমুখ।

ষষ্ট ও সপ্তম শ্রেণী ক গ্রুপ এবং ৮ম ও ১০ম শ্রেণী খ গ্রুপ। এই দুগ্রুপে ৩ জন করে ৬ জনকে নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়। প্রতিযোগিতায় ক গ্রুপের প্রথম বিজয়ী আলী আমজদ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ফারিহা তাবাসসুমকে ৫ হাজার, দ্বিতীয় পুরস্কার বিজয়ী দি ফ্লাওয়ার্স কে.জি এন্ড হাই স্কুলের আদ্রিতা জুহিন ৩ হাজার ও তৃতীয় পুরস্কার বিজয়ী হাফিজা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নাফিছা আলম সাউদাকে ২ হাজার টাকা পুরস্কার এবং প্রতিযোগিতায় খ গ্রুপের প্রথম বিজয়ী বাহারমর্দান জয়গুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের তাহমিদা আক্তার ৫ হাজার, দ্বিতীয় পুরস্কার বিজয়ী আপ্তাব উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের রহিমা আক্তার নিশিতাকে ৩ হাজার, তৃতীয় পুরস্কার বিজয়ী লতিফিয়া হিফজুল কোরআন মাদরাসার মাহের ইসলাম রাহিকে নগদ ২হাজার টাকা পুরস্কার প্রদান করা হয়। এছাড়া আরো ১২ জনকে বিশেষ পুরস্কার প্রদান করা হয়। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী সকলকে বিশেষ উপহার হিসাবে মগ প্রদান করা হয়।