নবীগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি দুর্ভোগ কমেনি বন্যার্ত মানুষের
নবীগঞ্জ উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হলেও দুর্ভোগ কমেনি বন্যা কবলিত মানুষের। কমতে শুরু করেছে কুশিয়ারা নদীর পানি। বাড়িঘরের পানি পুরোপুরি নামতে ৮-১০দিন সময় লাগতে পারে বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা। তবে এখনো পানি পানিবন্ধী অর্ধলক্ষাধিক মানুষ। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয়রা জানায়, কুশিয়ারা নদীর পানি বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দ্রুত বৃদ্ধি পায়। তবে শুক্রবার বিকেল থেকে পানি কমতে শুরু করে। শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় কুশিয়ারা নদীর পানি শেরপুর পয়েন্টে বিপদসীমার ১১, মার্কুলি পয়েন্টে ৩৭ এবং আজমিরীগঞ্জে ৬৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
গত কয়েকদিন ধরে উজানের পাহাড়ি ঢল ও টানাবৃষ্টিতে কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে কুশিয়ারা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করতে থাকে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরের পর দীঘলবাক ইউনিয়নের দক্ষিণ কসবা গ্রামের পাকা সড়ক ভেঙে দ্রুত গতিতে বিভিন্ন গ্রামে পানি প্রবেশ করে। এতে ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের রাজনগর, উমরপুর, মোস্তফাপুর, দণিগ্রাম, পাঠানহাটি, মনসুরপুর, দরবেশপুর, দিঘীরপাড়, নোয়াগাঁও, চন্ডিপুর, প্রজাতপুর, লামলীপাড়, দীঘলবাক ইউনিয়নের রাধাপুর, ফাদুল্লাহ, দুর্গাপুর, মথুরাপুর, হোসেনপুর, মাধবপুর, পশ্চিম মাধবপুর, গালিমপুর, আউশকান্দি ইউনিয়নের পাহাড়পুর, পারকুল, উমরপুর, দীঘর ব্রাহ্মণগ্রাম, বড় ভাকৈর (পশ্চিম) ইউনিয়নের সোনাপুর, চরগাঁও, বড় ভাকৈর (পূর্ব), করগাঁও, কালিয়াভাঙ্গা, দেবপাড়া ও কুর্শি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়। সুনামগঞ্জ-জগন্নাথপুর-আউশকান্দি আঞ্চলিক মহাসড়কসহ ১০টি পাকা সড়ক বন্যার পানিতে তলিয়ে যায় । এতে বন্ধ রয়েছে যানচলাচল।
কুশিয়ারা নদী ঘেঁষা ইনাতগঞ্জ ও দীঘলবাক ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা বন্যার পানিতে যায়। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় মৎস্য খামারীদের বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করায় ১৪টি আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয় বন্যার্ত মানুষ। গত শুক্রবার ও শনিবার সকাল থেকে বৃষ্টি না হওয়ায় কুশিয়ারা নদীর পানি কমতে শুরু করে। বন্যা কবলিত বাড়িঘর থেকে পুরোপুরি পানি না কমলেও ধীরে ধীরে পানি কমতে শুরু করেছে। বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও বন্যার্ত মানুুষের দুর্ভোগ থেমে নেই। পর্যাপ্ত পরিমান খাদ্য সহায়তা না পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে বন্যার্ত মানুষের। মোস্তফাপুর গ্রামের রকিব মিয়া বলেন- বাড়িতে কোমর পানি, তবুও বাড়িঘরে খুব কষ্টে গরু-ছাগল নিয়ে আছি, পানি কিছুটা কমেছে। ইনাতগঞ্জ গ্রামের রুমান আহমেদ বলেন- দুইদিন ধরে আকাশে রৌদ দেখা যাচ্ছে, পানিও কিছুটা কমেছে, ফের বৃষ্টিপাত না হলে পুরোপুরি পানি বাড়িঘর থেকে নামতে ৮-১০দিন সময় লাগবে। নবীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহীন দেলোয়ার জানান, বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হচ্ছে, আমরা সবসময় বন্যা কবলিত মানুষের পাশে আছি, ইতিমধ্যে খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।