সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৫৯ পূর্বাহ্ন

খবরের শিরোনাম:

অনলাইন জুয়ায় রাতারাতি কোটিপতি সাগর

অলি আহমদ মাহিন, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: কয়েকবছর আগে সেলুনে কাজ করতেন সাগর বৈদ্য। এখন কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক তিনি। গড়ে তুলেছেন সমবায় সমিতি। সবকিছুর পেছনে লুকিয়ে আছে সাগরের অনলাইন জগতের অদৃশ্য নেটওয়াকিং।

বিভিন্ন গেইমিং ও জুয়ার সাইটে বাজি ধরে লাখ লাখ টাকা কামিয়েছেন। অনলাইন জুয়ার প্লাটফর্ম গড়ে তুলে রাতারাতি কোটিপতি হয়ে এখন বিলাসবহুল জীবনযাপন করছেন তিনি। পুলিশের হাতে গ্রেফতারও হয়েছেন, তবুও থাকেনি তার জুয়া প্লাটফর্ম। অনুসন্ধানে জানা যায়, দুইবছর আগে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের হবিগঞ্জ রোডের জেন্টস পালারে কাজ করতেন সাগর বৈদ্য। সেখান থেকেই শুরু করেন অনলাইনে জুয়া খেলা। কয়েকদিন যেতে না যেতেন তার জীবনের চাকা উল্টে যায়। হয়ে উঠেন কোটিপতি।কয়েকবছরের মধ্যে সাগরের ব্যবসাও বাড়তে থাকে।

শ্রীমঙ্গলের নতুন বাজারের ফার্ম ফ্রেশ মিট জোন নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেন। সাঘরদিঘি রোডে সুমনা পোল্টি হাউজ নামে আরেকটি পশুখাদ্য বিক্রির প্রতিষ্ঠানের মালিকও তিনি। সবই হয়েছে রাতারাতি। এছাড়া তিনি গড়ে তুলেছেন আশার আলো শ্রমজীবি সমবায় সমিতি নামে একটি সমিতি। যার মাধ্যমে গড়ে তুলেছেন দাদন ব্যবসা।

এসব কিছুর পেছনে সাগরের অনলাইন জুয়ার নেটওয়ার্ক। ২০২১ সালের ১৪ এপ্রিল জুয়া খেলার দায়ে (৪৬/২১) গ্রেফতার করে পুলিশ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শ্রীমঙ্গলের ব্যবসায়ী বলেন, সাগর কাতার প্রবাসীদের নিয়েও জুয়ার প্লাটফর্ম নিয়ন্ত্রণ করেন। কয়েকবছর আগে সে ছিল সেলুনের দোকানদার। এখন বনে গেছেন কোটি কোটি টাকার মালিক। শ্রীমঙ্গলের শতাধিক অনলাইন স্কেমার ও জুয়ারিকে সাগর জুয়া খেলা শেখাতে ও ডলার দিতে সহায়তা করেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, শ্রীমঙ্গল উপজেলায় প্রায় শতাধিক কিশোর ও তরুণ নিষিদ্ধ অনলাইন স্ক্যামিংয়ে জড়িত। সাইবার অপরাধের মাধ্যমে ডলার কামানোর মোহে পড়েছেন গৃহবধ‚ ও স্কুল-কলেজগামী ছাত্রীরাও। এই পরিসর দিনদিন বাড়ছে। প্রশাসন যতবেশি তৎপরতা চালাচ্ছেন, তারচেয়েও বেশি সংঘবদ্ধভাবে অপরাধে জাড়াচ্ছেন অপরাধীরা। স্ক্যামিং এক অনলাইনকেন্দ্রিক প্রতারণার ফাঁদ। স্ক্যামাররা অনলাইনে যৌন-সংক্রান্ত ফাঁদ পেতে দেশি-বিদেশি ব্যবহারকারীদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছেন।

 

এছাড়া বিভিন্ন সম্পত্তি কেনা-বেচার মধ্যাস্থতাও করেন তারা। দ্রুত ধনী হওয়ার প্রতিযোগিতায় এই অন্ধকার গলিতে কোনো কিছু না ভেবেই পা বাড়াচ্ছেন উঠতি বয়সীরাও। রফিক নামের অনলাইন স্ক্যামার বলেন, ওয়ানএক্সব্যাট, মিলব্যাটসহ বিভিন্ন প্লাটফর্মে গেম খেলে ও বাজি ধরে এসব জায়গা থেকে ডলার আসে। আবার অভিজ্ঞ স্ক্যামাররা গ্রাহকদের সঙ্গে চ্যাট করেন।

তারা ব্যক্তিগত তথ্য, পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স সংগ্রহের পর বিশেষ কায়দায় অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হয়। এবিষয়ে জনাতে চাইলে সাগর বৈদ্যকে বলেন, আমি কিভাবে কি করেছি, আপনাকে জানানোর কে?। অনলাইনে কি করি না করি আপনি জানার কিছু নেই। এসব জেনে আপনার কি দরকার। এবিষয়ে শ্রীমঙ্গল সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান বলেন, অনলাইনে জুয়া সম্পূর্ণ অবৈধ। কেউ এই ধরণের প্লাটফর্ম তৈরী করলে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নিবে।

এই নিউজটি আপনার ফেসবুকে শেয়ার করুন

© shaistaganjerbani.com | All rights reserved.