শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৭:৪৯ অপরাহ্ন

সাংবাদিক সেলিম চৌধুরী শায়েস্তাগঞ্জ প্রেসক্লাবের উন্নয়ন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কাজ করে গেছেন

মঈনুল হাসান রতন শায়েস্তাগঞ্জের প্রেসক্লাবের বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সহসভাপতি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার শরিফাবাদ গ্রামের কৃতি সন্তান এ.কে.এম ফজলুল হক চৌধুরী সেলিম আজ আমাদের মাঝে নেই। সেই নব্বই দশকের শায়েস্তাগঞ্জে সাংবাদিকতা শুরু করে মৃত্যু অবধি পর্যন্ত সাংবাদিকতা করে গেছেন। সাংবাদিকতায় তার অনেক স্মৃতি আজ আমাদের সামনে। যা ভুলার নয় কোনদিন। পলকে পলকে সেই স্মৃতিগুলি ভেসে আসছে চোখের সামনে। শায়েস্তাগঞ্জ প্রেসক্লাব ১৯৭৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে অনেকেই ক্লাবের সদস্য হয়েছেন তার মধ্যে তিনি ১৯৯৩ সালে প্রেসক্লাবে সদস্য হিসেবে যোগদান করেন। বাংলাবাজার পত্রিকায় দীর্ঘদিন কাজ করেছেন তার সাথে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) জেলা প্রতিনিধি হিসেবে সুনামের সহিত কাজ করে গেছেন। প্রেসক্লাবে কমিটিতে অনেকবার সহসভাপতি সর্বশেষ কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সেলিম চৌধুরী ছিলেন একজন সাদামাটা ও শান্তপ্রিয় প্রকৃতির লোক। আজ তিনি আমাদের মাঝে নেই কিন্তু তার স্মৃতি রয়ে গেছে ক্লাবের প্রত্যেকটি সদস্যের অন্তরে। শায়েস্তাগঞ্জ প্রেসক্লাবের উন্নয়ন প্রেসক্লাবের সুনাম বৃদ্ধির লক্ষ্যে তিনি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কাজ করে গেছেন। আমি যখন শায়েস্তাগঞ্জ প্রেসক্লাবে যুগ্ম সম্পাদক পদে নির্বাচিত হই তখন তিনি বলেছিলেন প্রেসক্লাবে নিস্বার্থভাবে কাজ করে যারা তারা একদিন ঠিকই উপরে উঠবে। তার এই কথার অনুপ্রেরণায় আজ আমি পর পর তিনবার সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। প্রেস ক্লাবের নির্বাচন আসলেই তিনি বিভিন্নভাবে পরামর্শ দিতেন নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে। ১লা ফেব্রুয়ারি হঠাৎ সকাল বেলা শুনি সেলিম ভাই হৃদ রোগে আক্রান্ত হয়ে হবিগঞ্জ হাসপাতালে খবর পেয়েই ছুটে যাই হাসপাতালে গিয়ে দেখি সিলেট যাওয়ার জন্য এ্যাম্বুলেন্সে উঠবেন। আমি বলি কি হয়েছে আপনার বলেন বুকে ব্যাথা, দোয়া কর আমি যেন সিলেট থেকে ভাল হয়ে আসতে পারি। সবাইকে অসুস্থতার খবর জানানোর জন্য বলে যান। সিলেট যাওয়ার পর বেশ কয়েকবার ফোনে কথা হয় উনার সাথে। তিনি যে অসুস্থ বোঝার কোন উপায় নেই। শুধু বলতে দুয়েক দিন পর চলে আসব বাড়িতে। জীবিত অবস্থায় আসা হল না তার বাড়িতে। ০২ ফেব্রুয়ারি রাত দশটার দিকে ফোন দেই খবর নেওয়ার জন্য তখন ও তিনি বলেন যে ভাল আছি এটাই ছিল শেষ কথা। রাত দেড়টার দিকে আবার ও হৃদ রোগে আক্রান্ত হয়ে না ফেরার দেশে চলে যান তিনি। সেলিম ভাইয়ের সাথে সম্পর্কটা ছিল গভীর। সবসময় আমাকে প্রেসক্লাবের বিষয় নিয়ে পরামর্শ, দিক নির্দেশনা দিতেন। প্রেসক্লাবের উৎসব ও ম্যাগাজিনের বিষয়ে তার পরামর্শ ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ কিভাবে উৎসব হবে, ম্যাগাজিন হবে সেটাই ছিল তার মুখে। আমরা যখন এবছর নির্বাচিত হই পরের মিটিংয়ে কিভাবে উৎসব করা যায় সে বিষয়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে গেছেন। প্রেসক্লাবের উৎসব হবে, ম্যাগাজিন হবে কিন্তু সেলিম ভাই থাকবেনা সেটা কোনদিন ও কল্পনা করতে পারিনি। উৎসবের ম্যাগাজিনে তার লেখা যাবে, ছবি যাবে কিন্তু তার উপস্থিতি থাকবে না সেটা মানতে বড় কষ্ট হচ্ছে। আরকি কোনদিন সন্ধ্যা হলেই প্রেসক্লাবে এসে বলবেন না এই রমিজ ভাই এককাপ চা আর ১০ টাকা পান আন। প্রেসক্লাবের প্রতিটি অনুষ্ঠানে তার উপস্থিতি আমাদেরকে মুগ্ধ করত। আমাদের সাথে তার এই চলাফেরা এখন শুধু স্মৃতি হয়ে থাকবে। কোনদিন আর ফিরে পাব না সেটা ভাবতেই খুবই কষ্ট হচ্ছে। যাইহোক মহান আল্লাহ তাকে ওপারে ভাল রাখবেন এই কামনায় করি।

এই নিউজটি আপনার ফেসবুকে শেয়ার করুন

© shaistaganjerbani.com | All rights reserved.