পাখির অভয়াশ্রম ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা জাহাঙ্গীর মাস্টারের বাড়ি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার বায়েক ইউনিয়নের সাগরতলা গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত প্রবীণ শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম মাস্টারের বাড়িতে বসতবাড়ির বিভিন্ন গাছে বাসা বেঁধে বংশবিস্তার করছে বক, সারস, পানকৌড়ি, রাতচরা ও ঘুঘুসহ নানা প্রজাতির অতিথি পাখি।
কিচিরমিচির শব্দে মুখরিত পুরো এলাকা। আশির দশক থেকেই অতিথি পাখিরা তার বাড়ির গাছগুলোতে বাসা বাঁধতে শুরু করে। পাখি আসে এবং গাছের ডালে বাসা বেঁধে বংশবিস্তার করে আবার বছরের শেষ দিকে চলে যায় অন্য অজানায়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার সীমান্তঘেষা সাগরতলা গ্রামের প্রবীণ শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম মাস্টারের বাড়িটি এখন অতিথি পাখিদের আপন নীড়। নিরাপদ অভয়াশ্রমে পরিণত হয়েছে বাড়ির গাছপালাগুলো।
আশ্রয় নেওয়া পাখিগুলোকে মায়ার বন্ধনে আবদ্ধ করে নিয়েছেন প্রবীণ এই শিক্ষক। দীর্ঘ প্রায় চার দশক ধরে সন্তানের মতো ভালোবাসা দিচ্ছেন। শিকারের চেষ্টা করতে এসে অনেক শিকারি লাঞ্ছিত হয়েছেন তার কাছে। এখন কেউ শিকারের চেষ্টাও করে না। পাখির বিষ্ঠায় তার ঘর-বাড়ির ও পরিবেশের কিছুটা ক্ষতি হলেও পরম মমতায় এদের আগলে রাখতে ভালো লাগে তার। এই বাড়ির গাছ-গাছালি ছাড়া অন্যকোনো গাছে বসে না। বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন লোকজন দেখতে আসেন পাখির এই অভয়াশ্রম।
বাড়িতে অভয়াশ্রম থাকার কারণে উপজেলার সব জায়গায় জাহাঙ্গীর মাস্টার এখন একটি পরিচিত নাম। পাখিদের সঙ্গে তার একটা বন্ধন সৃষ্টি হয়ে গেছে।প্রবীন শিক্ষক জাহাঙ্গীর মাস্টার বলেন, আমার বাড়িতে থাকা এই পাখির হাঁক-ডাক ও কিচিরমিচির শব্দেই এখন অবসর সময় পার করছি। প্রায় ৪০ বছর ধরে এই পাখি এবং স্কুলের শিশুদের নিয়েই সময় কাটিয়েছি। পাখিদের সঙ্গে আমার নীরব ভালোবাসা তৈরি হয়ে গেছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা তারেক মাহমুদ বলেন, শুনেছি একজন প্রবীণ শিক্ষকের বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে গড়ে উঠেছে পাখির অভয়াশ্রম। বছরের একটা সময় আসে আবার চলেও যায়। তবে চিকিৎসার বিষয়ে আমাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ শাহরিয়ার মুক্তার বলেন, এই অভয়াশ্রমটি একটি ব্যক্তিগত জায়গায়। জাহাঙ্গীর আলম মাস্টার যদি উপজেলা প্রশাসনের নিকট লিখিত আবেদন করেন তাহলে এই অভয়াশ্রমের রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়টি প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়সহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।