মাইকে ঘোষণা দিয়ে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষ, আহত পাঁচশতাধিক
হবিগঞ্জের বাহুবলে পাওনা টাকাকে কেন্দ্র করে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে দুই গ্রামের মানুষের মাঝে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ১০ ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে মিরপুর বাজার রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
এতে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ায় সাংবাদিকসহ কমপক্ষে ৫ শতাধিক এলাকাবাসী আহত হয়েছেন। এ সময় বশির প্লাজার সামনে থাকা একটি মোটরসাইকেলও পুড়িয়ে দেয় সংঘর্ষকারীরা।
সোমবার (২৬ আগস্ট) রাত ও মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) সকালে উপজেলার মিরপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটে। পরে আহতদের উদ্ধার করে বাহুবল ও হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালসহ স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
জানা যায়, সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় উপজেলার মিরপুর বাজারে টাকা পাওনাকে কেন্দ্র করে একই উপজেলার লামাতাসি গ্রামের ট্রেইলার আলফু মিয়ার সঙ্গে বানিয়াগাঁও গ্রামের আকল আলীর ছেলে আল আমিনের কথা কাটাকাটি হয়।
বিষয়টি সমাধান করার জন্য বানিয়াগাঁও গ্রামের আ. শহিদ মিয়ার ছেলে সাদ্দাম মিয়া চেষ্টা করলে তার উপর হামলা চালায় আলফু মিয়ার লোকজন।
বিষয়টি উভয়পক্ষের গ্রামের লোকজনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে মিরপুর বাজারে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
জহিরুল হক জানান, পাওনা টাকাকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পরে মাইকে ঘোষণা দিয়ে বলা হয়- যার যা কিছু আছে তা নিয়ে বের হন।
বানিয়াগাঁও গ্রামের শফিক মিয়া জানান, পরে লামাতাসি ও বানিয়াগাঁও গ্রামের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র ও ইটপাটকেল নিয়ে মিরপুর বাজারে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
উভয় পক্ষের লোকজন মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে লামাতাসি গ্রামের পক্ষে ৫ গ্রাম ও বানিয়াগাঁও গ্রামের পক্ষে ৮ গ্রামের লোকজন সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। দুই পরগনার লোকজনের মধ্যে চলে ইটপাটকেল নিক্ষেপ। গভীর রাত পর্যন্ত চলে এ সংঘর্ষ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এক পর্যায়ে বশির প্লাজার সামনে থাকা পুবালী ব্যাংকের এক কর্মকর্তার একটি মোটরসাইকেল ও কিছু চেয়ার জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।
আগুনের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভাতে চেষ্টা করে। পরে রাত সাড়ে ১২টায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে নিয়েেএলেও মঙ্গলবার আবারও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে উভয়পক্ষের লোকজন।
পশ্চিম জয়পুর গ্রামের সুমন জানান, মঙ্গলবার সকালে শালিসকারীরা গণিজাহান কমপ্লেক্সে বসে।
এক পর্যায়ে মিরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শামীমকে নিয়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে লামাতাসি গ্রামের লোকজনদের কাছে গেলে তারা চেয়ারম্যানের উপর হামলা করে।
এ খবর ৮ গ্রামের লোকজনের মাঝে ছড়িয়ে পড়লে আবারও সংঘর্ষ শুরু হয়। বৃষ্টির মতো চল ইটপাটকেল নিক্ষেপ। এ সংঘর্ষ চলে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত।
সংঘর্ষের খবর পেয়ে চুনারুঘাট উপজেলা পরিষদের সদ্য বিদায়ী উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ লিয়াকত হাসান, হবিগঞ্জ জেলা বিএনপি, জামায়াত ও স্থানীয় নেতারা লাল প্লাগ উড়িয়ে সংঘর্ষকারীদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন।
সংঘর্ষ শেষ হলে বিকেল ৪টার দিকে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান চলাচল স্বাভাবিক করে।
বাহুবল মডেল থানার ওসি মো. মশিউর রহমানকে কয়েকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।