ঢাকা ০৩:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হবিগঞ্জে ধান-চাল সংগ্রহে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক

বোরো মৌসুমে হবিগঞ্জে সরকারিভাবে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান শুরুর তিন মাসে লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকও অর্জন হয়নি। নির্দেশনা অনুযায়ী ধান-চাল সংগ্রহ কার্যক্রম শুরুর তিন মাস অতিবাহিত হওয়ার পর আর মাত্র এক মাস সময় বাকি আছে। বেঁধে দেওয়া সময়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন প্রায় অসম্ভব বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, বোরো মৌসুমে জেলায় ১ লাখ ২৩ হাজার ৭৩৭ হেক্টর জমিতে প্রায় ৫ লাখ ২০ হাজার ৬৫০ টন ধান উৎপাদন হয়। এ থেকে ১৪ হাজার ৭৬০ টন ধান, ১৪ হাজার ৯৬৬ টন সেদ্ধ চাল ও চার হাজার ৮৪৪ টন আতপ চাল সরকারি গুদামে সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এবার সরকারিভাবে ৩২ টাকা কেজি অর্থাৎ ১ হাজার ২৮০ টাকা মণ বোরো ধান, ৪৫ টাকা কেজি দরে সিদ্ধ চাল এবং ৪৪ টাকা কেজিতে আতপ চাল সংগ্রহ করা হচ্ছে।

গত ৩ এপ্রিল থেকে সরকারি গুদামে ধান-চাল সংগ্রহ শুরু হয়েছে। এ কার্যক্রম চলবে আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত। কিন্তু জেলার ৯টি উপজেলায় রোববার (২৮ জুলাই) পর্যন্ত তিন মাসে মাত্র চার হাজার ৭৭৬ টন ধান সংগ্রহ হয়েছে। এতে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে গেলে বাকি এক মাসে ধান সংগ্রহ করতে হবে আরও প্রায় ১০ হাজার টন। সেদ্ধ চাল সংগ্রহেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশ পিছিয়ে আছে হবিগঞ্জ। সেদ্ধ চাল সংগ্রহ হয়েছে সাত হাজার ২৩৬ টন। এছাড়া আতপ চাল সংগ্রহ হয়েছে ৩ হাজার ৭৯৮ টন সংগ্রহ হয়েছে। এ হিসেবে আতপ চাল সংগ্রহ আশানুরূপ বলে মনে করছেন জেলা খাদ্য কর্মকর্তারা।

হাওরাঞ্চলের কৃষকদের মতে, অল্প সময়ে এত ধান সংগ্রহ করা প্রায় অসম্ভব। আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় হিলালপুর গ্রামের ওয়ারিশ মিয়া জানান, সরকারের গুদামে ধান বিক্রি করতে গেলে অনেক প্রতিবন্ধকতার শিকার হতে হচ্ছে। ধান প্রদানকারী কৃষকদের তালিকা প্রণয়নেও নানা অনিয়ম হওয়ার অভিযোগ করেন তিনি।

হবিগঞ্জ সদর উপজেলার সুলতানশী গ্রামের এস আলম জানান, গুদামে ধান দেওয়া কৃষকদের পক্ষে অসম্ভব। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তালিকা প্রণয়ন করা হয়। এতে প্রকৃত কৃষকরা বঞ্চিত হচ্ছেন।

হবিগঞ্জ খাদ্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারি গুদামের তুলনায় খোলা বাজারে ধানের দাম প্রায় এক হাজার টাকা বেশি। এছাড়া সরকারের গুদামে ধান বিক্রির জন্য যে আর্দ্রতা নির্ধারিত, ধান সেই আর্দ্রতা পরিমাণ শুকালে ওজন কমে যায়। সেজন্য প্রান্তিক কৃষকরা সরকারের গুদামে ধান সরবরাহ করতে আগ্রহী না। এ জন্য সেদ্ধ চাল ও ধান সংগ্রহের গতি কম। এ কারণে ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বেঁধে দেওয়া সময় অর্থাৎ আগামী ৩১ আগস্টের পর আরও সময় বর্ধিত করা হতে পারে।

জেলা কারিগরী খাদ্য পরিদর্শক আব্দুল মতিন ভূইয়া বলেন, এ বছর হবিগঞ্জে ধান সংগ্রহে অনেকটা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। বন্যা ও দেশের চলমান পরিস্থিতির কারণে যথাসময়ে গুদামে ধান সংগ্রহ সম্ভব হয়নি। তবে বাকি সময়টুকুতে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সর্বাত্মক চেষ্টা করছেন তারা।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৮:২০:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ জুলাই ২০২৪
২০ বার পড়া হয়েছে

হবিগঞ্জে ধান-চাল সংগ্রহে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে শঙ্কা

আপডেট সময় ০৮:২০:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ জুলাই ২০২৪

বোরো মৌসুমে হবিগঞ্জে সরকারিভাবে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান শুরুর তিন মাসে লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকও অর্জন হয়নি। নির্দেশনা অনুযায়ী ধান-চাল সংগ্রহ কার্যক্রম শুরুর তিন মাস অতিবাহিত হওয়ার পর আর মাত্র এক মাস সময় বাকি আছে। বেঁধে দেওয়া সময়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন প্রায় অসম্ভব বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, বোরো মৌসুমে জেলায় ১ লাখ ২৩ হাজার ৭৩৭ হেক্টর জমিতে প্রায় ৫ লাখ ২০ হাজার ৬৫০ টন ধান উৎপাদন হয়। এ থেকে ১৪ হাজার ৭৬০ টন ধান, ১৪ হাজার ৯৬৬ টন সেদ্ধ চাল ও চার হাজার ৮৪৪ টন আতপ চাল সরকারি গুদামে সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এবার সরকারিভাবে ৩২ টাকা কেজি অর্থাৎ ১ হাজার ২৮০ টাকা মণ বোরো ধান, ৪৫ টাকা কেজি দরে সিদ্ধ চাল এবং ৪৪ টাকা কেজিতে আতপ চাল সংগ্রহ করা হচ্ছে।

গত ৩ এপ্রিল থেকে সরকারি গুদামে ধান-চাল সংগ্রহ শুরু হয়েছে। এ কার্যক্রম চলবে আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত। কিন্তু জেলার ৯টি উপজেলায় রোববার (২৮ জুলাই) পর্যন্ত তিন মাসে মাত্র চার হাজার ৭৭৬ টন ধান সংগ্রহ হয়েছে। এতে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে গেলে বাকি এক মাসে ধান সংগ্রহ করতে হবে আরও প্রায় ১০ হাজার টন। সেদ্ধ চাল সংগ্রহেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশ পিছিয়ে আছে হবিগঞ্জ। সেদ্ধ চাল সংগ্রহ হয়েছে সাত হাজার ২৩৬ টন। এছাড়া আতপ চাল সংগ্রহ হয়েছে ৩ হাজার ৭৯৮ টন সংগ্রহ হয়েছে। এ হিসেবে আতপ চাল সংগ্রহ আশানুরূপ বলে মনে করছেন জেলা খাদ্য কর্মকর্তারা।

হাওরাঞ্চলের কৃষকদের মতে, অল্প সময়ে এত ধান সংগ্রহ করা প্রায় অসম্ভব। আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় হিলালপুর গ্রামের ওয়ারিশ মিয়া জানান, সরকারের গুদামে ধান বিক্রি করতে গেলে অনেক প্রতিবন্ধকতার শিকার হতে হচ্ছে। ধান প্রদানকারী কৃষকদের তালিকা প্রণয়নেও নানা অনিয়ম হওয়ার অভিযোগ করেন তিনি।

হবিগঞ্জ সদর উপজেলার সুলতানশী গ্রামের এস আলম জানান, গুদামে ধান দেওয়া কৃষকদের পক্ষে অসম্ভব। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তালিকা প্রণয়ন করা হয়। এতে প্রকৃত কৃষকরা বঞ্চিত হচ্ছেন।

হবিগঞ্জ খাদ্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারি গুদামের তুলনায় খোলা বাজারে ধানের দাম প্রায় এক হাজার টাকা বেশি। এছাড়া সরকারের গুদামে ধান বিক্রির জন্য যে আর্দ্রতা নির্ধারিত, ধান সেই আর্দ্রতা পরিমাণ শুকালে ওজন কমে যায়। সেজন্য প্রান্তিক কৃষকরা সরকারের গুদামে ধান সরবরাহ করতে আগ্রহী না। এ জন্য সেদ্ধ চাল ও ধান সংগ্রহের গতি কম। এ কারণে ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বেঁধে দেওয়া সময় অর্থাৎ আগামী ৩১ আগস্টের পর আরও সময় বর্ধিত করা হতে পারে।

জেলা কারিগরী খাদ্য পরিদর্শক আব্দুল মতিন ভূইয়া বলেন, এ বছর হবিগঞ্জে ধান সংগ্রহে অনেকটা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। বন্যা ও দেশের চলমান পরিস্থিতির কারণে যথাসময়ে গুদামে ধান সংগ্রহ সম্ভব হয়নি। তবে বাকি সময়টুকুতে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সর্বাত্মক চেষ্টা করছেন তারা।