হবিগঞ্জে মেডিকেল কলেজে ৮ দফা দাবিতে বিক্ষোভ
হবিগঞ্জে শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজে ৮ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। রোববার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা অস্থায়ী ক্যাম্পাস জেলা সদর হাসপাতালের সামনে এ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বক্তব্য রাখেন শিক্ষার্থী ইয়াসিন আরাফাত রিংক, কাওসার আহমেদ, সৈয়দা তানজিম সুচী প্রমুখ।
এ সময় তারা বলেন- আমাদের ৮ দফা দাবি কৃর্তপক্ষকে জানিয়ে দিয়েছি। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরে যাব না। আগামী ৭২ ঘণ্টার ভেতরে দাবি পূরণ না হলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
তারা আরো বলেন- ৬টি সেশনের জন্য কলেজে মাত্র ৪টি ক্লাস রুম রয়েছে। যার ফলে ক্লাস নিতে মারাত্মক সমস্যা হচ্ছে। ১ম সেশনে ৫০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করার কথা থাকলেও গত সেশনে ১০০ জন ভর্তি করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের ৮ দফা দাবি হলো-
১) স্থায়ী ক্যাম্পাস ও পাঠদান সম্পর্কিত:
প্রতিটি ব্যাচের জন্য পরিপূর্ণ সুযোগ-সুবিধাসহ ক্লাসরুমের ব্যবস্থা করতে হবে। স্থায়ী ক্যাম্পাসের রূপরেখা প্রণয়ন করতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের সামনে তা উপস্থাপন করতে হবে।
২) আবাসন ও যাতায়ত ব্যবস্থা সম্পর্কিত:
মেডিকেল কলেজে অধ্যনরত প্রত্যেকের জন্য আবাসন ব্যবস্থা করতে হবে। মেডিকেল কলেজে অধ্যনরত মেয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ যাতায়াত ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
৩) রাজনীতি সম্পর্কিত:
মেডিকেল কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের সব প্রকার রাজনীতি নিষিদ্ধ মর্মে কলেজ কর্তৃপক্ষকে কর্তৃক নোটিশ প্রদান করতে হবে।
৪) সর্বপ্রকার শিক্ষক সংকট নিরসন ও উপস্থিতি নিশ্চিতকরণ প্রসঙ্গে:
মেডিকেল কলেজের প্রতিটি বিভাগে পর্যাপ্ত পরিমাণ শিক্ষক নিয়োগের জন্য জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। মেডিকেল কলেজের সব শিক্ষকের নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।
৫) মানোন্নয়ন সম্পর্কিত:
উক্ত ভবনের সপ্তম তলায় অপারেশন থিয়েটার, জীবাণুমুক্তকরণ পোস্ট অপারেটিভ কেয়ার ও ICU এর কাজ দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে। মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয় ভিসেরা, ক্যাডেভার ও ক্লিনিক্যাল ক্লাসের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক ডামি হালনাগাদ করতে হবে।
৬) বাজেট সংক্রান্ত:
মেডিকেল কলেজের বিগত দুই অর্থ বছরের বাজেট শিক্ষার্থীদের সামনে প্রকাশ করতে হবে। এ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের থেকে নামে বেনামে যতো ভর্তি ফি, পরীক্ষা ফি নেয়া হয়েছে তার হিসাব প্রকাশ করতে হবে।
৭) ধর্মীয় স্বাধীনতা ও কেবিন সম্পর্কিত:
প্রতিটি শিক্ষার্থীর ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। ধর্মীয় স্বাধীনতায় ব্যাঘাত সৃষ্টিকারীদের বিপক্ষে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য বাধ্যতামূলক কেবিনের ব্যবস্থা করতে হবে।
৮) অন্তর্ভুক্তি সম্পর্কিত:
আমাদের কলেজকে WDOMC এ অন্তর্ভুক্ত করার জন্যে দ্রুততম সময়ের মধ্যে পদক্ষেপ নিতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের অনুমোদন দেওয়া হয়। একই বছর শিক্ষার্থী ভর্তির প্রশাসনিক অনুমোদনও পায়। কিন্তু একাডেমিক ভবন নির্ধারণ না হওয়ায় সে বছর শিক্ষার্থী ভর্তি করা সম্ভব হয়নি। শেষ পর্যন্ত অস্থায়ী ক্যাম্পাস হিসেবে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা নির্ধারণ হলে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে ৫১ জন শিক্ষার্থী ভর্তির মাধ্যমে কলেজটির যাত্রা শুরু হয়।