ঢাকা ০৫:১৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo শায়েস্তাগঞ্জ থানার সাবেক ওসি কামালের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা: সাংবাদিকসহ ২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ Logo হবিগঞ্জে ছুরিকাঘাতে এসএসসি পরীক্ষার্থী নিহত Logo শেখ হাসিনাকে ৬ মাসের কারাদণ্ড Logo নবীগঞ্জে দুর্ঘটনা, নারীসহ নিহত ২ Logo মাধবপুর বাস ও পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ২০ Logo হবিগঞ্জে ভুয়া চিকিৎসকের একমাসের কারাদণ্ড Logo স্বৈরাচার পতনে ১৬ বছর অপেক্ষা নয়, তাৎক্ষণিক প্রতিরোধ গড়ার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার Logo বাংলাদেশের মানুষ কল্পনাও করেনি যে কেবল চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনই শেষ পর্যন্ত ‘জুলাই বিদ্রোহে’ রূপ নেবে। গত বছরের ১ জুলাই বাংলাদেশ এক অবিশ্বাস্য ঘটনার সাক্ষী হয়। এদিন শিক্ষার্থীদের ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন’ ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে’ রূপ নেয়। এটি ছিল প্রায় ১৬ বছরের স্বৈরতান্ত্রিক আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের সূচনাবিন্দু। মানুষ কল্পনাও করেনি যে শুরুতে কেবল চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনই শেষ পর্যন্ত ‘জুলাই বিদ্রোহে’ রূপ নেবে, শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ একত্রিত হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে বৃহত্তর গণআন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়বে। ছাত্রদের এই অসন্তোষের সূচনা ঘটে ২০১৮ সালের কোটা বাতিলের সরকারি প্রজ্ঞাপনকে হাইকোর্ট কর্তৃক অবৈধ ঘোষণা করার রায়ের পর। সরকার ২০১৮ সালে তীব্র ছাত্র আন্দোলনের চাপে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করেছিল। কিন্তু হাইকোর্টের রায়ে ৫৬ শতাংশ কোটা পুনঃপ্রবর্তিত হয়, যাতে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারীদের জন্য ১০ শতাংশ, পশ্চাৎপদ জেলার জন্য ১০ শতাংশ, সংখ্যালঘুদের জন্য ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ বরাদ্দ করা হয়। ছাত্ররা এই ব্যবস্থাকে মেধাবীদের প্রতি বৈষম্য হিসেবে মনে করে প্রতিবাদে রাস্তায় নামে। সরকার প্রতিবাদকারীদের কঠোরভাবে দমন করতে চাইলে পরিস্থিতি বিদ্রোহে রূপ নেয়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারপন্থী সন্ত্রাসীরা একযোগে আক্রমণ চালালে অন্তত ১ হাজার ৪০০ জন নিহত এবং প্রায় ২০ হাজার জন আহত হয়। স্বাধীনতা পরবর্তী ইতিহাসে এটা ছিল সবচেয়ে নিষ্ঠুর দমনপীড়ন। অনেকে বিশ্বাস করেন, এই জুলাই বিদ্রোহের মধ্য দিয়েই ২০০৮ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের পতন অনিবার্য হয়ে ওঠে। ২০২৪ সালের ১ জুলাই এই আন্দোলন পুরো মাত্রায় শুরু হলেও এর গোড়াপত্তন ঘটে ৫ জুন। ওইদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় রাস্তায় নামে। আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক এবং বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া তার ‘জুলাই : মাতৃভূমি অথবা মৃত্যু’ বইতে লিখেছেন, ‘৫ জুন বিকেলে আমি ঢাকা মেডিকেল কলেজের পাশে চানখারপুলে স্কুটি মেরামত করাচ্ছিলাম। তখন ফেসবুকে দেখি- হাইকোর্ট কোটা পুনর্বহাল করেছে। মনে হলো ২০১৮ সালের অর্জনগুলো ধূলিসাৎ হয়ে যাচ্ছে।’ এরপর কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে এক বৈঠকের মাধ্যমে প্রতিবাদ কর্মসূচির সূচনা হয়। রাত সাড়ে ৭টায় ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী’ ব্যানারে একটি মিছিল বের হয় এবং সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্যদিয়ে তা শেষ হয়। এই সমাবেশে তারা হাইকোর্টের রায়কে ‘মেধাবীদের সাথে তামাশা’ বলে প্রত্যাখ্যান করে। সমাবেশে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র, বর্তমানে জাতীয় নাগরিক পার্টি- এনসিপির প্রধান নাহিদ ইসলাম পরদিন ৬ জুন বিকেল ৫টায় রাজু ভাস্কর্যে সমাবেশের ঘোষণা দেন। প্রায় পাঁচ থেকে ছয় শ’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ওই মিছিলে অংশ নেয় এবং স্লোগান দেয়- ‘কোটা পদ্ধতি মানি না’, ‘হাইকোর্টের রায় মানি না’, ‘কোটা বাতিল করতেই হবে’। আসিফের বক্তব্যের সাথে একমত প্রকাশ করে নাহিদও ৫ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে তাদের প্রথম বৈঠকের কথা এবং কিভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সম্পৃক্ত করতে পেরেছিলেন তা স্মরণ করেন। নাহিদ পরে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ঈদুল আজহার ছুটির আগে মাত্র তিন দিন আন্দোলনের সুযোগ পেয়েছিলাম।’ ৬ জুন ঢাবি, জাহাঙ্গীরনগর, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, জগন্নাথসহ দেশের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা কোটা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করে। ৯ জুন শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল করে অ্যাটর্নি জেনারেল বরাবর একটি স্মারকলিপি জমা দেয়। এর প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করে। শুনানির দিন ধার্য হয় ৪ জুলাই। ১০ জুন আবারো মিছিল হয় এবং শিক্ষার্থীরা সরকারকে ৩০ জুনের মধ্যে ২০১৮ সালের প্রজ্ঞাপন পুনর্বহাল করতে আল্টিমেটাম দেয়, না হলে সর্বাত্মক আন্দোলন শুরু করার ঘোষণা দেয়। আসিফ স্মরণ করেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ৩০ জুন পর্যন্ত ঈদের ছুটি ঘোষণা করেছিল, তাই আমরা সেই দিনটিকে আল্টিমেটামের সময়সীমা হিসেবে নির্ধারণ করি। আমরা সরকারকে সতর্কও করেছিলাম- যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আমাদের দাবি পূরণ না হয়, তাহলে আমরা আবার আন্দোলন শুরু করব।’ ৩০ জুন সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ঘোষণা না আসায় ১ জুলাই ঢাবি, জগন্নাথ, জাবি, রাবি, চবি, বরিশাল ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমে পড়ে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কিছু সময়ের জন্য ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ব্যানারে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার প্রাঙ্গণ থেকে একটি মিছিল বের করে, যা রাজু ভাস্কর্যে শেষ হয়। সমাবেশ থেকে নাহিদ ইসলাম ঘোষণা দেন, আগামী ৪ জুলাই পর্যন্ত দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান ও পরীক্ষার বর্জন চলবে। তিনি তিন দিনের কর্মসূচিও ঘোষণা করেন- ২ জুলাই দেশব্যাপী মহাসড়কে মিছিল, ৩ ও ৪ জুলাই রাজধানীর রাজু ভাস্কর্যে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত সরকারি কলেজ এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সমাবেশ। সমাবেশে নাহিদ ইসলাম ঘোষণা দেন- ৪ জুলাই পর্যন্ত দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন চলবে। সেই সাথে তিনি চারটি দাবি উত্থাপন করেন- ১. দ্রুত কোটা সংস্কারে কমিশন গঠন, যেন পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠী উপকৃত হয়। ২. কোটা পূরণ না হলে মেধাভিত্তিক নিয়োগ নিশ্চিত করা। ৩. নিয়োগে একাধিকবার কোটা সুবিধা ব্যবহার বন্ধ করা। ৪. প্রশাসনে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। Logo হবিগঞ্জে শুঁটকি উৎপাদনে ভাটা Logo নবীগঞ্জ মসজিদে মাইকিং করে পুলিশের ওপর হামলা, আসামি ছিনতাই আটক ১৩

শায়েস্তাগঞ্জ থানার সাবেক ওসি কামালের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা: সাংবাদিকসহ ২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ

শায়েস্তাগঞ্জের বাণী ডেস্ক ,

হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ থানার সাবেক অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ নাজমুল হক কামালের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত বিভাগীয় মামলার তদন্ত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এক সাংবাদিক ও প্রাণ কোম্পানির অ্যাডমিন এহসানুল হাবিবসহ মোট দুজন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। ২ জুলাই হবিগঞ্জ ইন-সার্ভিস পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে এই সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এই মামলার তদন্ত করছেন হবিগঞ্জ ইন-সার্ভিস সেন্টারের পুলিশ সুপার মাহিদুজ্জামান, যিনি হাইওয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত আইজিপির নির্দেশে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। ২০২৩ সালে দুর্গাপূজা ও কমিউনিটি পুলিশিং ডে উপলক্ষে শায়েস্তাগঞ্জ থানার ওসি থাকা অবস্থায় নাজমুল হক কামাল স্থানীয় তিনটি শিল্প প্রতিষ্ঠান—অলিপুর স্কয়ার ডেনিমস লিমিটেড, তাফরিদ কটন মিলস ও হবিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের কাছে চাঁদা দাবি করেন বলে অভিযোগ উঠে। প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের নিকট ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা করে মোট ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকা চাওয়া হয়। অভিযোগ অনুযায়ী, এসব চিঠি প্রতিষ্ঠানের অফিসিয়াল হোয়াটসঅ্যাপেও পাঠানো হয়েছিল।
নাজমুল হক স্বাক্ষরিত আমন্ত্রণপত্রে লেখা ছিল, দুর্গাপূজা উপলক্ষে ৩০০ প্লেট কাচ্চি বিরিয়ানি, ৩০ কেজি জিলাপি, ৩০ কেজি মিষ্টি, ৩০০ পিস দই ও ফলমূল বাবদ ১ লাখ টাকা এবং কমিউনিটি পুলিশিং ডে উপলক্ষে আরও ৫০০ প্যাকেট খাবার, ব্যানার, মাইকিং, ক্যাপ ইত্যাদি বাবদ আড়াই লাখ টাকা করে সহযোগিতা চাওয়া হয়। এ বিষয়ে দেশব্যাপী আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে। পুলিশ প্রশাসন বিষয়টি আমলে নিয়ে তদন্তে নামে। হবিগঞ্জের তৎকালীন পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলী তদন্তের জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেন। কমিটির সদস্য ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) মো. শামসুল হক, সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. খলিলুর রহমান ও এসপি অফিসের বিশেষ শাখার পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম। কমিটির তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় নাজমুল হক কামালকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। বর্তমানে অভিযুক্ত পুলিশ পরিদর্শক নাজমুল হক কামাল রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত রয়েছেন। মামলাটি বিভাগীয় পর্যায়ে চলমান রয়েছে এবং একাধিক সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণের মধ্য দিয়ে তা চূড়ান্ত পর্যায়ের দিকে এগোচ্ছে বলে জানা গেছে। তদন্তকারী কর্মকর্তা হবিগঞ্জ ইন-সার্ভিস সেন্টারের পুলিশ সুপার মাহিদুজ্জামান বলেন, মামলাটি সুষ্ঠুভাবে নিষ্পত্তির লক্ষ্যে একাধিক সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করা হবে, বিষয়টি হাইওয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টার দেখছেন, উনি আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। এ ব্যাপারে আমি মন্তব্য করতে পারি না। অভিযুক্ত নাজমুল হক কামাল: তিনি নিজেকে এখনও নির্দোষ দাবি করেছেন। তৎকালীন তদন্তকারী কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. খলিলুর রহমান বলেন, প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। শায়েস্তাগঞ্জ সাবেক ওসি কামাল আওয়ামী লীগের দাপটে হকারসহ সাধারণ মানুষকে হয়রানি করতেন। টাকা ছাড়া কথাই বলতেন না, তিনি শায়েস্তাগঞ্জে থাকাকালীন সময়ে তার বিরুদ্ধে একাধিক ঘোষ বাণিজ্য, নিরীহ লোকজনকে হয়রানি এবং ভাঙারি ব্যবসায়ীর কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগও ছিল। অভিযোগ রয়েছে, তৎকালীন এক সদর এমপির দাপটে তিনি যা খুশি তাই করতেন এবং আওয়ামী লীগের সভা, মিটিং, মিছিলে স্বয়ং অংশগ্রহণ করে সভায় মাইক হাতে স্লোগান দিতেন, যা একজন পুলিশের দায়িত্বের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। সম্প্রতি একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে তিনি “জয় বাংলা, জাহির ভাই জিন্দাবাদ” বলে বক্তৃতা দিচ্ছেন। এখন যখন ফেঁসে গেছেন, নিজেকে বিএনপির লোক বলেও প্রচার করছেন! অথচ তার আমলে বিএনপি কর্মীরা ব্যাপক নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে । এবিষয়ে হাইওয়ে হেডকোয়াটারের অতিরিক্ত আইজিপি মোঃ দেলোয়ার হোসেন মিঞার ওয়াটস এ্যাপ নাম্বারে একাধিকবার কল করলেও সাড়া মিলেনি। তবে বিভাগীয় মামলার সার্বিক অগ্রগতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণে রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের গোপন সূত্র জানিয়েছে। এই মামলার তদন্ত চূড়ান্ত পর্যায়ে গেলে চাকুরী হারাতে পারেন তিনি। এবিষয়ে বিষয়ে এক সাক্ষী নুর উদ্দিন সুমন বলেন, সত্যের পক্ষে দাঁড়ানোই সাংবাদিকতা, আমি বিশ্বাস করি, সাংবাদিকতা মানে শুধু খবর লেখা নয়—মানুষের পক্ষে দাঁড়ানো, অন্যায়ের মুখোমুখি হওয়া। এই পথ সহজ না, কিন্তু ন্যায় ও বিবেকের কাছে দায়বদ্ধ বলে আমি কখনও পিছু হটিনি। নাজমুল হক কামালের মতো দুর্নীতিবাজ অফিসারের কারণে পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে; ওসি থাকাকালীন তিনি অনেক অসহায় মানুষকে হয়রানি ও নির্যাতন করেছেন। আমি আশা করি তার বিরুদ্ধে দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
একজন দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, মামলার চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন জমা পড়লেই পুলিশের উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্ত আসবে। প্রমাণিত হলে অভিযুক্ত কর্মকর্তার চাকরি হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে। অভিযুক্ত নাজমুল হক কামাল তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। তবে পুলিশের অভ্যন্তরীণ তদন্ত ও প্রাথমিক অনুসন্ধানে অভিযোগের যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে বলেই তাকে তাৎক্ষণিক বরখাস্ত করা হয়েছিল বলে জানায় পুলিশ প্রশাসনের একাধিক সূত্র। শিক্ষার্থী তোফাজ্জল বলেন দুর্নীতিগ্রস্ত একজন কর্মকর্তার কারণে গোটা পুলিশ বাহিনীর সুনাম নষ্ট হতে পারে না। চাঁদা দাবির প্রমাণ মিললেও স্থায়ী ব্যবস্থা ২১ মাসেও নেয়া হচ্ছেনা স্থায়ী ব্যবস্থা

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৫:১৭:৫৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ জুলাই ২০২৫
১ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশের মানুষ কল্পনাও করেনি যে কেবল চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনই শেষ পর্যন্ত ‘জুলাই বিদ্রোহে’ রূপ নেবে। গত বছরের ১ জুলাই বাংলাদেশ এক অবিশ্বাস্য ঘটনার সাক্ষী হয়। এদিন শিক্ষার্থীদের ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন’ ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে’ রূপ নেয়। এটি ছিল প্রায় ১৬ বছরের স্বৈরতান্ত্রিক আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের সূচনাবিন্দু। মানুষ কল্পনাও করেনি যে শুরুতে কেবল চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনই শেষ পর্যন্ত ‘জুলাই বিদ্রোহে’ রূপ নেবে, শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ একত্রিত হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে বৃহত্তর গণআন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়বে। ছাত্রদের এই অসন্তোষের সূচনা ঘটে ২০১৮ সালের কোটা বাতিলের সরকারি প্রজ্ঞাপনকে হাইকোর্ট কর্তৃক অবৈধ ঘোষণা করার রায়ের পর। সরকার ২০১৮ সালে তীব্র ছাত্র আন্দোলনের চাপে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করেছিল। কিন্তু হাইকোর্টের রায়ে ৫৬ শতাংশ কোটা পুনঃপ্রবর্তিত হয়, যাতে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারীদের জন্য ১০ শতাংশ, পশ্চাৎপদ জেলার জন্য ১০ শতাংশ, সংখ্যালঘুদের জন্য ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ বরাদ্দ করা হয়। ছাত্ররা এই ব্যবস্থাকে মেধাবীদের প্রতি বৈষম্য হিসেবে মনে করে প্রতিবাদে রাস্তায় নামে। সরকার প্রতিবাদকারীদের কঠোরভাবে দমন করতে চাইলে পরিস্থিতি বিদ্রোহে রূপ নেয়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারপন্থী সন্ত্রাসীরা একযোগে আক্রমণ চালালে অন্তত ১ হাজার ৪০০ জন নিহত এবং প্রায় ২০ হাজার জন আহত হয়। স্বাধীনতা পরবর্তী ইতিহাসে এটা ছিল সবচেয়ে নিষ্ঠুর দমনপীড়ন। অনেকে বিশ্বাস করেন, এই জুলাই বিদ্রোহের মধ্য দিয়েই ২০০৮ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের পতন অনিবার্য হয়ে ওঠে। ২০২৪ সালের ১ জুলাই এই আন্দোলন পুরো মাত্রায় শুরু হলেও এর গোড়াপত্তন ঘটে ৫ জুন। ওইদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় রাস্তায় নামে। আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক এবং বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া তার ‘জুলাই : মাতৃভূমি অথবা মৃত্যু’ বইতে লিখেছেন, ‘৫ জুন বিকেলে আমি ঢাকা মেডিকেল কলেজের পাশে চানখারপুলে স্কুটি মেরামত করাচ্ছিলাম। তখন ফেসবুকে দেখি- হাইকোর্ট কোটা পুনর্বহাল করেছে। মনে হলো ২০১৮ সালের অর্জনগুলো ধূলিসাৎ হয়ে যাচ্ছে।’ এরপর কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে এক বৈঠকের মাধ্যমে প্রতিবাদ কর্মসূচির সূচনা হয়। রাত সাড়ে ৭টায় ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী’ ব্যানারে একটি মিছিল বের হয় এবং সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্যদিয়ে তা শেষ হয়। এই সমাবেশে তারা হাইকোর্টের রায়কে ‘মেধাবীদের সাথে তামাশা’ বলে প্রত্যাখ্যান করে। সমাবেশে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র, বর্তমানে জাতীয় নাগরিক পার্টি- এনসিপির প্রধান নাহিদ ইসলাম পরদিন ৬ জুন বিকেল ৫টায় রাজু ভাস্কর্যে সমাবেশের ঘোষণা দেন। প্রায় পাঁচ থেকে ছয় শ’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ওই মিছিলে অংশ নেয় এবং স্লোগান দেয়- ‘কোটা পদ্ধতি মানি না’, ‘হাইকোর্টের রায় মানি না’, ‘কোটা বাতিল করতেই হবে’। আসিফের বক্তব্যের সাথে একমত প্রকাশ করে নাহিদও ৫ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে তাদের প্রথম বৈঠকের কথা এবং কিভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সম্পৃক্ত করতে পেরেছিলেন তা স্মরণ করেন। নাহিদ পরে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ঈদুল আজহার ছুটির আগে মাত্র তিন দিন আন্দোলনের সুযোগ পেয়েছিলাম।’ ৬ জুন ঢাবি, জাহাঙ্গীরনগর, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, জগন্নাথসহ দেশের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা কোটা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করে। ৯ জুন শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল করে অ্যাটর্নি জেনারেল বরাবর একটি স্মারকলিপি জমা দেয়। এর প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করে। শুনানির দিন ধার্য হয় ৪ জুলাই। ১০ জুন আবারো মিছিল হয় এবং শিক্ষার্থীরা সরকারকে ৩০ জুনের মধ্যে ২০১৮ সালের প্রজ্ঞাপন পুনর্বহাল করতে আল্টিমেটাম দেয়, না হলে সর্বাত্মক আন্দোলন শুরু করার ঘোষণা দেয়। আসিফ স্মরণ করেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ৩০ জুন পর্যন্ত ঈদের ছুটি ঘোষণা করেছিল, তাই আমরা সেই দিনটিকে আল্টিমেটামের সময়সীমা হিসেবে নির্ধারণ করি। আমরা সরকারকে সতর্কও করেছিলাম- যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আমাদের দাবি পূরণ না হয়, তাহলে আমরা আবার আন্দোলন শুরু করব।’ ৩০ জুন সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ঘোষণা না আসায় ১ জুলাই ঢাবি, জগন্নাথ, জাবি, রাবি, চবি, বরিশাল ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমে পড়ে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কিছু সময়ের জন্য ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ব্যানারে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার প্রাঙ্গণ থেকে একটি মিছিল বের করে, যা রাজু ভাস্কর্যে শেষ হয়। সমাবেশ থেকে নাহিদ ইসলাম ঘোষণা দেন, আগামী ৪ জুলাই পর্যন্ত দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান ও পরীক্ষার বর্জন চলবে। তিনি তিন দিনের কর্মসূচিও ঘোষণা করেন- ২ জুলাই দেশব্যাপী মহাসড়কে মিছিল, ৩ ও ৪ জুলাই রাজধানীর রাজু ভাস্কর্যে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত সরকারি কলেজ এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সমাবেশ। সমাবেশে নাহিদ ইসলাম ঘোষণা দেন- ৪ জুলাই পর্যন্ত দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন চলবে। সেই সাথে তিনি চারটি দাবি উত্থাপন করেন- ১. দ্রুত কোটা সংস্কারে কমিশন গঠন, যেন পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠী উপকৃত হয়। ২. কোটা পূরণ না হলে মেধাভিত্তিক নিয়োগ নিশ্চিত করা। ৩. নিয়োগে একাধিকবার কোটা সুবিধা ব্যবহার বন্ধ করা। ৪. প্রশাসনে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।

শায়েস্তাগঞ্জ থানার সাবেক ওসি কামালের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা: সাংবাদিকসহ ২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ

আপডেট সময় ০৫:১৭:৫৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ জুলাই ২০২৫

হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ থানার সাবেক অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ নাজমুল হক কামালের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত বিভাগীয় মামলার তদন্ত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এক সাংবাদিক ও প্রাণ কোম্পানির অ্যাডমিন এহসানুল হাবিবসহ মোট দুজন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। ২ জুলাই হবিগঞ্জ ইন-সার্ভিস পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে এই সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এই মামলার তদন্ত করছেন হবিগঞ্জ ইন-সার্ভিস সেন্টারের পুলিশ সুপার মাহিদুজ্জামান, যিনি হাইওয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত আইজিপির নির্দেশে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। ২০২৩ সালে দুর্গাপূজা ও কমিউনিটি পুলিশিং ডে উপলক্ষে শায়েস্তাগঞ্জ থানার ওসি থাকা অবস্থায় নাজমুল হক কামাল স্থানীয় তিনটি শিল্প প্রতিষ্ঠান—অলিপুর স্কয়ার ডেনিমস লিমিটেড, তাফরিদ কটন মিলস ও হবিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের কাছে চাঁদা দাবি করেন বলে অভিযোগ উঠে। প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের নিকট ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা করে মোট ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকা চাওয়া হয়। অভিযোগ অনুযায়ী, এসব চিঠি প্রতিষ্ঠানের অফিসিয়াল হোয়াটসঅ্যাপেও পাঠানো হয়েছিল।
নাজমুল হক স্বাক্ষরিত আমন্ত্রণপত্রে লেখা ছিল, দুর্গাপূজা উপলক্ষে ৩০০ প্লেট কাচ্চি বিরিয়ানি, ৩০ কেজি জিলাপি, ৩০ কেজি মিষ্টি, ৩০০ পিস দই ও ফলমূল বাবদ ১ লাখ টাকা এবং কমিউনিটি পুলিশিং ডে উপলক্ষে আরও ৫০০ প্যাকেট খাবার, ব্যানার, মাইকিং, ক্যাপ ইত্যাদি বাবদ আড়াই লাখ টাকা করে সহযোগিতা চাওয়া হয়। এ বিষয়ে দেশব্যাপী আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে। পুলিশ প্রশাসন বিষয়টি আমলে নিয়ে তদন্তে নামে। হবিগঞ্জের তৎকালীন পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলী তদন্তের জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেন। কমিটির সদস্য ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) মো. শামসুল হক, সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. খলিলুর রহমান ও এসপি অফিসের বিশেষ শাখার পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম। কমিটির তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় নাজমুল হক কামালকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। বর্তমানে অভিযুক্ত পুলিশ পরিদর্শক নাজমুল হক কামাল রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত রয়েছেন। মামলাটি বিভাগীয় পর্যায়ে চলমান রয়েছে এবং একাধিক সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণের মধ্য দিয়ে তা চূড়ান্ত পর্যায়ের দিকে এগোচ্ছে বলে জানা গেছে। তদন্তকারী কর্মকর্তা হবিগঞ্জ ইন-সার্ভিস সেন্টারের পুলিশ সুপার মাহিদুজ্জামান বলেন, মামলাটি সুষ্ঠুভাবে নিষ্পত্তির লক্ষ্যে একাধিক সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করা হবে, বিষয়টি হাইওয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টার দেখছেন, উনি আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। এ ব্যাপারে আমি মন্তব্য করতে পারি না। অভিযুক্ত নাজমুল হক কামাল: তিনি নিজেকে এখনও নির্দোষ দাবি করেছেন। তৎকালীন তদন্তকারী কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. খলিলুর রহমান বলেন, প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। শায়েস্তাগঞ্জ সাবেক ওসি কামাল আওয়ামী লীগের দাপটে হকারসহ সাধারণ মানুষকে হয়রানি করতেন। টাকা ছাড়া কথাই বলতেন না, তিনি শায়েস্তাগঞ্জে থাকাকালীন সময়ে তার বিরুদ্ধে একাধিক ঘোষ বাণিজ্য, নিরীহ লোকজনকে হয়রানি এবং ভাঙারি ব্যবসায়ীর কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগও ছিল। অভিযোগ রয়েছে, তৎকালীন এক সদর এমপির দাপটে তিনি যা খুশি তাই করতেন এবং আওয়ামী লীগের সভা, মিটিং, মিছিলে স্বয়ং অংশগ্রহণ করে সভায় মাইক হাতে স্লোগান দিতেন, যা একজন পুলিশের দায়িত্বের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। সম্প্রতি একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে তিনি “জয় বাংলা, জাহির ভাই জিন্দাবাদ” বলে বক্তৃতা দিচ্ছেন। এখন যখন ফেঁসে গেছেন, নিজেকে বিএনপির লোক বলেও প্রচার করছেন! অথচ তার আমলে বিএনপি কর্মীরা ব্যাপক নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে । এবিষয়ে হাইওয়ে হেডকোয়াটারের অতিরিক্ত আইজিপি মোঃ দেলোয়ার হোসেন মিঞার ওয়াটস এ্যাপ নাম্বারে একাধিকবার কল করলেও সাড়া মিলেনি। তবে বিভাগীয় মামলার সার্বিক অগ্রগতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণে রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের গোপন সূত্র জানিয়েছে। এই মামলার তদন্ত চূড়ান্ত পর্যায়ে গেলে চাকুরী হারাতে পারেন তিনি। এবিষয়ে বিষয়ে এক সাক্ষী নুর উদ্দিন সুমন বলেন, সত্যের পক্ষে দাঁড়ানোই সাংবাদিকতা, আমি বিশ্বাস করি, সাংবাদিকতা মানে শুধু খবর লেখা নয়—মানুষের পক্ষে দাঁড়ানো, অন্যায়ের মুখোমুখি হওয়া। এই পথ সহজ না, কিন্তু ন্যায় ও বিবেকের কাছে দায়বদ্ধ বলে আমি কখনও পিছু হটিনি। নাজমুল হক কামালের মতো দুর্নীতিবাজ অফিসারের কারণে পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে; ওসি থাকাকালীন তিনি অনেক অসহায় মানুষকে হয়রানি ও নির্যাতন করেছেন। আমি আশা করি তার বিরুদ্ধে দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
একজন দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, মামলার চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন জমা পড়লেই পুলিশের উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্ত আসবে। প্রমাণিত হলে অভিযুক্ত কর্মকর্তার চাকরি হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে। অভিযুক্ত নাজমুল হক কামাল তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। তবে পুলিশের অভ্যন্তরীণ তদন্ত ও প্রাথমিক অনুসন্ধানে অভিযোগের যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে বলেই তাকে তাৎক্ষণিক বরখাস্ত করা হয়েছিল বলে জানায় পুলিশ প্রশাসনের একাধিক সূত্র। শিক্ষার্থী তোফাজ্জল বলেন দুর্নীতিগ্রস্ত একজন কর্মকর্তার কারণে গোটা পুলিশ বাহিনীর সুনাম নষ্ট হতে পারে না। চাঁদা দাবির প্রমাণ মিললেও স্থায়ী ব্যবস্থা ২১ মাসেও নেয়া হচ্ছেনা স্থায়ী ব্যবস্থা