শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:১০ পূর্বাহ্ন

জি কে গউছসহ কারামুক্ত বিএনপি’র ৪০ নেতাকর্মী

ইশতিয়াক শোভনঃ হবিগঞ্জে বিএনপির সমাবেশে পুলিশের হামলা ও বিএনপি নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ এসল্ট মামলায় ১৬ দিন কারাভোগের পর মুক্তি পেয়েছেন আলহাজ্ব জি কে গউছসহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের ৪০ নেতাকর্মী। গতকাল বুধবার বিকাল সাড়ে ৫টায় হবিগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে তারা কারামুক্ত হন। গত সোমবার (১৪ ফেব্রæয়ারী) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মোঃ সেলিমের হাইকোট বেঞ্চ তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।

হাইকোর্টে আসামীপক্ষে মামলার শুনানী করেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবি ফোরামের সভাপতি এডভোকেট ফজলুর রহমান। এরআগে জেলা পরিষদ রেষ্ট হাউজ ভাংচুর মামলায় বিএনপির ৪০ নেতাকর্মীকে জামিন দিয়েছেন আদালত। গত রবিবার (১৩ ফেব্রæয়ারী) হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে আলহাজ্ব জি কে গউছসহ ৪০ নেতাকর্মীর জামিন আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
উভয় মামলায় জামিন পাওয়ায় বুধবার বিকাল সাড়ে ৫টায় হবিগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে তারা কারামুক্ত হন আলহাজ্ব জি কে গউছ সহ বিএনপির ৪০ নেতাকর্মী। কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীসহ হবিগঞ্জের হাজার হাজার নারী পুরুষ আলহাজ্ব জি কে গউছকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করেন। পরে বিশাল শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে দলের নেতাকর্মীরা জি কে গউছকে তার বাসভবনে নিয়ে যান। ধুলিয়াখাল কারাগার থেকে তার বাসায় আসতে সময় লাগে সোয়া ২ ঘন্টা। পথে পথে নেতাকর্মীরা দাড়িয়ে জি কে গউছকে স্বাগত জানান। মানুষের ফুলের মালা ও ভালবাসায় তিনি সিক্ত হন।
এ সময় উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে জি কে গউছ বলেন, আমার বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা দেয়া হচ্ছে। বিনা অপরাধে কারাগারে যেতে হচ্ছে। একাধিকার আমাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। আমার উপর এই জুলুম নির্যাতনে মানুষের হৃদয়ে রক্তকরণ হচ্ছে। মানুষ সময় সুযোগ পেলেই ষড়যন্ত্রকারীদের এই অপকর্মের জবাব দিবে।
তিনি বলেন- মামলা হামলার ভয়কে উপেক্ষা করেই আমরা বিএনপি করি। বিএনপির নেতাকর্মীরা রাজপথ থেকে পালিয়ে যায় না। রাজপথে বিএনপির আন্দোলনের ফলেই এ দেশের মানুষ বাকশাল থেকে মুক্তি পেয়েছিল। বিএনপি আন্দোলন করেই স্বৈরাচার এরশাদের পতন নিশ্চিত করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছিল। ইনশাআল্লাহ, বিএনপি আন্দোলন করেই আওয়ামীলীগের একদলীয় শাসনের কবল থেকেও দেশের মানুষকে মুক্ত করবে, মানুষের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবে। সেই দিন আর বেশি দুরে নয়, আওয়ামীলীগের পতন অতি সন্নিকটে। তিনি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সু-স্বাস্থ্য ও দীর্ঘ হায়াত কামনা করে হবিগঞ্জবাসীর দোয়া কামনা করেন।
জানা যায়, গত ২২ ডিসেম্বর বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবীতে সমাবেশের আয়োজন করে হবিগঞ্জ জেলা বিএনপি। কিন্তু পুলিশ ওই সমাবেশে বাধাঁ সৃষ্টি করলে বিএনপি নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এতে পুলিশ ১২শ রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করলে সমাবেশটি পন্ড হয়ে যায় এবং বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের ৩ শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়।
এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ও টানা ৩ বারের নির্বাচিত হবিগঞ্জ পৌরসভার পদত্যাগকারী মেয়র আলহাজ্ব জি কে গউছকে প্রধান আসামী করে বিএনপির ২ হাজার নেতাকর্মীকে আসামী করে একটি পুলিশ এসল্ট মামলা দায়ের করে। এই মামলায় গত ৫ জানুয়ারী হাইকোর্ট থেকে ৪ সপ্তাহের আগাম জামিন লাভ করেন আলহাজ্ব জি কে গউছ সহ ৪০ নেতাকর্মী। এই জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর গত ১ ফেব্রæয়ারী হবিগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ এমএলবি মেজবাহ উদ্দিনের আদালতে হাজির হন আলহাজ্ব জি কে গউছ সহ বিএনপির এই ৪০ নেতাকর্মী। কিন্তু আদালত তাদের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন।
এদিকে একই ঘটনায় গত ৪ জানুয়ারী জেলা পরিষদ রেষ্ট হাউজ ভাংচুরের অভিযোগ এনে ওই রেষ্ট হাউজের কেয়ারটেকার আব্দুর রউফ বাদি হয়ে বিএনপির অজ্ঞাত ৩/৪ শতাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে হবিগঞ্জ সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
ওই মামলায় সদর থানা পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত শ্যোন এরেষ্ট দেখায় আলহাজ্ব জি কে গউছ সহ ৪০ নেতাকর্মীকে। গত রবিবার (১৩ ফেব্রæয়ারী) আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।

এই নিউজটি আপনার ফেসবুকে শেয়ার করুন

© shaistaganjerbani.com | All rights reserved.