সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:২৪ অপরাহ্ন

খবরের শিরোনাম:
১২ কোটি টাকা ব্যয়ে রাজনগরে সড়ক সংস্কারের ভিত্তিপ্রস্তর করলেন এমপি জিল্লুর রহমান আওয়ামী লীগ মানুষের শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করেছে -এমপি আবু জাহির ভারতের বিপক্ষে হার দিয়ে সিরিজ শুরু বাংলাদেশের সিলেটে সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু কালবৈশাখী ঝড়ে লন্ডভন্ড শ্রীমঙ্গল রাজনগরে চোলাই মদসহ আটক -১ দেড়শ রানেই ভারতকে আটকাল বাংলাদেশ হবিগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলেয়া আক্তারকে শায়েস্তাগঞ্জের বাণীর সম্মাননা প্রদান শায়েস্তাগঞ্জ নদীতে গোসল করতে নেমে ২ ভাই নিখোঁজের পর একজনের লাশ উদ্ধার আজমিরীগঞ্জে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রশিক্ষন না করানো ও সম্মানহানিকর বক্তব্যের অভিযোগ

নীড়ের স্বপ্ন পূরণ হবে কি লাইলীর?

আজমিরীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি,হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জের সদর ইউনিয়নের শুক্রীবাড়ির বাসিন্দা শাজমান মিয়ার কন্যা লাইলী আক্তার (৩৬)। পাঁচ বোন আর এক ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় বাকপ্রতিবন্ধী লাইলী আক্তারকে প্রায় ১৫ বছর আগে একই ইউনিয়নের বিরাট গ্রামের নাভলু মিয়ার কাছে বিয়ে দেন। বিয়ের পর বছর সাত ভালোই চলছিল লাইলীর সংসার। এরই মধ্যে একে একে তিন কন্যাসন্তানের মা হন তিনি।

লাইলীর বড় মেয়ের বয়স প্রায় ১৪ বছরের কাছাকাছি। কিন্তু বছর আটেক আগে হঠাৎ করে আবারও বিয়ে করেন নাভলু মিয়া। এতেই মাথা গোঁজার ঠাঁই হারানোর দিন শুরু হয় লাইলীর। রাগ করে কয়েক দিন ভাইয়ের কাছে সন্তানদের নিয়ে বসবাস করেন। কিছুদিন পর লাইলী আর নাভলুর সংসারের ঝামেলা মিটাতে একাধিকবার স্থানীয় মুরব্বিরা সালিশ করেও ব্যর্থ হন। তারপর আর নাভলুর সংসারে ঠাঁই হয়নি লাইলীর। সেই থেকে বিরাট গ্রামে একেক জনের বসতভিটায় একেক সময় তিন মেয়েকে নিয়ে বসবাস করছেন লাইলী।

অভাবের তাড়নায় মেয়েদের মুখে দু’বেলা খাবার তুলে দিতে কাজ করছেন দিনমজুর হিসেবে। বর্তমানে তিনি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)র আরইএআর এমপি প্রকল্পে কাজ করছেন। বড় মেয়ে ঢাকায় গৃহকর্মী আর সবার ছোট মেয়ে স্থানীয় একজনের বাসায় বাচ্চা দেখাশোনার কাজ করেন। তিনজনের সেই কাজে মাসে যা ইনকাম হয় তা দিয়ে কোনরকমে চলে সংসার। অভাবের তাড়নায় তিন মেয়ের কাউকেই ভর্তি করতে পারেননি স্কুলে।

লাইলীর এখন একটাই চাওয়া নিজের তিন সন্তানকে নিয়ে নিজের একটি মাথা গোঁজার ঠাঁই খোঁজা। সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর দেওয়ার বিষয়টি জানার পর তিনবার আবেদন করেছিলেন তিনি। আবেদনের পর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সরজমিনে যাচাই-বাছাই করা হলেও অদৃশ্য কোনো কারণে তালিকা থেকে বাদ পড়ে যায় লাইলীর নাম।

সদর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে কথা হয় লাইলীর সঙ্গে। কথা বলতে পারলেও অনেকটাই অস্পষ্ট তার ভাষা। সেই অস্পষ্ট ভাষায় জানালেন নিজের নীড়ের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় দৌড়ঝাঁপের কথা।

লাইলী জানান, সরকার আশ্রয়ণ প্রকল্পে গৃহ ও ভূমিহীনদের ঘর দিচ্ছে বিষয়টি জানার পর তিনবার আবেদন করেছেন তিনি। সর্বশেষ চতুর্থ পর্যায়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর পেতে আবেদন করার পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যাচাই-বাছাইয়ের জন্য লাইলীর অস্থায়ী ঠিকানায় গিয়ে যাচাই বাছাই করেন। কিন্তু তালিকা প্রকাশের পর জানতে পারেন আশ্রয়ণের সেই তালিকায় নেই লাইলীর নাম।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. সুফল মিয়া জানান, লাইলী আক্তার তিনটি মেয়ে নিয়ে আসলেই অসহায়। একেক মানুষের বাড়িতে একেক সময় বাস করেন। শুনেছি তালিকা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য লাইলীর অস্থায়ী বসবাসের জায়গায় অফিস থেকে সরেজমিন তদন্তও করা হয়েছে। কিন্তু কী কারণে তালিকা থেকে বাদ পড়ল তা জানি না।

সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আশরাফুল ইসলাম মোবারুল কালবেলাকে বলেন, কী কারণে তালিকা থেকে লাইলী আক্তারের নাম বাদ পড়েছে সেটা জানি না। তবে অসহায় লাইলী আক্তারের ঘর পাওয়ার বিষয়ে যতটুকু সহযোগিতা প্রয়োজন তা আমরা করবো।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জুয়েল ভৌমিক কালবেলাকে বলেন, চতুর্থ ধাপে আশ্রয়ণ প্রকল্পের যাচাই বাচাইয়ের তালিকা আমি যোগদানের পূর্বেই সমাপ্ত করা হয়েছে। লাইলী আক্তারসহ এমন অনেকেই এখনও বাকি রয়েছেন। পরে আবারও ঘরের বরাদ্দ আসলে আমরা তাদের নাম তালিকাভুক্ত করে তাদের আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘরের ব্যবস্থা করে দেব।

এই নিউজটি আপনার ফেসবুকে শেয়ার করুন

© shaistaganjerbani.com | All rights reserved.