শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১০:১২ পূর্বাহ্ন

বানিয়াচংয়ে স্বপ্নের ঘরে চাপা পড়ে বৃদ্ধার মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ প্রকল্পের নাম গৃহহীনের জন্য ‘দুর্যোগ সহনীয় ঘর’। অথচ কোনো দুর্যোগ ছাড়াই নির্মাণের মাত্র তিন বছরের মাথায় ভেঙে পড়ল বৃদ্ধার মাথায়। ‘স্বপ্নের ঘরে’ চাপা পড়ে প্রাণ হারালেন বৃদ্ধা।
ঘটনাটি বানিয়াচং উপজেলার মাদারীটুলা মহল্লার। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় ‘দুর্যোগ সহনীয় ঘরের’ পিলার ভেঙে পড়ে ৮৯ বছরের বৃদ্ধা
শিরাপজান বিবির মাথায়। তিনি মাদারীটুলা মহল্লার মৃত নেয়ামত উল্লাহর স্ত্রী।
স্থানীয়রা জানান, নেয়ামত উল্লাহর ছেলে শরিফ উল্লাহর সামান্য জায়গা থাকলেও ঘর ছিল না। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ২০১৯-২০ অর্থবছরে টিআর/কাবিখা কর্মসূচির আওতায় ‘দুর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় বানিয়াচং উপজেলায় বেশকিছু ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। একেকটি ঘরের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল ২ লাখ ৯৯ হাজার ৮৬০ টাকা। এ প্রকল্পের আওতায় ১ লাখ ২৫ হাজার ঘর নির্মাণ করা হয়।
ভাঙার পর সরেজমিনে দেখা যায়, ওই ঘরের পিলারে কোন রড ব্যবহার করা হয়নি।
এ রকমই একটি ঘর দেওয়া হয়েছিল মাদারীটুলা গ্রামের নেয়ামত উল্লাহর ছেলে মো. শরীফ উল্লাহকে। শরীফ উল্লাহ স্ত্রী-সন্তান ও মা শিরাপজান বিবিকে নিয়ে বসবাস করতেন। শেষ বয়সে একটি পাকা ঘর পেয়ে অনেক খুশি হয়েছিলেন শিরাপজান বিবি। কিন্তু কে জানত স্বপ্নের সেই ঘরে চাপা পড়ে প্রাণ যাবে তাঁর!
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. জাহাঙ্গীর মিয়া জানান, সন্ধ্যায় শিরাপজান বিবি ঘরের বারান্দার একটি পিলারে হেলান দিয়ে চেয়ারে বসা ছিলেন। এ সময় হঠাৎ পিলারটি ভেঙে তাঁর ওপর পড়ে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। পরিবারের লোকজন উদ্ধার করে বানিয়াচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের পরিবার তড়িঘড়ি মরদেহ দাফনের প্রক্রিয়া শুরু করলে এলাকাবাসী বানিয়াচং থানাকে বিষয়টি জানায়।
খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বানিয়াচং সার্কেল) পলাশ রঞ্জন দে ও বানিয়াচং থানার ওসি মো. এমরান হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
বানিয়াচং থানার ওসি মো. এমরান হোসেন বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বিনা ময়নাতদন্তে মরদেহ দাফনের জন্য নিহতের ছেলে জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে একটি আবেদন করেছেন।
এভাবে মাত্র তিন বছরের মাথায় ঘর ভেঙে পড়ে বৃদ্ধার বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পদ্মাসন সিংহ বলেন, ‘তিন বছর আগে নির্মাণ করা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দের একটি ঘরে বাস করত বৃদ্ধার পরিবার। তবে তাঁর মৃত্যুর ঘটনাটি আমরা নেহাতই একটি দুর্ঘটনা হিসেবে দেখছি। আপাতত উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতের দাফনের টাকা দেওয়া হবে। পরে ওই পরিবারকে আর্থিক সহায়তা করা হবে।’

এই নিউজটি আপনার ফেসবুকে শেয়ার করুন

© shaistaganjerbani.com | All rights reserved.