মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৫৯ পূর্বাহ্ন

” “ভূতের ধন” “

মোঃ ইয়াসিন আহমেদ রাফি
**********************
এক ফাঁকা গ্রামের অনেক বড় এক জমিদার বাড়ি। বাড়িটা দেখলেই গায়ে কাটা দেয়।কেমন যেন ভয় হয়। দেখলেই বুঝা যায় যে বাড়িতে কেউ থাকে না। কিন্তু তা বললে ভুল হবে।
একজন ঠিকই থাকে এই ভুতের বাড়িতে। সে আর কেউ নয়। আমাদের সাহসী ছেলে ভূতনাথ।
নামটা খুবই আজব।শুধু নাম ই নয় আমাদের ভূতনাথ ও আজব।আমাদের ভূতনাথকে রাতের
বেলায় যে-কেউ দেখলেই ভয় পাবে।যে-কেউ  মনে করবে সে এক আস্ত ভূত।গ্রামের কোনো ছেলে ই ভূতনাথের কাছে ও যেতে চায় না।সবাই ভূতনাথ থেকে দূরে দূরে থাকে।আমাদের ভূতনাথ এর একটা বিশেষ গুণের কথা তো বলা ই হয় নি।আমাদের ভূতনাথ খুব ভালো গোয়েন্দা। গ্রামে কোথাও চুরি হলে কিছু হারিয়ে গেলে ডাক পড়ে ভূতনাথের।
ভূতনাথ আবার বেশ মিষ্টি ছেলে।সবাইকে সে ভালোবাসে, গ্রামের বড় মানুষজন সবাই ও ভূতনাথ কে খুবই ভালোবাসে এবং স্নেহ করে।তবে এই ভালোবাসাটা লোকদেখানো। নিজের কাজ করিয়ে নিবার জন্য এই মিথ্যা।
ভূতনাথ তো খুবই চালাক তাই সে সব কিছুই খুব ভালো করেই বুঝতে পারে।ভূতনাথ দিনের বেলায় সারা গ্রামে ঘুরে বেড়ায় আর গোয়েন্দা হয়ে মানুষের উপকার করে।যে যা দেয় সে তাই খায়।তবে মজার বিষয় হলো ভূতনাথ কখনো না খেয়ে থাকে না। কখনো যদি কেউ খাবার না দেয় তখন সেই জমিদার বাড়িতে কে যেন ভূতনাথের জন্য নানা রকম খাবার রেখে যায়।ভাবতেও অবাক লাগে। যেই ভূতের ভয়ের কারণে জমিদার বাড়ির আশেপাশে ও কেউ আসে না সেই জমিদার বাড়িতে ভূতনাথের জন্য কে আবার খাবার রেখে যায়!
 ভূতনাথ এখন খুবই অবাক। খাবার রাখা পায় ঠিক সেদিন ই, যেদিন ভূতনাথ না খেয়ে থাকে। ভূতনাথ এই প্রশ্নের কোনো উওর ই খুঁজে পায়না। অনেক চেষ্টা করেছে সে।অনেক গোয়েন্দা বুদ্ধি প্রয়োগ করেও এই সমস্যার কোনো সমাধান ই সে পায় না। কে রেখে যায় খাবার? কখন রেখে যায়? কী ভাবে জানতে পারে ভূতনাথ না খেয়ে থাকলে?
তার এই অংক কিছুতেই মিলে না।
কে?  কে আছে যে ভূতনাথের এতো খেয়াল রাখে। হঠাৎ একদিন এক সুন্দরী আপু আসল সেই জমিদার বাড়িতে। ভূতনাথ তো ভেবে পাচ্ছে না এই মেয়ে এখানে কি করতে আসল। কেউ তো এই বাড়িতে আসতেই চায় না।
কে এই মেয়েটি? কেন আসল সে এই জমিদার বাড়িতে?
কেন সে ভয় পাচ্ছে না?
ভূতনাথ প্রথমে ভেবেছিল এই মেয়েটি হয়তো ভূতনাথ এর জন্য খাবার রেখে যায়। তাই ভূতনাথ ভূতের মতো করে এক লাফে ছাদের উপর থেকে নেমে পড়ল মেয়েটার সামনে।
মেয়েটা তখন ই অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে গেল।
এবার তো ভূতনাথ পড়ে গেল মহা বিপদে এবার সে কী করবে? ভূতনাথ দ্রুত গেল পুকুরের কাছে তার গায়ের জামাটা খুলে পানিতে ভেজাল। তারপর সে দ্রুত মেয়েটির কাছে গেল।তারপরে মেয়েটির মুখে জামা চেপে পানি বেড় করে দিল।
মেয়েটা আস্তে আস্তে চোখ খুলে দেখল ভূতনাথের চেহারা । সে আবারও জ্ঞান হারিয়ে ফেলল।এবার ভূতনাথ আবারও চোখে মুখে পানি দিল। তবে এবার সে মেয়েটির সামন থেকে সরে গিয়ে লোকিয়ে গেল।
লুকিয়ে বলতে লাগল কে তুমি?
কী চাও?
এখানে কেন আসলে?
চলে যও এখান থেকে।
মেয়েটি বলল আমি প্রিয়া।কে আপনি কোথায় আপনি সামনে আসেন।
তখন ভূতনাথ হাসতে হাসতে বলে উঠল,
যে ভেলকি  জানো তুমি! অজ্ঞান হয়েছ দুইবার। আবার বলছ সামনে আসতে।আমি সামনে আসলে তুমি ভয় পাবে।চলে যাও এখান থেকে চলে যাও।
মেয়েটি স্থির দাঁড়িয়ে রইল।
ভূতনাথের খুবই সন্দেহ হলো।
সে পরিষ্কার বুঝতে পারছে প্রিয়া নামের মেয়েটি বিশেষ কোনো কারণে এসেছে।
কিন্তু কী সেটা?
মেয়েটির উদ্দেশ্য কী?

এই নিউজটি আপনার ফেসবুকে শেয়ার করুন

© shaistaganjerbani.com | All rights reserved.