সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৫৫ পূর্বাহ্ন
ধর্ম ও জীবন ডেস্ক ,নশ্বর পৃথিবীর প্রতি মোহ ও আকর্ষণ কমাতে এবং চিরস্থায়ী নিবাস আখেরাতের প্রতি নিবিষ্টতা বাড়াতে অত্যন্ত কার্যকর ইসলামের অন্যতম বুনিয়াদি ইবাদত সিয়াম সাধনার মাস রমজানুল মুবারকের অষ্টাদশ দিবস আজ। আর মাত্র দু’দিন পর শুরু হবে নাজাতের দশক।
মুমিন মুসলমানগণ আধ্যাত্মিক সাধনার চরম উৎকর্ষতা লাভে মগ্ন। বিগত জীবনের ভুলভ্রান্তি সংশোধন করে যাতে বাকি জীবন ধর্মের পথে পরিচালনা করতে পারে এজন্য কায়মনে গাফুরুর রাহিমের অনুগ্রহ কামনা করছেন। হারাম-হালালের পার্থক্য এবং কোনো ধরনের কর্মকাণ্ডের কারণে আমল কবুল হবে না তা জানতেও উন্মুখ সবাই। কেননা অনেকেই না জেনে, না বুঝেই নানা ধরনের পাপাচারে লিপ্ত হয়ে থাকেন। কেউ কেউ রোজা রেখে পাপকর্ম থেকে দূরে থাকলেও রমজান মাস শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নতুন করে আগের পথে ফিরে যান। বিশেষ করে মাদকাসক্ত ব্যক্তিরা এ পাল্লায় এগিয়ে থাকেন। যদিও তাদের অনেকেই নিয়মিত ইবাদতও করেন।
অথচ এ বিষয়ে ইসলামে সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে, যে ব্যক্তি হালাল মনে করে মদ্যপান করে বা ব্যভিচার কিংবা যে কোনো পাপ সম্পাদন করে তবে সে কাফির বলে গণ্য। আর কুফরির সঙ্গে কোনো আমলই বিশুদ্ধ হবে না। আর কেউ যদি হারাম যেনেও প্রবৃত্তির তাড়নায় পাপ কাজ সম্পাদন করেন এবং এ আশা করেন যে আল্লাহ তাকে তা থেকে রক্ষা করবেন। তবে এই ব্যক্তিটি তার ইমানের কারণে মুমিন এবং পাপের কারণে ফাসেক হিসেবে চিহ্নিত হবেন।
মহানবী (সা.)-এর হিজরতের পরও জন্মভূমি মক্কার কথা একটিবারের জন্যও ভোলেননি; বরং হিজরতের পর মক্কার প্রতি ভালোবাসা তাঁর মধ্যে আরও তীব্র হয়ে ওঠে। মক্কায় ফিরে যাওয়ার জন্য তাঁর হৃদয় সব সময় ব্যাকুল হয়ে থাকত। এ কারণে আল্লাহ তাআলা তাঁকে সান্ত্বনা দিয়ে পবিত্র কোরআনে বলেছেন, ‘যিনি আপনার জন্য কোরআনকে জীবনবিধান বানিয়েছেন, তিনি আপনাকে অবশ্যই আপনার জন্মভূমিতে ফিরিয়ে আনবেন।’ (সুরা কাসাস: ৮৫)
শুধু কি তা-ই, জন্মভূমি মক্কায় অবস্থিত পবিত্র কাবাঘরের দিকে ফিরে নামাজ আদায় করতে না পেরে তাঁর মন অস্থির হয়ে উঠেছিল। মদিনায় আসার পর আল্লাহর নির্দেশে ষোলো বা সতেরো মাস ফিলিস্তিনের মসজিদুল আকসার দিকে ফিরে নামাজ আদায়ের আদেশ এসেছিল। সেই দিনগুলোতে তিনি বড় অস্থির ছিলেন। বারবার আকাশের দিকে তাকাতেন। কখন নির্দেশ আসবে কাবার দিকে ফিরে নামাজ আদায় করার! অবশেষে সেই নির্দেশও এল এবং তিনি পবিত্র কাবাঘরের দিকে ফিরে নামাজ আদায় করতে শুরু করলেন।
লেখক: ড. মো. আবদুল কাদির অধ্যাপক, আরবি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়